Partha Chatterjee : ‘মুখ্যমন্ত্রীকে অ্যারেস্ট করুন’ থেকে ‘পার্থকে সরানো হোক’ – জেলফেরত কুণালের পালে হাওয়া

‘সিবিআই যেখানে মামলা করছে, সেখানে রাজ্য পুলিশ দিয়ে আমায় হেনস্থা করা হচ্ছে….. যান মুখ্যমন্ত্রীকে অ্যারেস্ট করুন..’। ২০১৪ সালের পয়লা ডিসেম্বর যখন বর্তমান তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষকে ( Kunal Ghosh ) রাজ্য পুলিশ সারদা কান্ডে চ্যাংদোলা করে তুলে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন ঠিক এইভাবেই চাঁচাছোলা আক্রমণ শানিয়েছিলেন তিনি। আজ আবার সেই কুণালের কামব্যাক। সোজা টুইট করেছেন, ‘মন্ত্রিত্ব ও দলের সমস্ত পদ থেকে অবিলম্বে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee) সরানো হোক’। অভিষেক ‘ঘনিষ্ঠ’ কুণালের এই টুইট কি তৃণমূলের অন্দরের না মেলা সমীকরণের ইঙ্গিতবাহী?
টালিগঞ্জের পর বেলঘরিয়ায় (Belgharia)। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) ঘনিষ্ট অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের (Arpita Mukherjee) আরেকটি ফ্ল্যাট থেকেও উদ্ধার হল কোটি কোটি টাকা, গয়না এবং সম্পত্তির নথি। বুধবার সকাল থেকে লক ভেঙে এই ফ্ল্যাটে ঢুকেছিল ইডি। তারপর থেকে নাটকীয় মোড় নিতে শুরু করে ঘটনাক্রম! ইডি সূত্রে দাবি, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটের একটি ঘুরে ঢুকে দেখা যায়, সেখানে একাধিক ওয়ার্ড্রোব রয়েছে। ওয়ার্ড্রোব খুলতেই দেখা যায়, ভিতরে থরে থরে সাজানো দু’হাজার এবং পাঁচশো টাকার নোটের বান্ডিল। টাকা গোনার জন্য আনা হয় চারটি অত্যাধুনিক মেশিন এবং কয়েকজন কর্মীকে বেলঘরিয়ায় পাঠানো হয়।
‘তৃণমূল কংগ্রেস দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না। কেউ অন্যায় করলে শাস্তি পাবে, তাতে দলের কিছু এসে যায় না।’- তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরও এসএসসি দুর্নীতিকাণ্ডে অভিযুক্ত ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানো হয়নি। বহাল রয়েছে পার্থর দলীয় মহাসচিব সহ অন্যান্য সব পদও। বিরোধী শিবির প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে, ‘তৃণমূল দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না’ শুধুই কি ‘ডায়লগ’। এবার বিরোধীদের সুরে সুর মিলিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিত্ব ও দলীয় সব পদ থেকে বহিষ্কারের দাবি উঠল তৃণমূলের একেবারে অন্দরমহল থেকেই। টুইটে বিস্ফোরক দাবি করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
কেন এমন দাবি করলেন কুণাল? তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক আগেই বলেছেন, ‘পার্থবাবু সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খুলছেন। অথচ একবারও বলছেন না যে তিনি নির্দোষ। এর ফলে তৃণমূল ও আমাদের প্রিয় নেত্রীকে নিশানা করছেন বিরোধী দলগুলো। যারা ভালোবেসে তৃণমূল করেন তাঁদের নানা অপ্রস্তুত পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আমি জেলে থাকার সময় পুলিশ প্রিজন ভ্যান বাজাত, বলতে দেওয়া হত না। কিন্তু এখন তো সেই অবস্থা নয়। অনেকেই মনে করছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দলীয় সব পদ ও মন্ত্রিত্ব থেকে সরানো হোক। আমি সেটাই টুইট করে দাবি করেছি। এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি মমতাদির হাতে।’
In my earlier tweet, I had expressed my opinion.
Now, the party has taken up the issue.
Avishek Banerjee has convened party meeting today 5pm at TMC bhawan. I have been told to attend that meeting also.
So, as @AITCofficial has taken up the matter, I am deleting the personal one.— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) July 28, 2022
আবার কিছুক্ষন আগে নিজের পূর্ববর্তী টুইট মুছে দিয়ে কুণাল লিখেছেন, ‘দল আমার মতামত শুনেছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আজ বিকেল ৫টায় তৃণমূল ভবনে দলীয় বৈঠক ডেকেছেন। আমাকেও ওই বৈঠকে যোগ দিতে বলা হয়েছে’।
ঠাকুমা বলতেন,
ফোঁড়া যখন পুঁজে ভরে এসেছে, অনতিবিলম্বে তাকে ফাটিয়ে দেওয়াই শ্রেয়। শরীর ভালো থাকে, শান্তিতে ঘুমানো যায়।
একটি ফোঁড়ার জন্য গোটা শরীরকে কষ্ট দেওয়া বৃথা।
— Debangshu Bhattacharya Dev (@ItsYourDev) July 28, 2022
অবশ্য কুণাল একা নন। পার্থকে আক্রমণে এগিয়ে এসেছেন যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু ভট্টাচার্য। তিনি বেশ মজার সুরেই টুইটে লিখেছেন, ‘ঠাকুমা বলতেন, ফোঁড়া যখন পুঁজে ভরে এসেছে, অনতিবিলম্বে তাকে ফাটিয়ে দেওয়াই শ্রেয়। শরীর ভালো থাকে, শান্তিতে ঘুমানো যায়। একটি ফোঁড়ার জন্য গোটা শরীরকে কষ্ট দেওয়া বৃথা।’ অভিষেক ‘ঘনিষ্ঠ’দের এহেন আচরণ তৃণমূলের অন্দরের টানাপড়েন নিয়ে প্রশ্ন জাগাচ্ছে বিস্তর!