সত্যজিতের নন্দনে নেই সত্যজিৎ কথা, এবার ফেঁটে পরলেন খোদ সন্দীপ রায়

রাখী পোদ্দার, কলকাতা : সত্যজিৎ রায় মানেই বাঙালির আবেগের অপর নাম। কিংবদন্তি এই পরিচালককে শ্রদ্ধা নিবেদন করে ‘অপরাজিত’ ( Aparajito) তৈরি করেছেন অনিক দত্ত ( Anik Dutta)। এই ছবির হাত ধরে সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’ সিনেমা তৈরি করার কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে। এই ছবির মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন জিতু কমল ( Jeetu Kamal)। সত্যজিৎ রায়ের আদলেই করা হয়েছে তাঁর লুক সেট। যা দেখে আবেগ প্রবণ হয়ে পড়েন সত্যজিৎ রায়ের ( Satyajit Ray) পুত্র সন্দীপ রায়। ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ১৩ই মে। ছবি মুক্তির একদিন আগেই ছবিটি দেখেন সন্দীপ রায়। ছবি দেখে আবেগে ভাসলেন সত্যজিৎ রায়ের ছেলে পরিচালক তিনি(Sandip Ray)। তিনি বলেন যে, পর্দায় যেন বাবাকেই দেখতে পাচ্ছিলেন তিনি। জিতুকে নাকি তাঁর বাবার মতোই লেগেছে। যেখানে সত্যজিৎ রায়ের মতো এমন কিংবদন্তি পরিচালককে শ্রদ্ধা জানিয়ে তৈরি করা হয়েছে একটি সিনেমা। সেখানে সেই সিনেমা দেখানো হচ্ছে না নন্দনের মতো সরকারি প্রেক্ষাগৃহে।
যে নন্দনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে সত্যজিৎ ( Satyajit Ray)। যে নন্দনের লোগো ডিজাইন করা থেকে শুরু করে উদ্বোধনও করেন সত্যজিৎ রায়। সেখানে তাঁকে সম্মান করে বানানো ছবি পেল না স্থান। এক্ষেত্রে সত্যজিৎ রায়ের ছেলে সন্দীপ রায় ( Sandip Ray) একটি নামি সংবাদসংস্থাকে বলেন, এটা তো একটা অন্য ডিপার্টমেন্ট দেখে এবং তাঁরাই ঠিক করেন কোন ছবিটা নন্দনে দেখানো হবে এবং কোন ছবিটা দেখানো হবে না। ফলত এক্ষেত্রে তারাই ভালো বিষয়টি বলতে পারেন কিন্তু তাঁর মতে এই ছবিটি ( Aparajito) নন্দনে দেখানো উচিত। ছবিটা নন্দনে জমা দেয়া হয়েছিল ৫ই মে সোমবার। এরপর নন্দনের কর্তৃপক্ষ মিত্র চট্টোপাধ্যায়কে ফোন করে ব্যাপারটা জানানো হলে তিনি বলেন যে তিনি ব্যাপারটা দেখছেন। কিন্তু পরে টিকিট বুকিং করার অনলাইন সাইটগুলিতে টিকেট বুকিং করার সময় দেখা হয় সেই তালিকায় ‘অপরাজিত’র নাম নেই।
আরও পড়ুন : একমুখ দাড়ি-গোঁফ নিয়েই শাড়িতে সাজেন ‘বং মুন্ডা, রইল ভাইরাল ছবি

ছবিটা নন্দনে প্রদর্শনের জন্য এক্কেবারেই যোগ্য ছবি। সত্যজিৎ রায়ের ( Satyajit Ray) সাথে নন্দন জড়িয়ে রয়েছে ওতপ্রোতভাবে। সন্দীপ রায় আরও বলেন, নন্দন তৈরি হয়েছে কিসের জন্য? যাতে মধ্যবিত্ত বাঙালিরা ভালো বাংলা সিনেমা তাঁদের সাধ্যের মধ্যে উপভোগ করতে পারেন। সব দর্শকরা তো আর মাল্টিপ্লেক্সে গিয়ে হাজার হাজার টাকা খরচ করে সিনেমা দেখতে পারে না। তাঁর মতে, যে ছবিটা টরন্টো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে গিয়েছে, যে ছবিটা লন্ডন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে গিয়েছে, যে ছবিটা সত্যজিৎ রায়ের ১০০ বছরের জন্মদিন সেলিব্রেট করছে যদি সেই ছবিটা নন্দনে স্থান পাওয়ার যোগ্য না হয় তাহলে কোন ছবি হবে? তিনি বলেন, তিনি রাজনীতির ঠিক বোঝেন না। তিনি একজন বাঙালি, তাঁর কাজ হল বাংলা সিনেমা তৈরি করা। আর যে ছবি বিশ্বের দরবারে বাংলা ছবিকে রিপ্রেজেন্ট করছে যদি সেই ছবি সরকারি হলে স্ক্রীনিং না পায় তাহলে তার থেকে লজ্জার বিষয় আর কিছুই হতে পারে না।
আরও পড়ুন : ম্যাজিক ট্রিকে মগ্ন উরফি! সোশ্যাল মিডিয়াতেই বক্ষদেশ থেকে বার করলেন ৫০০র নোট

তিনি ( Sandip Ray) বলেছেন যে, এই ঘটনা কেন ঘটল তা সত্যিই তাঁর জানা নেই। কিন্তু তিনি সত্যিই ভীষণ অবাক হয়েছেন এ ঘটনায়। ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল শুরু হওয়ার আগেই এই ছবি জমা দেয়া হয়েছিল নন্দনে। ছবিটা দেখে তাঁরা খুশি হয়েছিলেন খুব এবং যে কয়জন ছবিটি দেখে ছিলেন তাঁরা সকলেই ছবিটিকে দেখার জন্য রেকমেন্ড করেছিলেন। তাঁর মতে এবার তো দর্শক বঞ্চিত হচ্ছে এই সিনেমা দেখার থেকে। এছাড়াও ছবির পরিচালক অনিক দত্ত ( Anik Dutta) বলেছেন, এগুলো আমাকে কেন জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে? উনার ছবি নেওয়া হয়নি, ওনাদেরকে ওরা হল দেয়নি। ওদের স্ক্রিনিং কমিটি কিন্তু ছবিটিকে অ্যাপ্রুভ করেছিল। এবং সকলে ওনাকে মেসেজে বলেছিলেন যে ছবিটি সত্যিই খুব ভালো লেগেছে। কিন্তু তারপরও কেন ছবিটাকে নন্দনে প্রদর্শন করা হলো না তা সত্যিই তাঁর জানা নেই। যারা এই ছবিটাকে জায়গা দিল না তাঁদেরকে জিজ্ঞাসা করা উচিত এর আসল কারণ।