ফের বাংলার নক্ষত্রপতন, প্রয়াত ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্ত, শোকাহত মুখ্যমন্ত্রী

বাংলার ফুটবলে আরও এক নক্ষত্রপতন। সুভাষ ভৌমিকের মৃত্যুর কিছুদিনের মধ্যে প্রয়াত হলেন একই প্রজন্মের তারকা ফুটবলার ( Surajit Sengupta ) সুরজিৎ সেনগুপ্ত। বয়স হয়েছিল ৭১ বছর, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর।

জানুয়ারি মাসের শেষে কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই ভর্তি ছিলেন ইএম বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বেশ কম ছিল। শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল, সাথে প্রচন্ড কাশি। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁর অবস্থা সঙ্কটজনক ( Surajit Sengupta ) হলেও, মোটামুটি স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু রাতে আচমকা অবনতি শুরু হয় তাঁর। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছিল কৃত্রিম পদ্ধতিতে। এ অবস্থায় হাসপাতাল তরফে তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখার সিধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে সোমবার রাত থেকে বাইপ্যাপ সাপোর্টে আইসিইউ-তে ছিলেন তিনি।

তাঁর মৃত্যুতে বাংলার ফুটবল জগতে আজ বিষণ্ণতার ছায়া। এই কদিনে বাংলা তথা গোটা দেশ জুড়েই যেন নক্ষত্রপতনের পালা লেগেছে। একের পর এক রত্ন হারাচ্ছে ভারত। এদিন ( Surajit Sengupta ) তাঁর মৃত্যুতে বেশ শোকাহত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের টুইটার মাধ্যমে টুইট করে তাঁর স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি।

এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ সরকার তরফে মুখ্যমন্ত্রী শোকবার্তার একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে, “নক্ষত্র  ফুটবলার সুরজিৎ  সেনগুপ্তের ( Surajit Sengupta ) প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। দেশের অন্যতম সেরা উইঙ্গার সুরজিৎ সেনগুপ্ত ( Surajit Sengupta ) দুই প্রধান ক্লাব ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানে খেলেছেন।  ১৯৭৮-৭৯ সালে তিনি ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৪ ও ১৯৭৮ সালে এশিয়ান গেমসে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল অতুলনীয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১৩ সালে তাঁকে ‘বাংলার গৌরব’  সম্মানে ভূষিত করে। তাঁর প্রয়াণে ক্রীড়া জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। ব্যক্তিগত ভাবে আমি তাঁকে সুভদ্র মানুষ হিসেবে জানতাম। আমি সুরজিৎ সেনগুপ্তের পরিবার-পরিজন ও  অনুরাগীদের  আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।”

আরও পড়ুন….Bappi Lahiri Death : না ফেরার দেশে পাড়ি ডিস্কো কিং-এর, রাজকীয় এই শেষ যাত্রা

উল্লেখ্য, সাল ১৯৫১-এর ৩০ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন সুরজিৎ। খিদিরপুর ক্লাব থেকে শুরু তাঁর ফুটবল জীবন। পরে কলকাতার তিনটি বড় ক্লাবেই খেলেছেন তিনি। হুগলির মানুষ সুরজিৎ-এর জীবনের প্রথম বড় ক্লাব বলতে মোহনবাগান। ১৯৭২ সাল থেকে টানা দু’বছর মোহনবাগানে ছিলেন তিনি। ১৯৭৪ সালে ইস্টবেঙ্গলে। সেই থেকে টানা ছ’বছর লাল-হলুদের রঙে নিজেকে রাঙিয়ে তুলেছিলেন। এরপর ১৯৮০ সালে সই করেন মহমেডানে। পরের বছর ফের মোহনবাগানে। খেলেন তিন বছর।

সাল ১৯৭৮ নাগাদ ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়কত্ব পদ গ্রহণ করেন তিনি। দেশের হয়ে খেলেছেন ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত। ১৯৭৬ সালে সন্তোষ ট্রফিতে বাংলার ( Surajit Sengupta ) অধিনায়ক হন। জীবনে থামতে চাননি কোনও দিনও। খিদিরপুরের সেই ক্লাব থেকে জীবন শুরু করে বাংলার ফুটবল জগতের নক্ষত্র হয়ে ওঠেন। আজ সেই নক্ষত্র সত্যিই পাড়ি দিল আকাশে। ফিরবে না কোনও দিনই।




Leave a Reply

Back to top button