অভিষেককে সমর্থন ‘ইন্ডিয়া’ জোটের, খড়গহস্ত সেলিম-অধীর, বঙ্গে কি আসন সমঝোতা হবে না?
সিপিএম-কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের হলটা কী? ইন্ডিয়া জোট গঠনের প্রথম দিন থেকেই ‘দিল্লিতে দোস্তি, বাংলায় কুস্তি’ চলছিল। কোঅর্ডিনেশন কমিটির বৈঠকের দিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলবের পরেও ছবিটা বদলাল না।

সিপিএম-কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের হলটা কী? ইন্ডিয়া জোট গঠনের প্রথম দিন থেকেই ‘দিল্লিতে দোস্তি, বাংলায় কুস্তি’ চলছিল। কোঅর্ডিনেশন কমিটির বৈঠকের দিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলবের পরেও ছবিটা বদলাল না। সিপিএম এবং কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতারা অভিষেকের পাশে দাঁড়ালেও, বাংলায় মহম্মদ সেলিম, অধীর চৌধুরীদের গলায় ভিন্ন সুর। অভিষেকের পাশে তো দাঁড়ালেনই না, উল্টে কটাক্ষ করলেন, তোপ দাগলেন মুহূর্মুহু।
বুধবার ছিল ইন্ডিয়া জোটের কোঅর্ডিনেশন কমিটির বৈঠক। আসন সমঝোতা এবং প্রচারের রণকৌশল নিয়েই মূলত আলোচনা হয়। ১৪ জন কোঅর্ডিনেশন কমিটির সদস্যদের মধ্যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও একজন। বৈঠকে তাঁরও উপস্থিত থাকার কথা ছিল। কিন্তু সেই দিনই নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্তে অভিষেককে তলব করে ইডি। কোঅর্ডিনেশন কমিটির বৈঠকে না গিয়ে ইডির দফতরে হাজিরা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ডায়মণ্ড হারবারের সাংসদ।
অভিষেক উপস্থিত থাকতে না পারায় কোঅর্ডিনেশন কমিটির বৈঠকে একটি চেয়ার ফাঁকা রাখা হয়। অভিষেককে সমর্থন জানাতেই এই সিদ্ধান্ত নেন বিরোধী দলের নেতারা। বৈঠকের আগে শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত বলেন, ‘বিজেপি চায় না ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক হোক। তাই আজকের দিনেই তলব করা হয়েছে। বিরোধীদের কীভাবে কেন্দ্রীয় সরকার হেনস্থা করছে সেই বার্তা দিতে অভিষেকের চেয়ার ফাঁকা রাখা হচ্ছে’। বিরোধী জোটের বৈঠকের দিন তলব করার পিছনে যে ষড়যন্ত্র রয়েছে, সেই বার্তা দেওয়াই ছিল এর উদ্দেশ্য।
কোঅর্ডিনেশন কমিটির এই সিদ্ধান্তকে ব্যাঙ্গ করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। কটাক্ষ করে বললেন, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাদুকা রাখতে পারত। রামায়ণে এমন দৃষ্টান্ত রয়েছে। ভগবান রাম যখন বনবাসে গিয়েছিলেন তখন ভরত তাঁর পাদুকা সিংহাসনে রেখে রাজ্য চালান’। সিপিএম এখনও পর্যন্ত কোঅর্ডিনেশন কমিটিতে কোনও প্রতিনিধি দিতে পারেনি। তার কারণ হিসেবে, বঙ্গ সিপিএমের চাপের কথাই বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
তাঁদের মতে, রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতায় সিপিএম ইন্ডিয়া জোটে সামিল হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এখনও পর্যন্ত জোটের অংশ হয়ে উঠতে পারেনি। কোথাও গিয়ে সুর, তাল কাটছে। দিল্লিতে ইয়েচুরি, মমতা হাসি হাসি মুখে ছবি তুললেও, বঙ্গের সিপিএম নেতারা সেটা ঠিক হজম করতে পারছেন না। একই কথা অধীর চৌধুরীর ক্ষেত্রেও খাটে। তিনি সেলিমের মতো সুর না চড়ালেও বিরোধিতা বজায় রেখেছেন। অধীরের কথায়, ‘আমরা জানি এটা আদালতের হস্তক্ষেপে হচ্ছে। এই তদন্তের দাবি পশ্চিমবঙ্গের নিপীড়িত বঞ্চিত মানুষের। আমরা চেয়েছি সিবিআই তদন্ত হোক, চোরদের ধরা হোক, দুনীর্তিগ্রস্তদের বিচার হোক। আমরা পশ্চিমবঙ্গে যারা কংগ্রেস করি আমরা তা জানি’।