Monster Building : সিনেমা নয় বাস্তবেই ‘দৈত্য’, যেখানে একসাথে থাকে দশ হাজারেরও বেশি মানুষ
হংকং-এর (Hong Kong) কোয়ারি বে-র ইয়ায়ু মান স্ট্রিটের একটি বিশাল জায়গা জুড়ে অবস্থান করে “দৈত্য” অর্থাৎ “মনস্টার বিল্ডিং (Monster Building)”। পাঁচটি আবাসনের, ১৮ টি তল এবং ২২৩৪ টি ফ্ল্যাটের মোট দশ হাজার বাসিন্দা বাস করেন এখানে। মান স্ট্রিটের ২ নম্বর থেকে ৩২ নম্বর জায়গা এই “দৈত্য”-এর দখলে। যেখানে ঠাসাঠাসি করে দাঁড়িয়ে রয়েছে হাজার দুয়েকেরও বেশি ঘুড়ি, যা দেখলে মনে হয় ওরা একে অন্যকে কনুই দিয়ে সরিয়ে নিজের জায়গা করে নিতে চাইছে।
মাটি থেকে সটান সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এই আবাসনটি দেখতে এক বিশালাকার দৈত্যের মতন। যার সারা গায়ে ঘিজিমিজি আলো। তবে কেবল নামটুকু ছাড়া ভূত-প্রেত-দৈত্য-দানবের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই আবাসনের। কোনো সৌধ নয় এটি, “সুন্দর” তো মোটেই নয় হংকং-এর কংক্রিটের জঙ্গল (Jungle of Concrete)। তবু চলচ্চিত্র থেকে ফটোগ্রাফার, হলিউড থেকে ইনস্টাগ্রাম সব জায়গাতেই খুবই জনপ্রিয় এই “মনস্টার” বিল্ডিং।
দুটি জনপ্রিয় কল্পবিজ্ঞানের সিনেমা “গোস্ট ইন দ্য শেল” এবং “ট্রান্সফর্মারস : এজ অফ এক্সটিনশন” এর শ্যুটিং হয়েছিল এই “মনস্টার” বিল্ডিংয়ে। এছাড়া “ল্যাবেরিন্থ” এবং “কেভ মি ইন” মিউজিক ভিডিও দুটির দৃশ্যায়ন করা হয়েছিল এই বাড়িটিতেই। ভূত না হলেও, রহস্যকে জীবন্ত করতে বহুবার বহু চলচ্চিত্রকার এই দৈত্যের নিকট নিকটস্থ হয়েছেন।
শুধু চলচ্চিত্রকার বলেই না, সাধারণ পর্যটক বা ফটোগ্রাফারদের কাছেও এই বাড়ির দৃশ্যের জনপ্রিয়তা এতটাই যে এই বাড়ির বাসিন্দারা বিরক্ত হয়ে বাড়ির বাইরে নোটিশ বোর্ড টাঙিয়ে তাতে লিখেছেন, “ছবি তুলতে কেউ বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করবেন না।”
ষাটের দশকে জন্ম এই দৈত্য বাড়ি দেখতে অনেকটা ইংরাজী ‘ই’ অক্ষরের মতন। হংকং-এর স্বল্প ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষদের ঘরের ব্যবস্থা করে দিতে সরকারের ভর্তুকিতে তৈরী করা হয়েছিল এই বাড়িটি। তবে ১৯৭২ সালে বাড়িটি বিক্রি হয়ে যায় এবং পাঁচটি আলাদা আলাদা ব্লকে ভেঙে দেওয়া হয়। এই পাঁচটি ব্লকের নাম ছিল ফুক সেয়ং, মন্তানে ম্যান ম্যানসন, ওসিয়নিক ম্যানসন, ইক সেয়ং বিল্ডিং এবং ইক ফ্যাট বিল্ডিং। যার মধ্যে সবচেয়ে উঁচু ছিল ওসিয়নিক বিল্ডিং।
অফিসিয়ালি এই “মনস্টার” বিল্ডিংয়ের যদিওবা কোনো অস্তিত্ব নেই। এই বিল্ডিংয়ের পূর্ব নাম ছিল বাকগা সেনজুন। তবে বর্তমানে সরকারি নথিতে এটি পাঁচটি আবাসনের একটি বিল্ডিং। হংকং-এর মানুষজন এই বিল্ডিংয়ের নাম দিয়েছেন “মনস্টার বিল্ডিং”, যেই নাম আজ বিশ্ব বিখ্যাত।