হটাৎই আগুন ঘরভর্তি পড়ুয়া সহ স্কুলে, দগ্ধ হয়ে শেষ হল ২৬টি শিশুর প্রাণ
স্কুলে ক্লাস চলছিল, হটাৎই এক ছাত্রী দেখতে পায়, স্কুলের একটি দিক পুড়তে শুরু করেছে আগুনে (Fire)। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায় আগুন থকে বাচার লড়াই। কিন্তু অবশেষে যখন আগুন নেভে তখন শুধু পরে ছিল ঝলসে যাওয়া শিশুদের মৃতদেহ। খড় – বিচুলি দিয়ে গড়া সেই ক্লাসঘর থেকে বেরতে পারেনি একটিও প্রাণ।
বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলির তালিকায় নাম রয়েছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারের (Niger)। আর্থিক ভাবে সেই দেশ এতটাই দুর্বল যে বাচ্চাদের জন্য স্কুল তৈরি করার সামর্থ্যও তাদের নেই। হাতে গোনা কয়েকটা স্কুল রয়েছে। এদিকে স্কুল ঘর পাকা করার কথা তো ভাবতেই পারে না সে দেশের প্রশাসন। তবু শিক্ষার আলো থেকে দেশ যাতে কোনও ভাবেই পুরোপুরি বঞ্চিত না হয়, সে কারণে খড়, কাঠ, বিচুলি দিয়ে স্কুল ঘর তৈরি করে সেখানেই পড়ানো হয় বাচ্চাদের। মাটিতেই বসে পাঠ নেয় ছোট্ট ছেলে-মেয়েরা। ফলে প্রায়শই সামনে আসে স্কুলগুলিতে আগুন লাগার খবর। কিন্তু আগুন লাগলেও এভাবে যে সারি সারি বাচ্চা পুড়ে শেষ হয়ে যাবে, এমন কথা কেউ ভাবতেও পারেনি। মঙ্গলবারই সেই শিশুদের উদ্দেশ্যে মারাডিতে তিনদিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে।
নাইজার দেশের মারাদি শহরে এমনই এক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে এসেছিল একদল খুদে পড়ুয়া। সেই স্কুলঘরেই ঝলসে প্রাণ গেল ২৬ জনের। প্রতিটি শিশুরই বয়স ৫ থেকে ৬ বছরের মধ্যে। জানা গিয়েছে, খড়-বিচুলি দিয়ে তৈরি করা ছিল সেই ক্লাসরুম। সেখানেই যে কোনও কারনে আগুন লেগে যায়। তখন স্কুল ঘরের ভিতরে ছিল অফুরন্ত উল্লাসে ভরা কচিকাচার দল। কিন্তু স্ময়ের পরিহাসে, দগ্ধ হয়ে যায় ২৬টি তরতাজা ফুলের মতো প্রাণ। মারাদি শহরের মেয়র চাইবো আবুবাকার জানান, “এখনও অবধি আমরা ২৬ জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। ১৩ জন গুরুতর আহত হয়েছে। এর মধ্যে চারজনের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক।”
এর আগে গত এপ্রিল মাসে ভয়াবহ আগুন লেগেছিল নাইজারের রাজধানী নিয়ামেতে। সেখানেও ২০ জন শিশু পুড়ে মারা যায়। দেশের সরকার তাদের শোকপ্রস্তাবে জানিয়েছে, ‘আবার এক ভয়ঙ্কর ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল। নাইজারের মানুষ কাঁদছে, দুঃখ পাচ্ছে। এবার এই দেশ থেকে খড়-কাঠের ক্লাসরুম নিষিদ্ধ করতেই হবে।’ যদিও নাইজারের শিক্ষক সংগঠনের দাবি, নিয়মিত আগুন লাগার ঘটনার পরই সতর্ক করা হয়েছিল স্কুলগুলিকে তাও সরকার কোনোরকম তোয়াক্কা করেনি। তবে যাক হোক না কেন, নাইজারের এই ঘটনায় শোকাহত সমস্ত বিশ্ব।