অনিমেষ দত্ত স্পেশ্যাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ, দেখে নিন কেমন হল আবার প্রলয়
প্রলয়ের মত এখানে তার মাঝপথে আগমন নয় শুরু থেকেই জাঁকিয়ে বসেছেন তিনি। ছবির রেশ ধরেই অনিমেষ এখানে বিবাহিত। স্ত্রী ও পুত্র নিয়ে বেশ জমিয়ে সংসার করছে। গুন্ডা পাচারকারীরা তার ভয়ে কাবু হলেও তিনি আপাদমস্তক বাঙালি। বউকে ভয় পান তিনিও

শুভঙ্কর, কলকাতা: ট্রেলারেই আভাস পাওয়া গিয়েছিল কেমন হতে চলেছে রাজ চক্রবর্তী প্রথম ওয়েব সিরিজ ‘আবার প্রলয়’। সুন্দরবনের গভীর অরণ্য। সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রা। নারী পাচারের বার বাড়ন্ত। সবকিছুই ছিল ট্রেলারে। সিরিজ দেখতে বসে সেই বিষয়ে আরো গভীরভাবে আলোকপাত। দুর্দান্ত অ্যাকশন, সব সত্য চট্টোপাধ্যায়ের অনিমেষ রুপি অভিনয়, বুড়ো হাঁড়ে ভেলকি দেখানো পরান বন্দ্যোপাধ্যায়। সব মিলিয়ে চটকদার পরিবেশন করেছেন রাজ চক্রবর্তী।
সুন্দরবনে জাঁকিয়ে বসেছে নারী পাচার চক্র। স্থানীয় প্রশাসন নাজেহাল। জাঁকিয়ে বসা এক ভন্ড সাধুবাবা। পরিস্থিতি ক্রমাগত হাতের বাইরে যাচ্ছে দেখে কলকাতা থেকে ডাক পড়ে স্পেশ্যাল ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসার অনিমেষ দত্তের। এই ভাবেই নিজের প্রথম ওয়েব সিরিজের শুরু করেছেন রাজ। সবার প্রথমে আসা যাক অনিমেষ দত্ত ওরফে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় চরিত্রে। প্রলয়ের মত এখানে তার মাঝপথে আগমন নয় শুরু থেকেই জাঁকিয়ে বসেছেন তিনি। ছবির রেশ ধরেই অনিমেষ এখানে বিবাহিত। স্ত্রী ও পুত্র নিয়ে বেশ জমিয়ে সংসার করছে। গুন্ডা পাচারকারীরা তার ভয়ে কাবু হলেও তিনি আপাদমস্তক বাঙালি। বউকে ভয় পান তিনিও। এতদিন পরেও তার ফিটনেস চমকে দেওয়ার মত। সকল দৃশ্যে এখনো সাবলীল শাশ্বত।
বিনোদবিহারীকে ছাড়া অনিমেষের গল্প ঠিক জমে না। তবে প্রথমবারের চেয়ে এবারে পরান বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি অনেকটা কম। তবে তাতেও নিজের ছাপ রেখে গেছেন তিনি। বিশেষ করে তার কাদ উচিয়ে তাকানো এখনো দর্শকদের মোহিত করবে। এই সিরিজে প্রচুর চরিত্র নিয়ে কাজ করেছেন রাজ। স্থানীয় প্রেক্ষাপট অনুসারে চরিত্রগুলো সুন্দরবনীয় ভাষাতেই কথা বলে। সে ক্ষেত্রে রিত্তিকের অভিনয় নজর করা। অন্যান্য সহ অভিনেতাদের থেকে সুন্দরবনের ভাষা তিনি বেশি রপ্ত করেছেন। চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলেছেন নিজের মত। এই সিরিজে অন্যতম চমক হল মোহিনী মায়ের চরিত্রে কৌশানি। বাণিজ্যিক ছবি থেকে বেরিয়ে এসে এ ধরনের কাজে তাকে বেশ স্বাবলীল দেখিয়েছে। শম্পা এবং কানুর চরিত্রে যথাক্রমে সায়নী ঘোষ এবং গৌরব চক্রবর্তীর অভিনয় সাবলীল। তবে আলাদা করে নজর কেড়েছে সিরিজ়ের পুলিশবাহিনী।রাজ্যের সেচমন্ত্রী তথা নাট্যকর্মী পার্থ ভৌমিকের মুখে ‘হ্যালো স্যার’ সংলাপ বেশ ভাল। এই সিরিজ়ে রয়েছেন একগুচ্ছ তরুণ অভিনেতা। ‘বড়’ অভিনেতাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছেন তাঁরা। সামিউল আলম বা আর্য দাশগুপ্তেরা পরিচিত মুখ হলেও, বাকিরাও কোনও অংশে কম নন।
তবে এসবই কি ভালো? একদম সেটা নয়। কিছু জিনিসের সঠিক মাত্রায় ব্যবহার খারাপ লাগবে। অতিরিক্ত স্লাগ ল্যাঙ্গুয়েজ এর ব্যবহার এড়ানোর যেত। ছবির কিছু কিছু জায়গায় ভিএফএক্স আশা পূর্ণ করতে পারেনি। জলের নীচে গোপন ঘরের উপস্থিতি একটু অবিশ্বাস্য। এই সিরিজের দৈর্ঘ্য কমানোর জায়গা ছিল। শুরুতে একটা যেমন টানটান গল্প নিয়ে শুরু হয় শেষের দিকে কোথাও যেন তাতে একটু ঢিলেমি পড়েছে। শেষের দিকে একটি উৎকৃষ্ট রয়েছে তাই আশায় করা যায় এর সিক্যুয়েল আসবে।