Mohammed Rafi Death Anniversary : রফি সাহেবের অন্তহীন সুরের যাত্রা, রাস্তার ধারের নাপিত থেকে সুরসম্রাজ্ঞী, রইল গল্প

নেহা চক্রবর্ত্তী, কলকাতা : বলিউড ইন্ডাস্ট্রি তথা হিন্দি চলচ্চিত্রকে একটার পর একটা চিরসবুজ গান উপহার দিয়েছেন স্বর্গীয় মোহাম্মদ রফি সাহেব( Mohammed Rafi Saheb )। ৪২ বছর আগে ঠিক আজকের দিনে পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন এই মহাপ্রাণ। যদিও রফি সাহেবের মৃত্যুর( Mohammed Rafi Saheb death anniversary ) কয়েক বছর পরেও মানুষ এখনও তাঁর গানকে জীবিত করে রেখেছেন শোনার মধ্য দিয়ে। কিন্তু মোহাম্মদ রফি সাহেব কি ছোট থেকেই গায়ক হতে চেয়েছিলেন? দেখে নেওয়া যাক রফি সাহেবের সঙ্গীত জীবন প্রারম্ভের এক ঝলক।
উল্লেখ্য রফি সাহেবের সঙ্গীত জগতে প্রবেশে একটা বড় ও মূল অধ্যায় জুড়ে রয়েছেন পণ্ডিত জীবনলাল( Pandit Jibanlal )। তিনি যদি ৯ বছর বয়সী রফিকে নাপিতের দোকানে কাজ করতে না দেখতেন তাহলে আজ আমরা কেউই মোহাম্মদ রফি সাহেবকে কিংবদন্তি গায়ক হিসেবে পেতাম না।
১৯২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর মোহাম্মদ রফি অমৃতসরের কোটলা সুলতান সিং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ৬ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয় বড় ছেলে। পরিবারের সদস্যরা তাঁকে আদর করে নাম রেখেছিলেন ফিকো। ফিকো ওরফে রফি ছোট থেকেই রাস্তায় ফকিরের গান শুনতেন এবং মুগ্ধ হতেন। একটা সময় পর থেকে সে সেই গানের অনুকরণে গান গাওয়া শুরু করেন। তাঁর বয়স যখন ৯ তখন রফির পুরো পরিবার অমৃতসর থেকে লাহোরে চলে আসেন। পড়াশুনার প্রতি কখনওই আগ্রহ ছিলনা রফির। তাই অগত্যা তাঁর বাবা তাকে তাঁর বড় ভাইয়ের সঙ্গে একটি পারিবারিক নাপিতের দোকানে কাজে পাঠাতেন। সেখানে হেয়ারড্রেসার ছিলেন ৯ বছর বয়সী রফি।
বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য, ১৯৩৩সালে সঙ্গীতজ্ঞ পন্ডিত জীবনলাল সেই নাপিতের দোকানে আসেন। রফি তখন পণ্ডিতের চুল কাটছিল সাথে গুনগুন করতে করতে গাইছিল। সেই শুনে খুশি হন পণ্ডিত। তারপর তাঁকে সুযোগ করে দেন রেডিও চ্যানেলের একটি অডিশনে। বলাই বাহুল্য যেখানে তিনি সহজেই পাস হয়ে যান। এরপর জীবনলালই রফিকে গানের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। তারপর রফি রেডিওতে গানে কণ্ঠ দিতে শুরু করেছিলেন।
সেই সময় একটি ঘটনা ঘটে। সালটা ১৯৩৭ । যখন জনপ্রিয় গায়ক কুন্দনলাল সেহগাল মঞ্চে বিদ্যুৎ না থাকায় মঞ্চে গান গাইতে অস্বীকার করেছিলেন। আয়োজকরা তখন ১৩ বছর বয়সী রফিকে তাঁর জায়গায় সুযোগ দেন। শ্রোতাদের মধ্যে বসেছিলেন কে এল সেহগাল। তিনি স্পষ্টতই সেদিন বুঝেছিলেন এই ছেলে একদিন বড় গায়ক হবে। হলও তাই। এরপর অভিনেতা ও প্রযোজক নাজির মোহাম্মদ রফিকে ১০০ টাকা এবং একটি বোম্বের টিকিট পাঠিয়ে ডেকেছিলেন হিন্দি ছবি পেহলা আপ-এ কণ্ঠ দেওয়ার জন্য। প্রথমবার তিনি ‘হাম হ্যায়’ গানটি রেকর্ড করেন। এরপর থেকে বলিউড তথা হিন্দি চলচ্চিত্রে তিনি ব্যাক টু ব্যাক গান উপহার দিতে থাকেন । বছর পেরিয়ে যায় সাথে ছড়িয়ে যায় মোহাম্মদ রফি সাহেবের গান সারা দেশ-বিদেশে।