আত্মহত্যা নাকি প্ররোচিত খুন, কীভাবে মৃত্যু হল সেলিব্রিটি পোশাক ডিজাইনারের? উঠছে প্রশ্ন

বিগত কয়েক দিন ধরে টলিউড জুড়ে শোনা গিয়েছে একের পর এক মৃত্যু সংবাদ। পরপর আত্মহত্যা করেছে বহু অভিনেত্রীরা। প্রথমে পল্লবী দে, আর তারপর একে একে বিদিশা দে মজুমদার, সরস্বতী দাস, মঞ্জুষা নিয়োগী-র মত বহু উঠতি মডেল অভিনেত্রীরা আত্মহত্যার মাধ্যমে নিজেদের জীবন দিয়েছেন। আর তাদের এই মৃত্যু ঘটনা প্রভাব ফেলেছে সাধারণ মানুষের জনজীবনে। আর এই তালিকায় এবার যুক্ত হলেন জনপ্রিয় ফ্যাশন ডিজাইনার প্রত্যুষা গারিমেলাও ( prathyusha Garimella ) । গতকাল অর্থাৎ শনিবারই গোটা ইন্টারনেট জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে তার মৃত্যু ঘটনা।
শনিবার সেলিব্রিটি ফ্যাশন ডিজাইনার প্রত্যুষা গারিমেলাকে হায়দ্রাবাদে তার বানজারা হিলস অ্যাপার্টমেন্টে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। হায়দ্রাবাদ পুলিশ প্রত্যুষার অ্যাপার্টমেন্টের বাথরুমে তার মৃতদেহ পায়। এছাড়াও তদন্তের সময় তার ঘরে মেলে একটি কার্বন মনোক্সাইডের বোতল। পুলিশের সন্দেহ অনুযায়ী সম্ভবত প্রশ্বাসের সঙ্গে কার্বন মনোঅক্সাইড গ্রহণ করেই আত্মহত্যা করেছেন প্রত্যুষা। তদন্তের মাধ্যমে এও সামনে আসে যে মানসিক অবসাদে নাকি ভুগছিলেন প্রত্যুষা।আপাতত ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসারই অপেক্ষা করছে পুলিশ। ইতিমধ্যে প্রত্যুষার মৃত্যু সংবাদ তার পরিবার পরিজনদের জানানো হয়েছে।
বিনোদন ক্ষেত্রে, বিশেষত টলিউডে একজন নামকরা সেলিব্রিটি ডিজাইনার ছিলেন প্রত্যুষা। ২০১৩ সাল থেকে তিনি ‘প্রত্যুষা গারিমেলা’ নামে নিজের লেবেল শুরু করেছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পড়াশোনা শেষ করে তিনি ভারতে ইন্ডাস্ট্রিতে যুক্ত হয়েছিলেন। টলিউড এবং বলিউড জুড়ে প্রত্যুষা অসংখ্য সেলিব্রিটিদের জন্য পোশাক ডিজাইন করেছিলেন। পূর্বেও তিনি কাজল আগরওয়াল, হুমা কুরেশি, রাভিনা ট্যান্ডন, ভূমি পেডনেকার, পরিণীতি চোপড়া, মাধুরী দীক্ষিত, জুহি চাওলা, গওহর খান এবং নেহা ধুপিয়ার মত বিখ্যাত তারকাদের জন্য পোশাক ডিজাইন করেছিলেন।
৩৫ বছর বয়সী এই ফ্যাশন ডিজাইনার হায়দ্রাবাদের বানজারা হিলস-এর বাসিন্দা ছিলেন। জানা যায় গতকাল অর্থাৎ শনিবার গারিমেলা নিরাপত্তা রক্ষীদের ডাকে সাড়া দেননি। আর এরপরই তাদের মনে ব্যাপারটি নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধে। তাই সে নিরাপত্তা রক্ষীরা ঘটনাটি পুলিশকে জানায়। পুলিশ এসে প্রত্যুষার ঘরের দরজা ভাঙ্গে এবং তাকে তার অ্যাপার্টমেন্টের বাথরুমের ভিতরে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। উদ্ধার করার পর তার মৃতদেহ একটি সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। এবং সেখান থেকে পরে ময়নাতদন্তের জন্য হায়দ্রাবাদের ওসমানিয়া হাসপাতালে পাঠানো হয়।
প্রসঙ্গত টলিউড জুড়ে এরূপ একের পর এক মৃত্যু ঘটতে থাকায় টলিপাড়ায় মানসিক সচেতনতা বাড়াতে এক প্রকার তৎপর হল পশ্চিমবঙ্গের মহিলা কমিশন। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিল। এছাড়া কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানা গেছে। বিনোদন জগত ছাড়াও অন্যান্য মহিলাদের এই পরিষেবা দেওয়া হবে। এই পরিষেবার জন্য একটি ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইন নম্বরেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়।