হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে কলকাতার সাথে বিদেশের
বিদেশের মাটিতে ধীরে ধীরে বাড়ছে বাঙালিদের উৎসব। লড়াই এখন তুঙ্গে।

কলকাতা : সেখানে ছিলনা কোনো বাঙালি আনার ছোঁয়া। বাঙালি বাস করলেও উৎসবের দিক থেকে সম্পূর্ণ বাদ ছিল এই দেশ এতদিন । যেখানে সততের আকাশের এক অন্য মেজাজ , সেপ্টেম্বর মাস পরতে না পড়তেই মাঠে ঘাটে কাশ ফুলের ছড়াছড়ি। বাংলায় যেখানে বাস করবে সেখানেই সে খুঁজবে তার দেশের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো। কিন্তু এতদিন এই পাট থেকে বাদ পড়ে ছিল বিদেশের দেশগুলি। যেখানে আজ ১২ টি আলাদা আলাদা পূহ দেখা যায় । তার নাম পৌঁছেছে দুর দুরান্ত পর্যন্ত । বেড়েছে আয়োজন সাথে লন্ডন, সিডনি, মিউনিখ, স্টকহোমের মতো শহরের পুজো নজর কাড়ছে কলকাতার।
তবে এই পরিস্থিতি আস্তে বেশ অনেকটাই সময় লেগে গেছে। এর আগে পর্যন্ত দূরের কোনও শহরে পুজো হত। সে দিন কোনও মতে সকাল সকাল উঠে ট্রেনে চেপে দূর থেকে সেই পুজোয় যেতেন কেউ কেউ। টানা সাত বছর পুজোয় নেদারল্যান্ডেসের একটি ছোট শহরে থেকেছেন তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী সোহম কর। দশ বছর আগে দেশে ফিরেছেন। জানান, সে সময়ে ওই দেশে বেশি পুজো হত না। তাঁর শহর থেকে অনেক দূরে যেতে হত পুজোর গন্ধটুকু পেতে। কিন্তু এখন সে দেশে অনেকগুলি পুজো হয়। বলেন, ‘‘এখন যদি ওখানে থাকতাম, বাড়ির কাছেই পুজো দেখতে পেতাম। একেবারে কলকাতার মতো!’’ স্টকহোম সর্বজনীনের পুজোর এক উদ্যোক্তা অয়ন চক্রবর্তী এখনও সে সময়ের গল্প বলেন। বছর বারো হল সুইডেনে আছেন তিনি। এক সময়ে কয়েকটি বড় শহর মিলিয়ে তিন-চারটি পুজো হত। অয়ন বলেন, ‘‘আমেরিকায় অনেক পুজো হয় জানতাম। এখানে তো ছোট দেশ। বাঙালির সংখ্যাও তুলনায় অনেক কম। একটা পুজো হত স্টকহোমে, সেখানেই যেতেন সকলে।’’ তার পর ধীরে ধীরে বাড়ে পুজোর সংখ্যা। এখন শুধু স্টকহোম আর আশপাশের কয়েকটি শহর মিলিয়েই সাত-আটটি পুজো হয় বলে জানান অয়ন। তাঁদের পুজোয় এক এক দিন হাজার মানুষের ভিড়ও হয়।
জার্মানির মিউনিখের গল্পও প্রায় স্টহোমের মতো। সে শহরে কর্মরত কল্যাণীর ছেলে রণজয় মালাকার এখন ‘সম্প্রীতি মিউনিখ’ পুজোর উদ্যোক্তাদের এক জন। তিনি বলেন, ‘‘কয়েক বছর হল আমরা নিজেরাই পুজো করি। বেশ বাড়ির পুজোর মতো হয়।’’
বিদেশের পুজোর এমন গল্প শুনে সমাজতত্ত্বের শিক্ষক সুচরিতা সোম বেশ মুগ্ধ। তিনি বলেন, ‘‘সকলেই তো বেঁধে বেঁধে থাকতে চান। পুজো মানেই তো তা। তাই নিজের মতো করে পুজো করতেও উদ্যোগী হন।’’ তবে এই সবের মাঝেই বাড়ছে কলকাতার সঙ্গে বিদেশের প্রতিযোগিতা। ক্রমাগত বাড়ছে পুজোর পরিমাণ , বাঙালিয়ানা এবার মনে হয় বিদেশ কেও তার রঙে রাঙিয়ে তুলবেন।