los Angeles: মাত্র ২০বছর বয়সে লস অ্যাঞ্জেলসের মঞ্চে গান করছেন ভারতীয় এক তরুণী, পরিচয় জানলে অবাক হবেন

ভারতীয় সঙ্গীত জগতের তারকা কুমার সানুর নাম কারোরই অজানা নয়। একের পর এক হিট গান করে তিনি বহু বছর আগেই সঙ্গীতের জগতে নিজের জায়গা পোক্ত করে নিয়েছেন। এই বিষয়ে কুমার সানুর কন্যা শ্যানন কুমার শানু ও পিছিয়ে নেই। তিনি বর্তমানে একজন আমেরিকান গায়িকা। লন্ডনের রয়্যাল স্কুল অফ মিউজিকেই ইংরাজি ক্ল্যাসিক্যাল সংগীতের শিক্ষা নিয়েছেন তিনি। মাত্র ১৮বছর বয়সে শ্যানন দুই দেশে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন নিজের সঙ্গীতের জন্য। মাত্র ২০ বছর বয়সে তিনি হলিউডে কাজ করা শুরু করেছেন। বর্তমানে হিমেশ রেশমিয়ার সঙ্গে ‘আজা’ কিংবা ইংরেজি গান ‘রিট্রেস’ তাঁর জনপ্রিয় গান হিসাবে বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও শ্যানন জাস্টিন বিবারের লেখা ও সুরে ‘অ্যা লং টাইম’ গানের মাধ্যমে হলিউডে ডেবিউ করেছেন । কুমার শানুর কন্যা যে গায়িকাই হবে তাতে সন্দেহ ছিলোনা কারোর। কিন্তু এ প্রসঙ্গে ব্যক্তিগত জীবনের এক বড়ো পর্দা ফাঁস হলো কুমার সানুর।
২০০১ সালে কুমার শানু তাঁর কন্যা সন্তানকে দত্তক নেন। শ্যাননকে দত্তক নেওয়ার কথাটা তিনি লুকিয়েছিলেন সকলের থেকে। যখন এই কথা সকলের সামনে আসার পর শানু বলেন “আমি কখনই চাই নি শ্যাননকে দত্তক নেওয়ার কথা সকলে জানুক, কারণ আমি ভীষণ ভয় পেতাম। ভাবতাম সমাজ কী ভাববে? তবে এখন হয়ত অনেকেই জানেন যে শ্যানন আমার দত্তক কন্যা, আর ওই আমার বড় মেয়ে। বাবা হিসাবে আমি শ্যাননের জন্য গর্বিত। এটা আমার কাছে কিছুই যায় আসে না যে আমি জন্মসূত্রে শ্যননের বাবা নই। ও আমাদের পরিবারের গর্ব।”
পাশপাশি কুমার শানু তাঁর মেয়ে শ্যাননের সঙ্গে একটি গান রেকর্ড করেছেন যার নাম ইটস ম্যাজিকাল। এই গানের হিন্দি অংশ শানু গেয়েছেন এবং মেয়ে শ্যানন কে গেয়েছেন গানের ইংরাজি অংশ। ইতিমধ্যেই শান, সোনু নিগমের সঙ্গে গান গেয়ে ফেলেছেন শ্যানন। তিনি হিমেশ রেশমিয়া এবং একতা কাপুরের সিনেমাতেও গান গেয়েছেন। বর্তমানে তিনি আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলসের স্টেজ-এ রীতিমত পারফরমেন্স করছেন।
যতই বিদেশি মাটিতে শ্যানন থাকুক না কেনো দেশের মাটির টান তার বরাবরই। তাঁর বাবা কুমার শানুর গাওয়া সেই ৯০দশকের গান তিনি এখনও শোনেন। তিনি বাংলা গান গাইতে চান কারণ বাংলা গানের মিষ্টতা তাকে অভিভূত করে। তাঁর বাঙালি প্রিয় শিল্পী রবীন্দ্রনাথ। এছাড়াও শ্যানন কিশোর কুমার, আর ডি বর্মন আর শ্রেয়া ঘোষাল, মোনালি ঠাকুরের খুব বড় ভক্ত। বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলসে রিলিজ হয়েছে তার নতুন গান ‘রিট্রেস’। যা ইতিমধ্যেই শ্রোতাদের কাছে খুবই পছন্দের হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুনঃ Vicky-Katrina wedding: বয়স, অভিজ্ঞতা, প্রতিপত্তি সবেতেই ভিকির থেকে একধাপ এগিয়ে ক্যাটরিনা
এইটুকু বয়সে এত সাফল্য শ্যাননকে আনন্দের সাথে ব্যর্থতারও ভয় দেখায়। মাত্র ২বছর বয়স থেকে সঙ্গীতের গুরু যেমন তার বাবা কুমার শানু তেমন জীবনেরও গুরু তার বাবা। শ্যানন তাঁর বাবা কুমার শানুর জীবন থেকেও অনেক কিছু শিখতে পেরেছেন। আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে একটি সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে কুমার শানুর কন্যা বলেছেন, “প্রত্যেকটা মানুষই ব্যর্থতাকে ভয় পায়। আমিও ব্যতিক্রম নই। ব্যর্থতা তো জীবনের অঙ্গ। বাবা বলেন, ‘‘জীবনে যা পেয়েছ, তার জন্য সব সময়ে ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ থেকো। প্রয়োজনের বেশি লোভ ভাল নয়। তোমার কপালে যা আছে, সেটুকুই তুমি পাবে। তার বেশিও পাবে না, কমও না।’’
অনেক ছোট থেকেই তার পরিবারের কথা নিয়ে অনেক কথা শুনতে হতো শ্যাননকে। এই ব্যপারে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “গানের জীবন শুরু হওয়ার সময়ে এই সমস্ত বিতর্ক নিয়ে মন খারাপ করতাম। মানুষের সমালোচনায় আঘাত পেতাম। আমার বাবা-মাকে নিয়ে বিভিন্ন কথা শুনতে হত। সেই সময়ে বয়স কম ছিল বলে একটা সময়ে খুবই মানসিক সমস্যায় ভুগেছি। কিন্তু পরিবারের তরফে ভরসা ছিল বলেই ধীরে ধীরে অন্ধকার থেকে আলোয় ফিরতে পেরেছি।”