কে কে’র মৃত্যুতে অস্বাভাবিকতা? বিশৃঙ্খলার জেরে মৃত্যুর অভিযোগে তির বিদ্ধ নজরুল মঞ্চ

বলিপাড়ায়(Bollywood) নক্ষত্রপতন। গতরাতেই প্রয়াত হন বিখ্যাত গায়ক কে কে(Singer KK Died)। নিজের মৃত্যুর আগের মুর্হূত পর্যন্ত মঞ্চে দাঁড়িয়ে গান করে গেছেন তিনি। বিগত দু’দিন ধরে কলকাতাতেই ছিলেন তিনি। গতকাল নজরুল মঞ্চে(Nazrul Mancha) একটি অনুষ্ঠান চলাকালীন অসুস্থ বোধ করেন তিনি। সেখানে উপস্থিত দর্শক সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন মঞ্চে ওঠার পর থেকেই তাঁকে বেশ অসুস্থ দেখাচ্ছিল। কিন্তু সেই অসুস্থতাও থামাতে পারেনি তাঁকে। নিজের জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত মঞ্চে দাঁড়িয়ে সুর তুলেছেন তিনি।গতকাল নজরুল মঞ্চে উল্টোডাঙা গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ে কলেজের একটি অনুষ্ঠানে এসেছিলেন তিনি। এমনকী ৩০ তারিখও নজরুল মঞ্চে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু এক মুর্হূতেই আজ সব কিছুই অতীত। যার গলায় গতরাতে মাতল শহরবাসী। সেই গলা যে আর কোনওদিন এই বাস্তব জীবনে, মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে শোনা যাবে না তা আশা করেনি কেউই।
উল্লেখ্য, গায়কের এই অপ্রত্যাশিত মৃত্যু যেন ভেঙে দিয়েছে শহরবাসীকে। গায়কের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলছে অনেকে। অভিযোগ, স্বাভাবিক মৃত্যু নয়! বিশৃঙ্খলার জেরে বলি হয়েছে একটি প্রাণ। এ প্রসঙ্গে ইতিমধ্যে দায়ের হয়েছে মামলাও। গায়কের মৃত্যু যে স্বাভাবিক না সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। নজরুল মঞ্চ কর্তৃপক্ষের দিকেও উঠেছে অভিযোগের আঙুল। এদিন মঞ্চে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকের অভিযোগ, কেকে ঢোকার সময় উন্মত্ত কিছু ব্যক্তি গাড়ির উপরে ঝাঁপিয়ে পরে। সে সময় একটি ফায়ার এক্সটিংগুইশার ওপেন হয়ে ছড়িয়ে পরে। তার মধ্যে দিয়েই শিল্পীকে কোনোক্রমে মঞ্চের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। অসুস্থতা কি সে কারণেই?
মনে করা হয়, ড্ৰাই কেমিক্যাল ফায়ার এক্সটিঙ্গুইশার “এ বি সি ” টাইপ। যার মধ্যে বেশিরভাগ সময়ে মনো এমোনিয়াম ফসফেট থাকে। তার সঙ্গে থাকে সোডিয়াম বাই কার্বনেট। তার মধ্যেই নাইট্রোজেন দিয়ে চাপ তৈরি করা থাকে। যা খুলে গেলে তৎক্ষণাৎ ছড়িয়ে পড়ে। নিঃশ্বাসে ঢুকলে একাধিক সমস্যা। নাক জ্বলতে পারে, গলা জ্বলতে পারে। ফুসফুসে প্রদাহ হতে পারে। শ্বাস কষ্ট হতে পারে। কাশি মাথা যন্ত্রণা, অস্বস্তি, ঘোর ভাব আসতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, এই গ্যাস বেশি পরিমাণে শরীর মধ্যে গেলে হার্টবিট অনিয়মিত হয়ে পড়তে পারে। খিঁচুনি হতে পারে। নিউমোনিয়া কিডনি ফেলিওর হতে পারে। এবার প্রশ্ন এদিন মঞ্চে কী ধরণের ফায়ার এক্সটিংগুইশার ছিল?
শুধুই ফায়ার এক্সটিংগুইশার নয়। মঞ্চে থাকা দর্শকের পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে অনেক। নজরুল মঞ্চে এক সঙ্গে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে দু’হাজার দর্শক থাকতে পারে। কিন্তু, এদিন এই সংখ্যা ছিল আকাশছুঁই। দু’হাজার দর্শক ধারণকারী এই মঞ্চে কোনওক্রমে উপস্থিত ছিলেন ছয় থেকে সাত হাজার মানুষজন। স্টেজের উপরেই দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রায় ১০০ জনের কাছাকাছি মানুষ। ফলত এই নিয়ে নজরুল মঞ্চ কর্তৃপক্ষের দিকে উঠছে অভিযোগের আঙুল।