নিজে দাঁড়িয়ে থেকে পান্তুয়া তৈরি করাতেন মহানায়ক, জানেন তাঁর বাড়ির লক্ষ্মীপুজোর ইতিহাস

মহানায়ক উত্তমকুমারের বাড়ির লক্ষ্মীপূজো কলকাতা শহরে জনপ্রিয়। সেলিব্রেটি বলে নন,পুজোর রীতি নজর কাড়া। ষোলো-আনা রীতি মেনেই পুজো হয় প্রতি বছর।

কলকাতা: সেলিব্রেটি বাড়ির পুজো মানে একটা জমজমাটি ব্যাপার। আর সেটা যদি মহানায়ক উত্তম কুমারের বাড়ি হয়, তাহলে তো কোনও কথাই হবেনা। মহানায়ক উত্তমকুমারের বাড়ির লক্ষ্মীপুজো কলকাতা শহরে জনপ্রিয়। সেলিব্রেটি বলে নন, ষোলো-আনা রীতি মেনেই পুজো হয় প্রতি বছর। থাকে স্ত্রী গৌরীদেবীর আদলে প্রতিমার মুখ এবং সেটা বেনারসি ও সোনার গয়নায় সাজানো, গঙ্গাস্নান সেরে লালপাড়, সাদা শাড়ি পরিয়ে দেবীকে নিয়ে আসা এবং বরণ করে ঘরে তোলার পরে সাজিয়ে তোলা। এছাড়াও থাকে বিসর্জনের আগে লাল-সাদা ঢাকাই শাড়ি পরিয়ে বিসর্জন। বিশেষ চমক থাকতো, মহানায়কের নিজে দাঁড়িয়ে থেকে গরম পান্তুয়া তৈরি করা।

এখানেই শেষ নয়, মহানায়কের বাড়ির লক্ষ্মীপূজার দিন বিশেষ উপহার থাকতো ছোটদের জন্য। সেটি হল বড় পর্দা টাঙিয়ে দুটি করে ছবি দেখানো। যেহেতু সেই সময় সিনেমা হলে ঢোকার অনুমতি কারোর থাকতোনা, তাই তিনি সবকিছু ব্যবস্থা করে দিতেন বড়দের এবং ছোটদের জন্য। সবচেয়ে মজাদার ব্যাপার, তাঁর ছবি দেখতে দেখতে পরিবারের সদস্যরা ভুলেই যেতেন যে মহানায়ক তাঁদেরই পরিবারের একজন। বিশেষ কিছু দৃশ্য বা গানে সকলের উন্মাদনা বেশ উপভোগ করতেন মহানায়ক। জানা গিয়েছে, তাঁর বাড়ির কার্নিশে নাকি লক্ষ্মীপ্যাঁচা এসে বসে থাকতো এবং তারপরেই সাফল্য পেতে শুরু করেন তিনি। এবং এরপরই শুরু হয় তাঁর বাড়ির লক্ষ্মীপুজো।

লক্ষ্মীপূজা এলেই মহানায়কের পরিবারের সমস্ত সদস্যের মধ্যে কাজ করে একটি আলাদা আবেগ। এই সম্বন্ধে মহানায়কের নাতি, তথা টলিউড নায়ক গৌরব চট্টোপাধ্যায় জানান, “ঐতিহ্য ধরে রাখাই আমাদের কর্তব্য। সেটা ভাঙ্গার কোনও প্রশ্নই আসেনা। আগে যে নিয়ম ছিল, এখনও তাই আছে। শুধু আর আগের মত পর্দা টাঙিয়ে ছবি দেখানো হয়না।“

Tollywood,Festival,Laxmi Puja,Celebration

এই পুজোকে ঘিরে গৌরব পত্নী দেবলীনার বক্তব্য, “মহানায়ক উত্তমকুমারের বাড়ির লক্ষ্মীপূজো বাঙালির কাছে একটা আবেগ। ছোটবেলা থেকেই পুজোর সম্বন্ধে অনেক কিছু শুনেছি। আজ সেই পুজোর আমি একটা অংশ, এটা ভেবেই খুব খুশি হচ্ছে। আমি সত্যিই খুব লাকি”।

মহানায়কের নাতনি নবমীতা চট্টোপাধ্যায় এই সম্বন্ধে বলেন, “ছোটবেলা থেকে এই পুজোয় কত আনন্দ করতাম। এখন সব দায়িত্ব আমার কাঁধে। সুতরাং আনন্দর সাথে একটা ভয়ও কাজ করে যে সবকিছু ঠিকঠাক করতে পারবো কিনা”।




Leave a Reply

Back to top button