ছোটবেলার প্রেম, অর্থ কষ্টে সংসার চালাতে গান ছেড়ে এক সময় সেলসম্যানের কাজ করতেন KK

ভারতের সংগীত জগতে ফের হল নক্ষত্রপতন। এই জগত ছেড়ে ইহজগতে চলে গেলেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাত, যিনি কেকে নামেই সর্বত্র পরিচিত। তার এই হঠাৎ চলে যাওয়া এখনও অব্দি নেটিজেনদের কাছে অবিশ্বাস্য। বেঁচে থাকতে শ্রোতাদের অসাধারণ সব গান উপহার দিয়ে গেছেন তিনি। তার সেসব গান শুনে তাকে ভালোবেসেছেন শ্রোতারা। কেকে- র সেই সমস্ত গানগুলিই ছিল শ্রোতাদের সুখ দুঃখের সঙ্গী। তার গানের মধ্য দিয়ে যেন শ্রোতারা নিজেদের নতুনভাবে খুঁজে পেত। তবে কেকে-র এই হঠাৎ চলে যাওয়ায় দেশের প্রায় সকল নাগরিকই বিষাদগ্রস্ত হয়েছেন।
কেকে তার ভালোবাসার গানের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন শ্রোতাদের মাঝে। বিভিন্ন সময় তার গান শ্রোতাদের মনে প্রেমবোধ জাগাতে সক্ষম হয়েছে। শ্রোতারা তার গান শুনে বারংবার প্রেমে পড়েছে। প্রেমের গান গাওয়া কেকে-র জীবনের প্রেম কাহিনীও ( KK Jyoti Krishna love story ) ছিল অন্যরকম। ৩০ বছর আগে জ্যোতি কৃষ্ণাকে বিয়ে করেছিলেন গায়ক। যদিও বিবাহের পূর্ব থেকেই স্ত্রী জ্যোতির সঙ্গে সম্পর্ক ছিল কেকে-র। এই ৩০ বছরের দাম্পত্য জীবনে কখনও ভাঙ্গন ধরেনি তাদের। সেখানে আজ কেকে-র অকাল প্রয়াণে স্বভাবতই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন কেকে পত্নী জ্যোতি।
প্রসঙ্গত ছোটবেলা থেকেই কেকে এবং জ্যোতির মধ্যে সম্পর্ক ছিল। আর ছোটবেলার ভালোবাসাকে নিয়েই যে সারাটা জীবন কাটানো যায় সেটা প্রমাণ করেছিলেন কেকে। তবে তার জীবনে চলার পথ খুব একটা সুন্দর ছিল না। তার গায়ক হওয়ার পথে ছিল নানান বাধা-বিপত্তি। বর্তমানে জনপ্রিয় গায়ক হলেও শুরুতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছিল কেকে কে। এদিকে যখন কেকে নিজে প্রতিষ্ঠিত হতে ব্যস্ত তখন তার প্রেমিকা জ্যোতির বিয়ে ঠিক হয়। আর এই পরিস্থিতিতে কেকের পাশে কেউ না থাকলেও তার প্রেমিকা জ্যোতি সর্বদাই তার পাশে ছিলেন।
১৯৯১ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন কেকে ও জ্যোতি। তবে তখন কোনো রোজগার করতেন না কেকে। এদিকে বিয়ের পর সংসার কিভাবে চলবে তা নিয়েও ছিল চিন্তা। ফলে এক সময় বাধ্য হয়েই কেকে কে ছাড়তে হয়েছিল নিজের গায়ক হওয়ার স্বপ্ন। সংসার চালাতে নিজের স্বপ্ন ছেড়ে শেষমেষ সেলসম্যানের চাকরি পর্যন্ত করতে হয়েছে গায়ককে। তবে এইভাবে বেশ কিছু বছর কষ্ট করার পর ১৯৯৯ সালে কেকে-র প্রথম অ্যালবাম রিলিজ হয়। তারপর থেকে জীবনে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি এই জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী কে।
তিনি একজন কালজয়ী শিল্পী হিসেবেই থাকবেন সকল শ্রোতার মনে। তার প্রয়াণের পরও তার দেওয়া প্রত্যেকটি গান শ্রোতাদের মনে আজীবনকাল থেকে যাবে। না ফেরার দেশে চলে গেলেও নিজের গানের মাধ্যমে সকলের কাছে অমর হয়ে থাকবেন তিনি।