“গঙ্গা মরেছে, ইলিশও মরছে”, বাংলা থেকে মুখ ঘুরিয়ে বাংলাদেশে উঠছে ইলিশ! কেন এই সিদ্ধান্ত মৎস্যদলের?

প্রায় শেষের পথে একুশের বর্ষা। এদিকে ভাগীরথীর মোহনায় এখনও দেখা নেই ইলিশের। মৎস্যজীবীদের মতে, পনেরো দিনে গড়ে ৪০-৫০টি মাছ উঠেছে একটি জালে। সাগরদ্বীপের এক মৎস্যজীবীর গলায় ঝড়ে পড়েছে একরাশ নিরাশা। “মা গঙ্গা শস্যহীন হয়ে পড়েছে গো”, হাহাকার জেলের।

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক কৌশিক প্রামাণিক স্পষ্ট জানিয়েছেন, “নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নির্বিচারে শিকার করা হয়েছে খোকা ইলিশ। একটু বেশি লাভের আশায় যথেচ্ছ ছোটো ইলিশ ধরার ফলেই এই আকাল। এই কাজ করে যে আদতে তাঁরা নিজেদেরই স্থায়ী বিপদ ডেকে এনেছেন,তা এখন বুঝছেন ওঁরা।”

TBC,টিবিসি,বাংলা,পশ্চিমবঙ্গ,ইলিশ মাছ,ইলিশ,বাংলাদেশ,মায়ানমার,বর্মা,ইলিশের অভাব,West Bengal,Hisa Fish,Lack,Bangladesh,Myanmar,পদ্মা,সিতুয়ে

মৎস্যবিজ্ঞানীদের মত, ছোটো ইলিশ শিকারের বাড়বাড়ন্ত দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব দেশেই বিদ্যমান। যদিও এরপরেও বাংলাদেশ বা মায়ানমারে যথেষ্ট পরিমাণে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। আসলে ভাগীরথীর নাব্যতা কমে যাওয়ার ফলেই যে ঢুকছে না ইলিশের ঝাঁক, তা জানিয়েছেন অধ্যাপক প্রামাণিক। বিজ্ঞানীদের কথায়, ইলিশ মাছের প্রজনন ঋতু বর্ষাকাল হলেও তারা সাধারণত দু’বার নদীতে আসে। বর্ষাকাল ছাড়া এপ্রিল-মের গ্রীষ্মকালেও তারা আসে। যদিও তখন নদীর জল প্রবল উষ্ণ থাকায় জলের গভীরে থাকে রুপোলি ঝাঁক। স্বভাবতই এতে সেইসময়ে শিকারিদের হাত থেকে রেহাই পেয়ে যায় ইলিশ।

TBC,টিবিসি,বাংলা,পশ্চিমবঙ্গ,ইলিশ মাছ,ইলিশ,বাংলাদেশ,মায়ানমার,বর্মা,ইলিশের অভাব,West Bengal,Hisa Fish,Lack,Bangladesh,Myanmar,পদ্মা,সিতুয়ে

যদিও বর্তমানে ভাগীরথীর গভীরতা মারাত্মক কমে যাওয়ায় বঙ্গে আর প্রবেশ করতে চাইছে না তারা। মুখ ঘুরিয়ে তারা চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে বাংলাদেশ বা বর্মার দিকে। ভাগীরথীর ন্যায় পদ্মা বা সিতুয়ে নদীর মোহনা অগভীর হয়ে পড়েনি, ফলে গ্রীষ্ম হোক বা বর্ষা, বাংলা ছেড়ে ইলিশের দল পাড়ি জমাচ্ছে অন্য দেশে।

গঙ্গার নাব্যতা থেকে দূষণ নিয়ন্ত্রণ, সকল ক্ষেত্রেই গত ৩০ বছরে লাগাতার নানা প্রকল্পনিয়েছে কেন্দ্র। যদিও এতে কাজের কাজ যে কিছুই হয়নি, তা জানাচ্ছেন সমাজকর্মীরা। জনসাধারণের অবহেলায় ভাগীরথীর জল এখন বিষ। অধ্যাপক প্রামাণিকের কথায়, “গঙ্গা মরেছে, ইলিশও মরেছে।” ফলে গেল গেল রব না তুলে আদতে যে নদীর সংস্কারের দিকে নজর দেওয়া আশু প্রয়োজন, তা স্পষ্ট করেছেন মৎস্যবিজ্ঞানীরা।

 

 




Back to top button