Mahesh Rath Yatra: দৃষ্টি নেই তাতে কি! অনুভূতিকে আঁধার করেই মাহেশের রথযাত্রার সঙ্গী দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারা

গোটা দেশ জুড়ে মানুষ মেতে উঠেছে রথের ( Rath ) আনন্দে। চারিদিকে বসেছে রথের মেলা। জগন্নাথ দেবের আরাধনায় মজেছে ভক্তরা। জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার মাসির বাড়ি ভ্রমণকে কেন্দ্র করে গোটা দেশে ‘জয় জগন্নাথ’ রব। ভক্তদের উন্মাদনায় যেন ক’দিনের জন্য বদলেছে ভারতবর্ষের চিত্র। স্বাভাবিক ভাবেই গোটা দেশেই নানা জায়গায় জগন্নাথ দেবের আরাধনায় আয়োজিত হয় রথযাত্রা। আর এই রথযাত্রাকে কেন্দ্র করেই জুড়ে থাকে বহু মানুষের রোজগার। সেই কারণে অনেকেই নানা জায়গায় দেখা যায় রথের মেলা। 

আর এই মেলার তালিকা থেকে বাদ নেই হুগলিও। জগন্নাথ দেবের পুজো পুরীতে বিখ্যাত হলেও। এই পুজোর পুণ্য লাভ থেকে নিজেদের বাদ রাখেননি বঙ্গের বাসিন্দারা। হুগলির বুকেই জমজমাটি ভাবে বছর বছর ধরে আয়োজন করেছে রথযাত্রার। পুরীর রথযাত্রাকে টক্কর দিতে না পারলেও হুগলির এই মাহেশের রথযাত্রা কোনও দিক থেকেই কম নয়। 

মাহেশ

প্রতিবছরই ধুমধাম করে পালিত হয় মাহেশের রথযাত্রা। দূর দূর থেকে মানুষ আসেন, অংশগ্রহণ করেন এবং ভক্তি ভরে জগন্নাথ দেবের আরাধনা করেন। জানা যায়, প্রায় ৬০০ বছর ধরে এই মাহেশের রথযাত্রা পালিত হয়ে আসছে। যুগের উন্নতির সঙ্গেই মাহেশের এই রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে মাহেশের মেলা। প্রতিবছর সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো মানুষের ভিড় এসে আছড়ে পড়ে এই মেলায়। আনন্দ-হাসি-ভক্তিতে মেতে ওঠে মানুষজন। 

প্রদীপের তলার অন্ধকারটার মতোই একাংশের মানুষ এই মেলার মতো পৃথিবীর সৌন্দর্যের আনন্দ নিতে সক্ষম হলেও, আরেক দল যেন এই সব কিছু থেকেই বঞ্চিত। সব থেকেও যেন আজ সর্বহারা তারা। আসলে জীবনের সৌন্দর্যকে উপভোগ করার জন্য সাধারণের কাছে মন ও চোখ থাকলেও এদের কাছে সেই চোখেরই অভাব। না হয় তো ভুল বলা হল, চোখ থাকলেও দৃষ্টিশক্তিহীন তারা। এই পৃথিবীর সমস্ত সৌন্দর্যকে দেখা তাদের ক্ষেত্রে সম্ভব নয়। অনুভবই তাদের আপাতত একমেব শক্তি। আর এই শক্তিকে আরও দৃঢ় করেন সিধামরা। পেশায় তিনি আই ব্যাঙ্কের কর্মচারি। সেই সূত্রেই পরিচয় আছে অনেক দৃষ্টিহীন বিদ্যালয়ে। তাদের নিয়েই তাঁর জীবন। এদিকে যখন গোটা রাজ্য মেতে রয়েছে মাহেশের রথের আনন্দে। তখন অন্যদিকে সেই অন্ধকারাচ্ছন্ন জীবন কাটাচ্ছে দৃষ্টিহীনেরা। পৃথিবীর সমস্ত সুখ তাদের এক হাতের দূরে থেকেও আজ তারা সেগুলি ছুঁতে ব্যর্থ। এই রকম দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের ক্ষণিকের সুখ দিতেই এদিন শ্রীরামপুরের সিধাম সাহা আয়োজন করেন দৃষ্টিহীনদের মেলা ভ্রমণের। উত্তরপাড়া দৃষ্টিহীন বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের মাহেশের মেলা ভ্রমণের ব্যবস্থা করেন তিনি। দৃষ্টি না থাকলেও মনের সমস্ত অনুভূতি দিয়ে নিজেদের এক হাত দূরত্বে থাকা সুখকে  ছুঁয়ে ফেলে তারা। একটা গোটাদিন কাটে হাসি-মজা, খাওয়া–দাওয়ায়। যা দেখে মানসিক ভাবে শান্তি পান সিধামবাবুও।




Leave a Reply

Back to top button