CM Mamata Banerjee: ‘বই লিখি, গানে সুর দিই, অনেক বই বেস্ট সেলার’, ২০ কোটির বিতর্কে আয়ের উৎস ‘ফাঁস’ মমতার

কলকাতা: পার্থ ছিল, অর্পিতাও ছিল। কিন্তু, আজ পার্থ নেই, অর্পিতাও নেই। ইডির নাগপাশে বন্দি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের (Trinamool Congress) মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। গ্রেফতারির পর শারীরিক ‘অসুস্থতা’ বাড়লেও ‘শখের’ এসএসকেএমে ( SSKM ) থাকার অনুমতি দেয়নি আদালত। পার্থকে নিয়েই বাংলা ছেড়ে বিশেষ বিমান। ঠাঁই হয়েছে পড়শি রাজ্য ওড়িশায়। সেখানে তার নিত্যদিনের সঙ্গী এখন খোদ ইডি কর্তারা। অন্যদিকে সিজিও-আদালত করেই দিন কাটছে ‘বান্ধবী’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের (Arpita Mukherjee)। চোখের জলে মোবাইল থেকে টিভির স্ক্রিন ভাসলেও, বিশ কোটির বিষেই ঢাকা পড়ছে আম-আদমির মায়া-মমতা। এদিকে গত দু’দিন ধরে কুণাল-ফিরহাদরা পার্থ ইস্যুতে মুখ খুললেও এই প্রথম এককালের ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে নিয়ে মুখ খুলতে দেখা দেখা গেল তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে( Trinamool Supremo Mamata Banerjee)।

তবে ইডি মেমোয় পার্থ মমতার নাম দেওয়ায় আগেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল ঘাসফুল শিবির। কিন্তু, তাই বলে কি ‘শাক দিয়ে কি আর মাছ ঢাকা যায়?’ প্রশ্ন তুলে ‘চোর ধরো, জেলে ভরো’ স্লোগানে ফের তপ্ত রাজনীতির আঁচে গা গরম করতে নেমে পড়েছে বাম-বিজেপি-কংগ্রেস। তবে সূত্রের খবর, মোনালিসা থেকে অর্পিতা একের পর এক মহিলার সঙ্গে পার্থর ঘনিষ্ঠতা সামনে আসতেই ঘনিষ্ঠ মহলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। এবার বলেই ফেললেন, “আদালতে যদি দোষ প্রমাণিত হয়, তাহলে কারও যাবজ্জীবন সাজা হোক। তাতে কোনও আপত্তি নেই।” সোমবার নজরুল মঞ্চে ‘বঙ্গবিভূষণ’ ও ‘বঙ্গভূষণ’ প্রদানের মঞ্চে এ কথা বলতে শোনা যায় মমতাকে। যা নিয়েই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোরদার চর্চা। এদিকে বাংলার সরকারের দেওয়া বঙ্গবিভূষণ না নিয়ে মমতার অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অর্মত্য সেন।

মমতার এ কথা শুনে অনেক নেটিজেনই আবার শিশির পুত্রের দল বদলের পর ফেসবুক ছেয়ে যাওয়া ‘আজ যে বন্ধু, কাল সে শুভেন্দু’ মিমের কথা মনে করছেন। তবে পার্থ ইস্যুতে যে তৃণমূল তাঁদের অবস্থান আরও কঠোর করতে শুরু করেছে তা রবিবার দুপুর থেকেই পরিষ্কার হচ্ছিল। শনিবারের সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলের তরফে যেখানে বলা হয় আদালতে দোষী প্রমাণিত হলে তবে নেওয়া হবে ব্যবস্থা। সেখানে রবিবার তৃণমূল নেতাদের গলায় শোনা যায় অন্য সুর। রবিবার তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “আদালতে যদি তদন্তকারীরা এমন কোনও তথ্য দেন এবং আদালত যদি সেই তথ্য প্রমাণকে যদি মান্যতা দেয়, তাহলে যত বড় নেতাই হোক, তৃণমূল কংগ্রেস নিশ্চিতভাবে তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।”

এবার নজরুল মঞ্চ থেকে মমতা বললেন, “সবাই সাধু এ কথা আমি বলতে পারব না। সাধুর মধ্যেও ভূত আছে। সবাই একশো শতাংশ সঠিক কাজ করবে এ কথা বলব না। আমি যদি না জেনে কোনও অন্যায় কাজ করে ফেলি তাহলে আমি ক্ষমা চাইব, ভুল সংশোধন করার সুযোগ চাইব। কিন্তু জেনেশুনে আমার দ্বারা কোনও অন্যায় আমি করতে দিইনি নিজেকে। আমি চাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সত্যির বিচার হোক। তাতে কেউ দোষী প্রমাণিত হয় তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলেও আমি কিছু মনে করব না।” মমতা এ কথা বললতেই এদিন কার্যত সিনেমা হলের কায়দায় করতালির বন্য বয়ে যায় নজরুল মঞ্চে।

তবে এ কথা বলার পরে বিজেপি-সিপিএমের তুলোধনা করতে ছাড়েননি মমতা। আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে মমতা বলেন, “কেন আমার ছবি দিয়ে টাকার পাহাড় দেখিয়ে যে প্রচার ছড়িয়েছে বিজেপি আর সিপিএম? তাঁদের এত বড় অহঙ্কার কোথা থেকে আসে? আমি যদি আজ রাজনীতি না করতাম তাহলে জিভটা কেটে ফেলতে পারতাম। আমি কারও পয়সায় খাইনি। আমি সার্কিট হাউসে গেলেও নিজের পয়সায় থাকি। যদি বলেন আপনি তো মাইনে নেন না। তাহলে টাকা কোথা থেকে আসে? আরে আমি বই লিখি। আমি খেটে ইনকাম করি। আমার ১২০টা বই বেরিয়ে গিয়েছে। আমি গানে সুর দিই কখনও কখনও। সেটা কারও পছন্দ হতে পারে নাও পারে। তার থেকে আমি রয়্যালটি পাই। আমি যা রয়্যালটি পাই অনেকেই পায় না। কারণ আমার অনেকগুলো বই বেস্ট সেলার আছে। হোয়াট ক্যান আই ডু?”




Back to top button