Brahmastra Review: কোটি টাকা খরচ, এক দশক সময়! হাজার চেষ্টা করেও বি-টাউনে কতটা সফল রণবীর-আলিয়ার ব্রহ্মাস্ত্র?

অনীশ দে, কলকাতা: গোটা বলিউডের নজর এখন একটি ছবির দিকে ছিল, তা হলো ব্রহ্মাস্ত্র। ছবি মুক্তির আগে পরিচালক অয়ন মুখার্জী (Ayan Mukherji) একধিকবার দাবি করেছে, এই ছবিতে দর্শক যা দেখবে তা আগে কোনোদিন দেখাই যায়নি। ভিএফএক্স নির্ভর এই ছবি (Brahmastra Review) কি শেষমেশ দাগ কাটতে পারল দর্শকদের মনে? দক্ষিণ ভারতীয় কমার্শিয়াল ছবির ভারতীয় বাজারে রমরমা ব্যবসা করার পর সবাই যেন চেষ্টা করছে নিজের সেরাটা দেওয়ার। কিন্তু বারংবার মুখ থুবড়ে পড়েছে সকলে। ব্যতিক্রম ঘটেনি এইবারও।
প্রথমেই আসা যাক অভিনয়ে, রণবীর কাপুর (Ranbir Kapoor) নিঃসন্দেহে একজন দুর্দান্ত অভিনেতা তবে লার্জার দ্যান লাইফ ছবিতে তাঁর শৈলী ধোপে টেকে না। দেখতে খুব সুন্দর হলেও রণবীর (Ranbir Kapoor) একজন নায়ক চরিত্রের চেয়ে বেশি সাবলীল একজন সাধারণ মানুষের চরিত্রে। ‘তামাশা’, ‘রকস্টার’ ছবিতে নিজের অভিনয় দিয়ে সবাইকে চুপ করলেও শমশেরা এবং ব্রহ্মাস্ত্র ছবিতে তাঁর অভিনয় একেবারেই দাগ কাটতে সক্ষম হচ্ছে না। আলিয়া ভাটের (Alia Bhatt) চরিত্র ঈশা যেন এই ছবিতে শুধুই শিবার প্রেমিকা। রণবীরকে প্রেমে ফেলা ছাড়া চিত্রনাট্যে তাঁর অবদান তেমন নেই বললেই চলে। সবশেষে অমিতাভ বচ্চন (Amitabh Bachchan), একসময়ের কমার্শিয়াল ছবির প্রথম তালিকার অভিনেতা হলেও তাঁর অভিনয় যেন সব ছবিতেই একই রকম হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে মৌনী রয়ের অভিনয় বেশ ভালো লাগছে।
চিত্রনাট্যের দিক থেকেও ছবিটি খুবই দুর্বল। আমরা সকলেই জানি চিত্রনাট্য ভালো না হলে শুধুমাত্র ভিএফএক্স ছবিকে ভালো করে তুলতে পারে না। পৌনে তিন ঘন্টার ছবির প্রথমার্ধ জুড়ে রয়েছে শিবা আর ঈশার (Alia Bhatt) প্রেম। অবশ্য তাতে কোনও সমস্যা নেই। সমস্যা তখন শুরু হয় যখন ব্রহ্মাস্ত্র (Brahmastra Review) সম্পর্কে অবগত হন সকলে। এই অস্ত্রের উৎপত্তি ও তার গুরুত্ব একপ্রকার চেপে গিয়েছেন পরিচালক। এই ছবিতে পরিচালক বলতে চেয়েছেন, সবচেয়ে বড় অস্ত্র ভালোবাসা। যা খুবই ভালো কথা, কিন্তু যখন আপনি ৪১০ কোটি টাকা খরচ করেছেন এবং একটি ছবির পিছনে প্রায় ১০ বছর সময় দিয়েছেন তখন এটুকু বোঝা উচিত দর্শক শুধু শিবা ও ঈশার প্রেম দেখতে প্রেক্ষাগৃহে যায়নি। এছাড়াও মূল খলনায়কের বিষয়ে সামান্য আভাস দিলেও তাকে পর্দায় দেখা যায় না। ক্যামিও চরিত্রে শাহরুখের চরিত্রের গুরুত্ব প্রতিষ্ঠা করতেও অক্ষম ব্রহ্মাস্ত্র।
প্রথমে এই ছবির নাম ছিল ড্রাগন। কারন আগুনে শিবা পুড়ে যায় না। কিন্তু পরবর্তীতে ছবির নাম পরিবর্তন করতেই শুরু হয় বিপদ। ছবির নামের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্রহ্মাস্ত্র গুরুত্ব বোঝাতে পারেননি পরিচালক। এছাড়াও একাধিক অ্যাকশন দৃশ্য হলিউড ছবি থেকে অনুপ্রাণিত, তাও কারও বুঝতে অসুবিধা হয়নি। একাধিক ঘটনা, ভালোবাসার ক্ষমতা এবং একাধিক ভাগে এই ছবিকে ভাগ করার জন্যেই ছবির এই হাল। আজকের দিনে আরআরআর যেভাবে মার্ভেল স্টুডিওর ছবিদের ল্যাং মেরে বিদেশে নিজের জায়গা করে নিয়েছে তা দেখবার মত। কিন্তু বলিউড কি সেইভাবে কখনও বিশ্বব্যাপী আর নাম করতে পারবে? থাকছে প্রশ্ন।