‘চকোলেট নিয়েছি ভোটের টিকিট না…’, ট্রোলের যোগ্য জবাব দিলেন স্বস্তিকা

অনীশ দে, কলকাতা: নিজের অধিকারের জায়গা তিনি আদায় করে নিতে জানেন। অন্যায় হলে কাউকেই ছেড়ে কথা বলেন না তিনি। স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (Swastika Mukherjee) যে কতটা স্পষ্ট বক্তা, তা সকলেই জানেন। তবে সম্প্রতি এমন এক কাণ্ড ঘটে জার জেরে স্বস্তিকাকে এক হাত নেন নেটিজেনরা। শনিবার রেড রোডে অনুষ্ঠিত হয় দূর্গা পুজোর কার্নিভাল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত এই কার্নিভালে (Durga Puja Carnival 2022) উপস্থিত ছিলেন টলিউডের একাধিক কলাকুশলীরা। সেখানেই উপস্থিত ছিলেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। এক নামী ক্লাবের প্রতিনিধিত্ব করতে পৌঁছেছিলেন অভিনেত্রী (Swastika Mukherjee)। আর সেখানেই পৌঁছে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ নেন অভিনেত্রী। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) তাঁর হাতে একটা চকলেট গুঁজে দেন। আর সেই নিয়েই শুরু বিতর্ক।
বর্তমান রাজ্য সরকারের কাছের মানুষ নন স্বস্তিকা। অনেকসময় নানা বিষয়ে মুখ খুলেছেন তিনি। বাংলা ছবির প্রেক্ষাগৃহ পাওয়া নিয়ে হোক, কিংবা তরণ আদর্শের পোস্টে তাঁর নাম বাদ পরা হোক, সব নিয়েই সরব হয়েছেন তিনি। কিন্তু রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কখনওই তেমনভাবে সক্রিয় হননি স্বস্তিকা। আর এই কার্নিভাল কাণ্ডের পরেই স্বস্তিকাকে আক্রমণ সারেন নেটবাসিন্দারা। অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র তাঁকে ‘খামতি দিদিমণি’ বলেও কটাক্ষ করেন। আর এরই জবাব দিলেন এবার স্বস্তিকা। তিনি লেখেন, ‘আমি একটা ক্লাবের সাথে কার্নিভালে গেছিলাম, এই প্রথমবার। ৯৫ টার ও বেশি ক্লাব যেখানে যোগদান করেছে, সেই সমস্ত প্যান্ডেলে হাজার হাজার মানুষ ঠাকুর দেখতে গেছেন, সেই সমস্ত ক্লাব আমাদের রাজ্যের। কালকেও উপচে পরা ভীড় ছিল।
তিনি যোগ করেন, ‘রাজ্যের কি খারাপ অবস্থা সেটা ভেবে কেউ বাড়িতে বসে পুজো বয়কট করেনি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হওয়ায় তাঁকে নমস্কার করে বিজয়া জানানোটা ভদ্রতা, সৌজন্য। আমায় দুটো চকলেট দেওয়াটা ওনার ইচ্ছে, সেটা খেয়ে নেওয়াটা আমার’। রাজনীতি এবং দূর্গা পূজার পার্থক্য মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘চকলেট নিয়েছি ইলেকশন টিকিট নয়, চকলেট খেয়েছি মোটা টাকার ঘুষ নয়। আমরা একটা সভ্য দেশে বাস করি, বর্বর নই। কাল দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হলেও একই ভাবে নমস্কার করব কারণ সেটাই ঠিক। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিত্বকে আমি শ্রদ্ধা করি। তার মানে রাজনৈতিক মতবিরোধিতার সঙ্গে আপোষ করা নয়। যেটা অন্যায় তা নিয়ে নিশ্চই বলব কিন্তু পৃথিবীর সমস্ত বিষয় নিয়ে আমায় জিহাদ ঘোষনা করতেই হবে নাহলেই আমার মেরুদন্ড ধ্বসে পরবে এমন কোনো দাসখত আমি লিখিনি। আর আমার ধ্যান ধারণা বিবেক বিচার আপনাদের কথায় ওঠা নামা করে না।’
রাজ্যে ৫০০ দিনেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলনরত এসএসসি চাকরিপ্রার্থীরা। কয়েকদিন আগে পর্যন্ত হাতে গোনা কয়েকজন সমর্থন পেয়েছিলেন বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা। নিজের ফেসবুক পেজে তাদের সমর্থন জানিয়েছেন অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী। এছাড়াও অভিনেতা কৌশিক সেন এবং তাঁর পুত্র ঋদ্ধি সেনও তাদের সমর্থন দিতে পৌঁছেছিলেন ধর্না মঞ্চে। তবে প্রতিবাদী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় এখনও এই বিষয়ে স্পিকটি নট। তবে রাজ্য সরকারের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজিয়ে চলাই কি এখন উদ্দেশ্য?