“কফি হাউস কলকাতার সিগনেচার” ঐতিহ্য রক্ষার্থে আর্থিক সাহায্য রাজ্য সরকারের

বাঙালির নানা ঐতিহ্যের মধ্যে যদি সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য কলকাতা কফি হাউস ( Indian Coffee House ) । সাল ১৯৪২ থেকে মানুষের হাতের প্লেটে কফি ও নানান খাদ্য দ্রব্য পরিবেশন করে যাচ্ছে কফি হাউস। তবে সময়ের সাথে সাথে যেন মরচে ধরেছে বাঙালির এই ভাব আদানপ্রদানের পীঠস্থানে। সেকালের আড্ডা থেকে গেলেও হারিয়ে গেছে শুধুই সেকালের জৌলস ও চাকচিক্য। যেন টান পড়েছে সেই পুরানো আভিজাত্যে। হাজার ঝাঁ চকচকে রেস্তোরাঁ, নতুন ধরনের কফি হাউস, হোম ডেলিভারির নব্য ধারার মাঝে হারিয়ে গিয়েছে বাঙালির কফি হাউস।
একেই প্রজন্মের ভেদাভেদ, তার মধ্যেই আবার রাজ্য তথা দেশ জুড়ে পড়েছিল লকডাউন। যার জেরে বেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয় তিলোত্তমার এই হেরিটেজ। অধিকাংশ দিন ঝাঁপ বন্ধ অবস্থায় পড়ে থাকে সেই সেকালের কফি হাউস ( Indian Coffee House ) । বর্তমানের দ্রুত দৈনন্দিন প্রবাহের মাঝে কোথাও যেন হারিয়ে গেছে কফি হাউস। আড্ডাটা থাকলেও তাও গুটি কয়েক। সেকালের পরিবেশ আজ আর নেই। নতুন রেস্তোরাঁ, শপিং মল, বৈদেশিক পণ্যের মাঝে হারিয়ে গেছে কফি হাউস।
দশকের পর দশক ধরে বৌদ্ধিক বাঙালির ভাবনা আদানপ্রদানের পীঠস্থান এই ( Indian Coffee House ) কফি হাউস। কিন্তু আজ তাঁর গায়ে পড়ে গেছে বয়সের ছাপ। সময়ের সাথে সাথে যেমন মানুষ নিজের শরীরের জৌলস হারিয়ে ফেলে, ঠিক তেমনই আজ সেকালের কফি হাউস এই নব্য প্রজন্মের কাছে পরিণত হয়েছে এক বৃদ্ধ হিসাবে। যার নেই কোনও জৌলস, নেই কোনও চাকচিক্য। নড়বড়ে চেয়ার-টেবিলের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে দিনের পর দিন। পুরো বেতনের ভাগ্য খুইয়েছে কর্মীরাও। শত মানুষের গুঞ্জনে কলতানমুখর কফি হাউস, কফির কড়া গন্ধে এমন মায়াবী আবেদন নাগরিক জীবন থেকে হারিয়ে যাক— চান না কর্মীরা। তাই কর্তৃপক্ষ দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকারের কাছে।
কর্তৃপক্ষের ডাকা সাড়াও দেয় রাজ্য সরকার। সমবায় মন্ত্রী অরুপ রায়ের সঙ্গে দেখা করেন ( Indian Coffee House ) কফি হাউস কর্তৃপক্ষ। নবান্ন সূত্রেও জানা গিয়েছিল, শীঘ্রই তাঁদের হাতে অর্থ সাহায্য তুলে দেবে রাজ্য সরকার। এই পরিপ্রেক্ষিতে সমবায় দফতরের এক কর্তার বক্তব্য, কফি হাউস কলকাতার ‘সিগনেচার’। তাই সরকার তাঁদের পাশে থাকার সিধান্ত নিয়েছে। আর যেমন কথা তেমন কাজ! কর্তৃপক্ষের আবেদন নাকচ করেনি রাজ্য সরকার। আর সেই আনন্দেই শুক্রবার সংবর্ধনা জ্ঞাপন অনুষ্ঠান আয়োজন করে ‘ইন্ডিয়ান কফি হাউস’ কর্তৃপক্ষ। এই সংবর্ধনা জ্ঞাপন উৎসবে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয় রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরুপ রায়কে।