সিদ্ধার্থ শুক্লার মৃত্যুতে শুরু গুঞ্জন, অল্পবয়সেই বাড়ছে হৃদরোগের ঝুঁকি! রইল চিকিৎসকদের মন্তব্য
ঘুমের আগে সামান্য অস্বস্তি। ওষুধ খেয়ে সেদিন একটু তাড়াতাড়িই শুয়ে পড়লেন। সকালে আর ভাঙল না ঘুম। এমন ঘটনা প্রায়শই ঘটে থাকে। ঠিক যেমনটা ঘটেছে অভিনেতা সিদ্ধার্থ শুক্লার ক্ষেত্রে! ঘুমের মধ্যেই হৃদস্পন্দন থেমে গিয়েছিল অভিনেতার। মাত্র ৪০ বছর বয়সেই এমন প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা বলিউড। চিকিৎসক মহলের মতে, ২০-৩০ বছর বয়সীদের মধ্যেই বেড়ে চলেছে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা। কী কারণে বাড়ছে হৃদরোগ?
গবেষণায় জানা যাচ্ছে, আগে বয়স্কদের ক্ষেত্রে যে হৃদরোগকে সাধারণ বলে ধরা হত, তাই ৪০ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে এখন ঘটছে। গত জুলাইয়ে অভিনেত্রী মন্দিরা বেদীর স্বামী রাজ কৌশলও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। হৃদরোগ-বিশেষজ্ঞ ডঃ আশীষ আগরওয়ালের মতে, “সিদ্ধার্থের ছেড়ে চলে যাওয়াটা খুবই দুঃখজনক। তবে ওর মৃত্যু একটি বৃহৎ সমস্যাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।” মদ্যপান, ধূমপান আর অনিয়মিত ঘুমের পাশাপাশি বাড়তে থাকা চিন্তা, স্ট্রেস ও শারীরিক কসরতের অভাবকেই এহেন হৃদরোগের কারণ হিসেবে তুলে ধরছেন চিকিৎসকরা।
“একটা দারুণ চেহারা মানেই কিন্তু এটা নয় যে তার অন্তরের স্বাস্থ্যও ভাল!” এমনটাই মত ডঃ আগরওয়ালের। আরোও এক ডাক্তারের মতে “২০-৩০ বছরের মধ্যেই এমন রোগীরা আসছেন যাঁদের ডায়াবেটিসের মতো সমস্যা রয়েছে। ওবেসিটির পাশাপাশি উচ্চ কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যাও ক্রমবর্ধমান”। অন্যদিকে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের গবেষণা বলছে, আগামীতে কম বয়সে মৃত্যুর ক্ষেত্রে অর্ধেক নাগরিকই ডায়াবেটিস বা হৃদরোগের শিকার হয়ে মারা যাবেন।
তাহলে বাঁচার উপায় কী? চিকিৎসকমহলের সাফ দাবি, “সবুজ সবজি খান। প্রতিদিন ব্যায়াম করুন। কমপক্ষে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমান আর সবার আগে ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করুন।” যাঁদের পরিবারে নানাবিধ শারীরিক সমস্যার ইতিহাস রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে ৩০ বছরের পর থেকেই নিয়মিত বার্ষিক চেক-আপ আবশ্যক বলেও জানাচ্ছেন ডাক্তারেরা।
৪০ বছরের কম বয়সীদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা যে হারে বাড়ছে, তা সত্যিই চিন্তার বলেই জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। গত ১০ বছরে বার্ষিক ২% হারে বেড়েই চলেছে এই সম্ভাবনা! হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-অধ্যাপক রণ ব্ল্যাঙ্কেনস্টাইন জানিয়েছেন, “আগে হৃদরোগ পঞ্চাশোর্ধ্বদের ক্ষেত্রে দেখা যেত। এখন সেই বয়স নেমে এসে ২০তে দাঁড়িয়েছে। ফলত এখনই সাবধান না হলে সমস্যা যে ক্রমশ গুরুতর হবে, তা বলাই বাহুল্য।”