Shaheed Diwas: “তৃণমূল মানে নিজের করে খাওয়ার জায়গা নয়!” দলের দুর্নীতির রুখতে ময়দানে তবে অভিষেক?

দু’বছর পর ফের বঙ্গের বুকে ‘ধর্মতলা চলো’ স্লোগান। করোনার ( Corona ) চোখ রাঙানির জেরে থমকে ছিল তৃণমূলের ( TMC ) ‘অফলাইন’ শহিদ স্মরণ। কিন্তু এই বছর পরিস্থিতিটা একেবারে অন্যরকম। বঙ্গে ঘাসফুল শিবিরে একেবারে খুশির আমেজ। তৃণমূলের জাঁদরেল নেতা-নেত্রীদের কেন্দ্র করেই শহরের বুকে গড়ে উঠেছে বিরাট সভা মঞ্চ। সেখানেই বৃষ্টিভেজা জনতার স্রোতে ফের একবার ভাসতে দেখা গেল মমতা-অভিষেকদের ( Mamata-Abhishek )।
এদিন শহিদ স্মরণের মঞ্চ থেকে রাজ্যের সকল স্তরের তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দেন দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। শহরের আকাশে আজ কালো মেঘের ঘনঘটা। বৃষ্টির যেন ধুয়ে দিয়েছে তিলোত্তমাকে। কিন্তু আকাশের মুখ ভারকে কোনও ভাবেই পাত্তা দিতে চায়নি তৃণমূল শিবির। টানা বৃষ্টির মাঝেও নিজের দলের কর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দেওয়া থেকে পিছপা হলেন না অভিষেক ( Abhishek Banerjee )। অভিষেকের কথায়, “তৃণমূল মানে নিজের করে খাওয়ার জায়গা নয়।” এই মন্তব্য কি ঠিকাদারদের উদ্দেশে নাকি তাঁর দলেরই কর্মীদের উদ্দেশে? প্রশ্ন অনেক।
কিছু মাস আগেই এক সভামঞ্চ থেকে ঠিকাদারদের উদ্দেশে বার্তা দেন তিনি। বলেন, “নয় ঠিকাদারি করুন, নয় তৃণমূল।” এদিন ফের ধর্মতলায় অভিষেকের মুখে শোনা গেল সেই কথা। এই মন্তব্যকে ঘিরে বেশ তরজা শুরু হয়েছিল রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে, শুধু তাই নয়! অভিষেকের এই বক্তব্যকে ঘিরে ঠিকাদারদের মধ্যেও ক্ষোভের সঞ্চার হয়। উল্লেখ্য, তৃতীয়বার শাসকের পদে তৃণমূলের আসীন হওয়ার পর থেকেই বেড়েছে রাজ্যজুড়ে দুর্নীতির অভিযোগ।
নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ: এসএসসি, টেট পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগে দুনীর্তির অভিযোগ মাথচাড়া দেয় তৃণমূলের তৃতীয়বার পদে আসীন হওয়ার পর থেকে। দলের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা দফতর এমনকী দলের জাঁদরেল নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে ওঠে নিয়োগ খাতে দুর্নীতির অভিযোগ। শুধু তাই নয়, ওঠে শিক্ষা ক্ষেত্রে স্বজনপোষণের অভিযোগ।
পঞ্চায়েত স্তরে দুর্নীতির অভিযোগ: কখনও লাভ হাউস, কখনও জাহাজ বাড়ি, কখনও গ্রামের মাঝে হোয়াইট হাউস। তৃণমূলের পঞ্চায়েত স্তরে মাথা চাড়া নেতা-কর্মীদের কোটি টাকার বাড়ি নিয়ে নানা দুর্নীতির অভিযোগ। কারও ইট ভাটা, কারও মুরগীর ফার্ম। তৃণমূলে প্রবেশের আগে আর্থিক দিক থেকে নিঃস্ব থাকা ব্যাক্তিরা দলে প্রবেশ করতেই যেন হয়ে ওঠে কোটি টাকার মালিক, এমনই কিছু অভিযোগ পাওয়া যায় রাজ্যের বিভিন্ন পঞ্চায়েত স্তর থেকে।
স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির অভিযোগ: পাভলভ, এনআরএস রাজ্যের স্বাস্থ্য খাতের একেবারে বেহাল দশা উঠে আসছে রাজ্য জুড়ে। কখনও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রেফার রোগের অভিযোগ। কখনও প্রতিবছর খাওয়া, পোশাকের জন্য হাসপাতালে সরকার তরফে কোটি টাকা বিনিয়োগ। কিন্তু তারপরও দিন শেষে সেই বেহাল পরিস্থিতি ও চিড়ে চ্যাপ্টা সাধারণ মানুষ। প্রসঙ্গত, “তৃণমূল মানে নিজের করে খাওয়ার জায়গা নয়।” আজকের সভা থেকে শহিদ স্মরণের দিনে অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য কি এই সকল দুর্নীতিকে বন্ধ করারই বার্তা দিচ্ছে? আর সেই উদ্দেশে এই বার্তা হয়ে থাকলেও কতটাই বা গুরুত্ব আরোপ করা হবে এটার উপর? উত্তর হয় তো আজও অজানা।