বচ্চন পরিবারের পুত্রবধূ ঐশ্বর্য রাই, বৌমা নয় নিজের মেয়ের মতই আগলে রাখেন জয়া বচ্চন
শাশুড়ি-বৌমা মানেই যে সবসময় সাপে-নেউলে সম্পর্ক হবে এমনটা নয়। বরং যুগের হাওয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আজকাল শাশুড়ি-বৌমার সম্পর্ক অনেকটাই প্রগতিশীল হয়ে উঠেছে। বি-টাউনের “সাস-বাহু” জুটিরাও এই প্রগতিশীলতার ব্যতিক্রমী নন। বরং বচ্চন পরিবার অন্যান্য ক্ষেত্রের মতন এই বিষয়েও এক ঐতিহ্য এবং প্রগতিশীল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
বচ্চন পরিবারের জয়া বচ্চন (Jaya Bacchan) ও ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের (Aishwarya Rai Bacchan) সম্পর্ক নিয়ে নানা নেতিবাচক মন্তব্য শোনা যায় বি-টাউনে। এক পরিবারে একসঙ্গে থাকতে গেলে মতের অমিল হতেই পারে এবং এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তাই বলে যে একে অপরের মধ্যে ভালো সম্পর্ক নেই এমনটা তো হতে পারে না। বরং এমন অনেক ভালো ভালো উদাহরণ আছে যা থেকে বোঝা যায় জয়া বচ্চন এবং তার একমাত্র পুত্রবধূ ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্তই সুমধুর।
১. একই শাড়ি ভাগ করে নেন দুই মহিলা বচ্চন:
একে অপরের পোশাক ভাগ করে নেওয়া থেকে ঐশ্বরিয়ার প্রাপ্য মর্যাদা পাইয়ে দিতে লড়াই করা সবদিকেই সমান খেয়াল রাখেন শাশুড়ি মা। মিডিয়া সূত্রে দেখা গেছে, ২০১০ এবং ২০১৪ সালের স্ক্রীন আওয়ার্ড গোলাপি টুকটুকে শাড়ি পরেছিলেন এবং সেই একই শাড়ি পড়ে ২০১১ সালে দুর্গাপূজা উদযাপন করেছিলেন মহিলা জুনিয়র বচ্চন ঐশ্বরিয়া। বচ্চন পরিবারের মহিলাদের অত্যন্ত প্রিয় এই শাড়িটি তারা একে অপরের সঙ্গে ভাগ করে নিতেও দ্বিধাবোধ করেন না।
২. ঐশ্বরিয়াকে নাম ধরে ডাকায় এক সাংবাদিককে তিরস্কার করেছিলেন জয়া বচ্চন :
একবার সুভাষ ঘাইয়ের পার্টিতে যখন জয়া বচ্চন এবং ঐশ্বরিয়া বচ্চন একসঙ্গে গেছিলেন, তখন একজন ফটোগ্রাফার ঐশ্বরিয়াকে নাম ধরে ডেকে পোস্ট দিতে অনুরোধ করেছিলেন। যা দেখে অত্যন্ত প্রতিরক্ষামূলক শাশুড়ি মা সাংবাদিককে তিরস্কার করে বলেন, “ঐশ্বরিয়া কেয়া হোতা হ্যা, ও কি তোমার স্কুলের বন্ধু?” যা থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা গিয়েছিল জয়া বচ্চন মিডিয়াকে শেখাতে চেয়ে ছিলেন কিভাবে তার পরিবারের ‘বাহুরানি’কে সম্বোধন করা উচিত।
৩. একটি অ্যাওয়ার্ড ফাংশানে জয়া বচ্চনের কাঁধে মাথা রেখে বসে ছিলেন ঐশ্বরিয়া রায় বচ্চন :
২০১৬ সালে স্টারডাস্ট অ্যাওয়ার্ডের সময় ‘সর্বজিত’ মুভির জন্য ঐশ্বরিয়া রায় কে পুরস্কৃত করা হয়েছিল এবং সেই আওয়ার্ড ফাংশনটি হোস্ট করছিলেন অভিষেক বচন। শোনা যায়, ঐশ্বর্য আশা করেছিলেন এই পুরস্কার বিতরণের সময় তার নাম ঘোষণা করবেন অভিষেক বচ্চন নিজে, কিন্ত তেমনটা হয়নি এবং তাই সে শাশুড়ি মায়ের কাঁধে মাথা রেখে অভিযোগ জানাচ্ছিলেন। শাশুড়ি-বৌমার মধ্যে এমন মুহুর্ত সত্যিই বিরল।
৪.ঐশ্বর্যর অভিভাবকত্বের প্রশংসা করেন জয়া বচ্চন :
আমাদের সবারই জানা আছে যে, মা হওয়ার পর ঐশ্বরিয়া তার ব্যক্তিগত জীবন এবং মাতৃসত্ত্বাকেই বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন পেশাগত দিকের তুলনায়। তার সন্তানই সব সময় তার প্রথম প্রাধান্য ছিল। ঐশ্বরিয়ার এই অভিভাবকত্বের প্রশংসা করে জয়া বচ্চন বলেন, “ও যেভাবে আরাধ্যার খেয়াল রাখে এবং সবসময় গৃহপরিচারিকাদের হাতে ছেড়ে দেয় না, তা সত্যিই প্রশংসনীয় এবং আমি তো মাঝে মাঝে আরাধ্যাকে মজা করে এও বলি যে তুমি সত্যিই খুব ভাগ্যবান যে ঐশ্বর্যর মতন একজন মিস ওয়ার্ল্ড কে নিজের নার্স হিসাবেও কল্পনা করতে পারো।
৫. অভিষেক বচ্চনকে বিয়ে করার আগেও ঐশ্বর্যর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন জয়া বচ্চন :
জয়া বচ্চন এবং ঐশ্বর্য বচ্চনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা দেখা যায় অভিষেক বচ্চনের সঙ্গে বিয়ের পর। কিন্তু তার অনেক আগে থেকেই ঐশ্বর্য্যের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন শাশুড়ি মা। একবার করেন জোহরের টক শোতে এসে সিনিয়র মহিলা বানিয়েছিলেন ঐশ্বর্য আমাদের পরিবারের সঙ্গে মিশে গেছে এবং মানিয়ে নিয়েছে। ঐশ্বর্য খুব চুপচাপ, ও সবার মতামত শোনে এবং গ্রহণ করে। যেকোনো পরিস্থিতিতে পাশে দাঁড়ানোর দক্ষতা রাখে। আমি ওকে খুবই ভালোবাসি।”
এই উদাহরণ গুলি থেকে স্পষ্টতই বোঝা যায়, ঐশ্বর্য জুনিয়র মহিলা বচ্চন হওয়ার অনেক আগে থেকেই শাশুড়ির মন জয় করে নিয়েছিলেন এবং বর্তমানেও তিনি শাশুড়ি মায়ের অত্যন্ত কাছের একজন মানুষ।