Tarun Majumdar Death: তরুণবাবুকে কোনওদিন ‘গুরু’র মান্যতা দেননি তাঁর স্ত্রী! জানেন কি সন্ধ্যা রায়ের এহেন ব্যবহারের কারণ?

কোনও এক অজানা দেশে হারিয়ে গেলেন ‘চিরতরুণ’। সোমবার সকাল ১১টা ১৭ মিনিট নাগাদ প্রয়াত হলেন বর্ষীয়ান চলচিত্র নির্মাতা তরুণ মজুমদার ( Tarun Majumdar Death )। বিগত কয়েকদিন ধরেই নানা শারীরিক ব্যাধি নিয়ে ভুগছিলেন তিনি। যার ফলাফল হয় তো আজকের এই সকাল। দিনের শুরুতেই রাজ্যের আকাশে একটা অন্ধকার নামিয়ে বাঙালির মনে দুঃখের ছবি এঁকে না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন তিনি।
তাঁর চলে যাওয়ার আকস্মিকতায় যেন একেবারে ভেঙে পড়েছে বাংলা ও বাঙালি। মনের কোণে লুকিয়ে থেকে বেদনা পেয়েছে উন্মোচন। তবে তাঁর দেহ এই ধরিত্রীর মাটি কখনই ছাড়বে না। তাঁর রেখে যাওয়া প্রতিটি কীর্তি কখনই মানুষ ভুলবে না। তাই জুলাই মাসের এই চতুর্থ দিনটি বাঙালির কাছে সম্মান পাবে ‘চিরতরুণ’এর দিন হিসেবে। বয়স বাড়লেও মনে-প্রাণ সে ছিল চিরতরুণ। পরিচালক ও তাঁর স্ত্রী সন্ধ্যা রায়ের একে অপরের প্রতি ভালোবাসাকে চিরকাল অন্য চোখে দেখেছে সিনেমা পাড়া। কলেজের পর যখন দিশেহারা যুবক তরুণ ( Tarun Majumdar ), তখনই তাঁর মাথায় নড়ে উঠেছিল একটি পোকা । বাঙালি যাকে পরে নাম দেয় সিনেমা পোকা।
এই সিনেমা পোকার নাড়া খেয়েই সিনেপাড়া দিয়ে শুরু যাতায়াত। পথ শুরু এক নতুন ভবিষ্যতের দিকে। আর সেখান থেকেই আলাপ নিজের জীবনসঙ্গীর সঙ্গে। ‘পলাতক’ ছবির পর থেকে আজ পর্যন্ত শেষের দিকের কয়েকটি ছবি বাদ দিয়ে প্রায় প্রতিটি ছবিতেই নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করেছেন সন্ধ্যা রায় ( Sandhya Roy )। কোনও কোনও ছবিতে নায়িকার চরিত্রে তাঁকে দেখা না গেলেও থেকেছেন সিনেমার কোনও উল্লেখযোগ্য চরিত্রে। তবে এমনটা নয় যে, তরুণ মজুমদারের ঘরনী হওয়ার জেরে এই সকল সুবিধা ভোগ করেছেন তিনি। সন্ধ্যা রায়ের অভিনয়ের দক্ষতা ছিল অসাধারণ। আর সেই যোগ্যতার জেরে নিজেকে মূল চরিত্রে স্থাপিত করতেন তিনি। কিন্তু অভিনেত্রীর চোখে তাঁর স্বামী কিন্তু কখনই পাননি ‘গুরু’র মান্যতা। জানা যায়, রাজেন তরফদারকেই ভীষণ ভাবে সম্মান করতেন তিনি। যার নেপথ্যে মূল কারণ হল, সন্ধ্যা রায়ের অভিনয় জগতে পা রাখার প্রথম দিকের দিনগুলি। কিশোরবেলাতেই সিনেপাড়ায় পা রেখেছিলেন অভিনেত্রী। ১২ বছর বয়সে তিনি যখন প্রথম এই কলাকুশলী মহলে প্রবেশ করেন, তখন তিনি ছিলেন একখণ্ড কাদামাটির তাল। যাকে ছেনে ছুনে এক বিরাট অভিনেত্রী তৈরি করেন এই রাজেনবাবু। সেই শিল্পের দিক থেকে নিজের স্বামীর তুলনায় রাজেনবাবুকেই বেশি মানতেন সন্ধ্যা রায়।
উল্লেখ্য, সন্ধ্যা রায়কে বেশ চোখে হারাতেন তরুণবাবু। তবে পেশার দিক থেকে সকলের থেকে তাঁকে আলাদা চোখে দেখতেন এমনটা নয়। কখনই আলাদা করে তাঁর সঙ্গে কোনও চরিত্রের রিহার্সালে যে তিনি বসতেন এমনটা কখনই দেখা যায়নি। তরুণ মজুমদারের একটি বিখ্যাত ছবি ‘আলোর পিপাসা’। এই ছবির প্রসঙ্গে তাঁকে একটি সাক্ষাৎকারে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, ওই ছবির চরিত্রের জন্য তিনি কতদিন সন্ধ্যা রায়ের সঙ্গে আলাদা ভাবে রিহার্সালে বসেছেন। যার উত্তরে তিনি জানিয়েছিলেন, এমনটা নাকি কখনই প্রয়োজন হয়নি। তাঁকে শুধু একবার চরিত্র সম্পর্কে বলে দিলেই হয়ে যেত। আলাদা করে রিহার্সালের কোনও প্রয়োজন থাকত না।