জামাই আদরের শেষ পাতে কি মিলেছিল মদ? ‘রেকর্ড বিক্রি’ করে জামাইষষ্ঠীতে বাংলা ভাসল মদের জোয়ারে

বাঙালি বারো মাসে তেরো পার্বণ। আর তার মধ্যেই একটি বিশেষ উৎসব হল জামাইষষ্ঠী। বছরের এই দিনটি যেন উৎসবের মতো সেজে ওঠে অধিকাংশ বাঙালি বাড়ি। সকাল সকাল সেজেগুজে শ্বশুড়বাড়ি হাজির হন জামাই-মেয়ে। খাওয়া-দাওয়া, হইচইয়ের মধ্যে দিয়ে কাটে গোটা একটা দিন। শ্বশুড়বাড়ির নতুন নতুন পদ এবং জামাইয়ের কব্জি ডুবিয়ে খাওয়া। প্রতিবছরের মতো এই বছর একই ছবি পরিলক্ষিত হয়েছে। তার মধ্যেই এই বছর জামাইষষ্ঠী রবিবার হওয়ায় বাঙালি বাড়িগুলিতে উৎসাহ ছিল অন্য উচ্চতায়। তবে এই সব কিছুর মধ্যেই এ বছর জামাইষষ্ঠীর দিন এক অভিনব রেকর্ড তৈরি করেছে রাজ্য।
এই বিশেষ দিনে বিপুল হারে মদ বিক্রি হয়েছে রাজ্য জুড়ে। শুধুই কব্জি ডুবিয়ে খাওয়া-দাওয়া নয়, বিপুল হারে মদ্য পানও চলেছে এই বারের জামাইষষ্ঠীতে, রাজ্যের আবগারি দফতরের পরিসংখ্যান বলছে এমনটাই। এদিন মদ বিক্রির নিরিখে রাজ্যে প্রথম স্থান দখল করেছে পশ্চিম মেদিনীপুর। কলকাতা শহরকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে এই জেলা। পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ উপার্জন এই মদ বিক্রি করে। রাজ্যের মদের বিক্রির পরিমাণ বাড়াতে সরকারও কমিয়েছে আবগারি শুল্কের পরিমাণ। দূর্গাপুজো হোক কিংবা বড়দিন, এমনকি বর্ষবরণেও রেকর্ড হারে মদ বিক্রির নজির রাজ্য আগেও দেখা গিয়েছে। কিন্তু এবার সেই তালিকায় জুড়ে গেল জামাাইষষ্ঠীও। প্রসঙ্গত, রাজ্যের বহু এলাকায় বিষমদ খেয়ে প্রাণ গিয়েছে এমন ঘটনার নজির অনেক। সেই কারণে ইতিমধ্যে রাজ্যের সেই সকল এলাকা থেকে নজরদারি ও অভিযান মাধ্যমে সেই সকল বিষমদ বাজেয়াপ্ত করার কাজ শুরু করেছে রাজ্য সরকার।
এই বিষমদ পান রুখতে রাজ্য জুড়ে বিদেশি মদের উপর আবগারি শুল্কের হারও কমিয়েছে রাজ্য সরকার। যার ফলে বিদেশি মদের দাম নাগালের মধ্যে এসেছে। বেড়েছে মদ বিক্রির পরিমাণ। যদিও এখনও সাধারণ মানুষের মধ্যে দেশি মদের চাহিদা বিপুল লক্ষ্য করা গিয়েছে। এদিকে, আবগারি দফতরের সাম্প্রতিকতম পরিসংখ্যান অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, রাজ্যে শুধুমাত্র জামাইষষ্ঠীর দিনেই পূর্ব মেদিনীপুরে মোট ৪ কোটি ৮০ লক্ষ ৭৫ হাজার ৮০৫ টাকার মদ বিক্রি হয়েছে। যার মধ্যে দেশি মদ রয়েছে ৮৪ হাজার ২২৩ লিটার এবং বিদেশি মদ রয়েছে ২৭ হাজার ৭৬৬ লিটার। পাল্লা দিয়ে বিক্রি হয়েছে বিয়ারও। মোট ৪৫ হাজার ৯৬৬ লিটার বিয়ার বিক্রি হয়েছে সেদিন।