তারাপীঠে ফিরে এল লকডাউন স্মৃতি, দেখা নেই ভক্ত ও পর্যটকদের
আবারও সেই স্মৃতি ফিরে এসেছে তারাপীঠ মন্দিরে।জনমানব শূন্য হয়ে পড়েছে মন্দির চত্বর

শুভঙ্কর, বর্ধমান: সতীর ৫১টি খন্ড বিভিন্ন স্থানে পড়ে গড়ে উঠেছে শক্তিপীঠ। এই শক্তি পীঠের মধ্যে অন্যতম তারাপীঠ মন্দির। এখানে সতীর তৃতীয় নয়ন পড়ে। অনেক ভক্তই তারাপীঠ মন্দিরে মায়ের কাছে যান নিজের মনস্কামনা পূর্ণ করতে। কিন্তু যখন করোনাভাইরাসের লকডাউন হয় তখন কার্যত ভক্তহীন হয়ে পড়ে এই মন্দির। এছাড়াও ক্ষতির মুখে পড়ে সেই মন্দিরের ব্যবসায়ী এবং সেখানকার হোটেলের মালিক ও টোটো চালকেরা। আবারও সেই স্মৃতি ফিরে এসেছে তারাপীঠ মন্দিরে। তবে এবার করোনাভাইরাসের জন্য লকডাউনের কারণে নয়, এবার বর্ধমান–সাহেবগঞ্জ লুপ লাইনে কাজের জেরে ট্রেন বাতিল হওয়ার কারণেই কার্যতর জনমানব শূন্য হয়ে পড়েছে মন্দির চত্বর। আবারওয়সেই ব্যবসায়ী, হোটেল মালিক ও টোটো চালকদের মুখে একই বিষণ্ণতা দেখা যাচ্ছে। এমনকি কিছু টোটো চালক রামপুরহাট স্টেশন থেকে চলেও গেছেন।
তারাপীঠ মন্দির সব সময় গমগম করে ভক্তদের ‘জয় মা তারা’ ধ্বনীতে। যেখানে পুজো দিতে পারা একটা ভাগ্যেরও ব্যাপার বলে মনে করেন ভক্তরা। যেখানে অনেকেই নির্বিঘ্নে নিশ্চিন্তে পুজো দিতেও পারেন না। যেখানে স্থানীয় মানুষেরাও মায়ের পূজো ভালো করে দিতে পারেন না, ঠিক সেখানেই এখন কার্যত হু হু করছে। দু একজন স্থানীয় মানুষ সেখানে আসছেন। পুজো দিয়ে যাচ্ছেন নির্বিঘ্নে। এই ছবি তাদের কাছে অচেনা। এই একই চিত্র ধরা পড়েছিল লকডাউনের সময়। এখন টানা কুড়ি দিন ট্রেন বাতিল হওয়ার কারণেই এই অবস্থা। তারাপীঠ মন্দিরে ভক্তরা সবাই আসেন ট্রেনে করে। তারপর ট্রেন থেকে নেমে স্টেশন থেকে বিভিন্ন যানবাহন ধরে তাঁরা যান মায়ের কাছে। রামপুরহাট স্টেশনে মূলত কবিগুরু, ইন্টারসিটি, শহিদ, মা তারা, হাওড়া–জয়নগর, মালদা–দিঘা এক্সপ্রেস ট্রেন করেই ভক্তরা আসেন। কিন্তু এখন রামপুরহাট ও চাতরার মাঝে তৃতীয় লাইনের কাজের জন্য ১১জোড়া মেইল এবং এক্সপ্রেস ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। এমনকি বাতিল করা হয়েছে বর্ধমান সাহেবগঞ্জসহ বহু লোকাল ট্রেন। আর একাধিক এক্সপ্রেস ট্রেনের রুট বদল করা হয়েছে। মাঝরাতে হাওড়া জামালপুর পদাতিক সরাইঘাট এবং বনাঞ্চলের মতো ট্রেন চলাচল করে। কিন্তু তাতেও পর্যটক ও ভক্তদের দেখা সেইভাবে মেলেনা। টেন বাতিল হওয়ার কারণে যেমন তারাপীঠ মন্দির জনমানব শূন্য হয়ে পড়েছে তেমনি ক্ষতির মুখে পড়েছে ব্যবসায়ী, হোটেল মালিক ও টোটো চালকেরা।
তারাপীঠ মন্দিরকে ঘিরে যে সকল ব্যবসায়ীরা রয়েছেন তারা এখন অপেক্ষায় রয়েছে কখন আবার পর্যটকের দেখা মিলবে। কখন আবার তাদের একটু সুদিন ফিরবে। মায়ের কাছে এখন তারা রাতদিন এই প্রার্থনাই করে চলেছেন। মাও তাঁর ভক্তদের ছাড়া এখন একাই রয়েছেন।