দিল্লিতে হবে ‘অমৃত বাটিকা’, হুগলির বৈঁচি গ্রাম থেকে মাটি সংগ্রহ করল সেনা
দিল্লিতে বানানো হচ্ছে অমৃত বাটিকা। এইজন্য দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা দেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ ত্যাগ। কিংবা সেই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা সংগ্রামীদের ভিটের মাটি সংগ্রহ করছে সরকার।

শুভঙ্কর, বৈঁচি: স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পরিবারকে বিশেষ সম্মান জানানোর জন্য উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। দিল্লিতে বানানো হচ্ছে অমৃত বাটিকা। এইজন্য দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা দেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ ত্যাগ। কিংবা সেই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা সংগ্রামীদের ভিটের মাটি সংগ্রহ করছে সরকার। সেই মতো হুগলির বৈঁচি গ্রাম থেকে দুই স্বাধীনতা সংগ্রামীর বাড়ির মাটি সংগ্রহ করল বিএসএফ জওয়ানরা। এবার হুগলির সেই স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নাম জানতে ইচ্ছে হচ্ছে নিশ্চয়ই? সেই দুই বীর গান্ধী সৈনিক হলেন, প্রণব কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও রামকৃষ্ণ বসু।
১৯৪২ সালে মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে শুরু হয় ব্রিটিশ ভারত ছাড়ো আন্দোলন। এই আন্দোলনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল ভীত নড়ে যায় ব্রিটিশ সরকারের। দেশের কোণায় কোণায় ছড়িয়ে পড়ে এই আন্দোলন। গান্ধীজীর আদর্শ ও আন্দোলনের ব্যাপক জনপ্রিয়তায় বহু মানুষ যোগ দেন এই সংগ্রামে। এবার সেই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত বীর সংগ্রামী এবং তাঁদের পরিবারকে বিশেষ সম্মান জানানোর উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। নেহেরু যুব কেন্দ্রের মাধ্যমে ‘মেরি মাটি মেরা দেশ’ স্লোগানকে সামনে রেখে এই প্রকল্প এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেই লক্ষ্যে দিল্লিতে অমৃত বটিকা তৈরির জন্য বীর সেনানীদের পুণ্য ভূমি থেকে মাটি সংগ্রহ করার কথা জানিয়ে চিঠি আসে কয়েকদিন আগেই। তারপর ১৩ তারিখে বৈঁচি গ্রামে প্রণব কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও রামকৃষ্ণ বসুর বাড়িতে আসেন বিএসএফের ছয় জওয়ান। মাটি সংগ্রহের পাশাপাশি এই দুই বীর সংগ্রামীদের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন তাঁরা।
১১৮ ব্যাটেলিয়নের বিএসএফের কমান্ডার গণেশ দত্ত গৌতম বলেন, “দেশের বিভিন্ন প্রান্তের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পুণ্যভূমি থেকে মাটি সংগ্রহ করে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অমৃত বাটিকা তৈরিতে এই মাটি কাজে লাগানো হবে। দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে ১৯৪২ সালের ‘কুইট ইন্ডিয়া’ মুভমেন্ট বা ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলন অনেক বড় সংগ্ৰাম । দেশের স্বাধীনতার জন্য এই আন্দোলনের বিশেষ ভূমিকা আছে। সেই সময় যাঁরা এই আন্দোলন করেছিলেন, আন্দোলন করার জন্য জেলে বন্দি ছিলেন তাঁদের পরিবারকে এভাবে সম্মান জানাতে উদ্যোগ নিয়েছে দেশের সরকার”।
প্রণব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেলে সব্যসাচী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ গান্ধীজীর ডাকে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন বাবা। সেই সময় ইউনিয়ন বোর্ডের অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বাবা ও রামকৃষ্ণ বসু পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। প্রথমে তাঁরা বন্দি থাকেন হুগলি জেলে, তারপর প্রেসিডেন্সি জেল, আলিপুর জেলে কারাবাস করে ১৯৪৪ সালে মুক্তি পান। ১৯৭২ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী বাবাকে তাম্রপত্র দিয়ে সম্মান জানিয়েছিলেন”।