Mir Afsar Ali : ঠাট্টা-ইয়ার্কির মাঝে হাসতে হাসতেই বিদায়! জেনে নিন হাসির রাজার জীবনপাঠ

রবিবারের দুপুরগুলোর এবার থেকে ভীষণ মনখারাপ। কারণটা কারোর অজানা নয়! সানডে সাসপেন্সে আর শোনা যাবে না মীরের কন্ঠ। প্রায় দু’ দশকের বেশি সময় ধরে মানুষ মীর আফসর আলি ওরফে মীরের কন্ঠের যাদুতে মুগ্ধ হয়ে আছেন। শহরবাসীর ঘুম ভাঙে যার গলা শুনে তিনি সকালম্যান মীর। গ্রাম বাংলার মাঠ থেকে কলকাতার ট্রাফিক জ্যাম,ময়দান থেকে শিয়ালদা চত্বর, কলেজের পড়ুয়া থেকে সকালের অফিস যাত্রীরা রেডিওতে সকলেই একবাক্যে চেনেন মীরকে। দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে রেডিও তথা রেডিও মীর্চির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছেন তিনি। কিন্তু রথের সকালে মির্চির রথের রশি ছিঁড়লেন মীর। নিজের ফেসবুক পোস্টে জানালেন মির্চি ছাড়ছেন তিনি। কার্যত রথের দিন আকাশের সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যেক রেডিও প্রেমীরও মুখভার। তবে পরবর্তী গন্তব্য কোথায় এই নিয়েই জড়ো হয়েছে হাজার প্রশ্ন?
সালটা ১৯৯৪। আকাশবাণীর সঞ্চালক হিসেবে যোগদান।১৯৯৮ তে রেডিও মির্চিতে যোগ দেন। সকালম্যান মীরকে যেমন সবাই চেনে তেমনই মীরের সিগনেচার পোগ্রাম ‘সানডে সাসপেন্স’ বাঙালির আবেগের অপর নাম।সানডে সাসপেন্সের ধারাভাষ্য, ভয়েস গ্রাফ, এক একটা চরিত্র অনায়াসে ফুটিয়ে তোলার আশ্চর্য ক্ষমতা ছিল মীরের। মীর আর মির্চির ম্যাজিকে টানা ২৭ বছর চলল সেই বিজয় রথ। শুধুমাত্র রেডিওতেই আবদ্ধ রাখেননি নিজেকে। দূরদর্শনে সংবাদ পাঠ থেকেই কেরিয়ার শুরু করেছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে হাঁউ মাউ খাও, বেটাবেটির লড়াই আর মীরাক্কেলের মাধ্যমে মানুষকে দিয়েছেন অনাবিল আনন্দ। একাধিক বাংলা সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। কিন্তু সব খ্যাতির উর্দ্ধে ছিল সানডে সাসপেন্সের মীর। তাই মীরের সাথে রেডিও মির্চির সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ায় রীতিমতো উত্তাল সোস্যাল মিডিয়া। স্বস্তিকা মুখার্জী,আর জে নিলাঞ্জন থেকে অন্যান্য সব আরজেরা তাদের ক্যাপটেনকে ছেড়ে বিষণ্ন। বিষণ্ণ প্রত্যেকটি সাধারণ মানুষ। কেউ মেনে নিতে পারছেন না এই বিচ্ছেদ।
মীরের লেখাতেও মন খারাপের ছাপ স্পষ্ট। আকাশবাণীর প্রথম ছবিটা শেয়ার করে নস্টালজিয়ায় ভেসে গিয়েছেন। বিবরণে লিখেছেন, ৬ অগাস্ট টাইমস এফএম।’ পাশাপাশি রেডিও অনুরাগীদের ধন্যবাদ জানিয়ে লিখেছেন, ‘আমাকে শোনার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভালোবাসা। তবে মির্চি ছেড়েছি। রেডিও নয়। কষ্ট হচ্ছে একটু। ওই ৯৮.৩% এর মতন। গল্পের পরবর্তী অংশ ব্রেকের পর।’গল্পের পরবর্তী অংশ নিয়েই তৈরি হয়েছে জল্পনা। মির্চি ছেড়েছেন, রেডিও নয়! এই কথার মধ্যে কী ইঙ্গিত দিতে চাইলেন তিনি। তবে কি অন্য কোনো চ্যানেলে নতুন অবতারে পাওয়া যাবে তাকে? নাকি নিজেই খুলবেন নতুন রেডিও চ্যানেল? জল্পনা রেখে গেলেন সাসপেন্সের নায়ক।