WW3: বিশ্বের আকাশে বিতর্কের কালো মেঘ, দ্বন্দ্বের স্ফুলিঙ্গেই কি বাঁধবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দাবানল?

অস্ট্রিয়ার যুবরাজকে খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই বিশ্ব জুড়ে প্রথম দ্বন্দ্বের (First World War) সূত্রপাত। যা পরবর্তীকালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ নামেই ইতিহাসের পাতায় নিজের জায়গা করে নেয়। ঠিক এমনই ভাবে আবার হিটলারের জাত্যাভিমান ও সাম্রাজ্যবাদকে কেন্দ্র করেই গোটা দুনিয়ায় বেজে উঠেছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (Second World War) নির্ঘন্ট। এই দুই বিশ্বযুদ্ধের মধ্যে দিয়েই ধরিত্রীবাসীর চোখে ভেসে উঠেছিল মহাপ্রলয়। ইতিহাসবিদরা (Historians) আগাগোড়াই এই সময়কে ‘অন্ধকার যুগ’ বলেই নামাঙ্কিত করে এসেছে। ইতিহাসের পাতাতেও আজও লেখা সেই প্রলয়ের কথা। জানে সকলেই, কিন্তু জ্ঞান থাকলেও সেই প্রলয়ের দিকেই যেন আমরা আবার ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছি।

করোনা (Corona Pandemic) পর্ব শুরুর পর থেকে আন্তর্জাতিক স্তরে নানা বিতর্ক এই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের (Third World War) দরজাতেই বারংবার কড়া নেড়ে চলেছে। পরিস্থিতি হয় তো  এখনও হাতের মুঠোয়, তবে কোনও ঝড়ের আগে পরিবেশ যেমন শান্ত, নির্লিপ্ত হয়ে ওঠে আন্তর্জাতিক মহলে ঠিক যেন সেই  অবস্থাই। বহু বিশেষজ্ঞের মতেই, হয় তো আসন্ন কয়েক বছরের মধ্যেই এই বিশ্ব ফের মুখোমুখি হতে পারে এক বিরাট যুদ্ধের। আর বর্তমানে চলা প্রতিটি বিতর্কই সেই যুদ্ধের আগুনের দিকেই ঢেলে চলেছে বিশ্ববাসীদের। 

taliban1

গত বছর কাবুলের পরাজয় (Fall Of Kabul)। রাগে, ক্ষোভে দিন কাটছে সে দেশের বর্তমান বাসিন্দাদের। তালিবানদের (Taliban) শাসন গিয়ে প্রায় স্বাধীনতা হারিয়েছে মহিলারা। মাথায় চিন্তা একটাই কীভাবেই বা এই বর্বর অত্যাচারীদের থেকে জীবন বাঁচাবে তাঁরা। এই পরিস্থিতি সেদেশের বাসিন্দাদের মধ্যে উঠেছে আমেরিকা বিরোধী (Anti-USA) সুর। তালিবানদের আসার আগেই মার্কিন সিপাহিদের পলায়ন সবই তাঁদের ষড়যন্ত্রে ফেলে দেওয়ার উপায়, এমনটাই বলছেন ওই দেশের বহু ঘরবন্দি নারীরা। তবে মার্কিন মুলুকের বিরুদ্ধে শুধুই আফগানিস্তানের বাসিন্দাদের ক্ষোভ বেড়েছে এমনটা মোটেই নয়। মাথায় ক্রোধের পারদ হু হু করে চড়ছে তালিবানি শাসকদেরও। কিছুদিন আগেই ৯/১১ কান্ডে (9/11 Attack) জড়িত আলকায়েদা প্রধান জাওয়াহিরিকে হত্যা করেছে পেন্টাগন। সেই নিয়েও তালিবানদের অন্দরে সৃষ্টি হয়েছে চাপা ক্ষোভ। 

russia ukraine war20

এদিকে আবার রুশ-ইউক্রেনের (Russia-Ukraine) যুদ্ধ বিশ্ব জুড়ে প্রতিটি দেশকে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন করেছে। যুদ্ধের মাঝে ইউক্রেনকে বিপদে ফেলে ন্যাটো ঠুঁটো জগন্নাথের রূপ ধারণ। রাশিয়া আগ্রাসন। পুতিনের পুরানো সোভিয়েত ইউনিয়ন তৈরির মনোস্কামনা জাহির ও  বিশ্ব তৈল ব্যবস্থায়  মধ্য প্রাচ্যকে পিছনে ফেলে একচেটিয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠা। প্রতিটি ঘটনাই যেন দুনিয়া কাঁপানো এক যুদ্ধের ডাক দিয়ে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে দুনিয়া যে ফের এক ঠান্ডা লড়াইয়ের মধ্যে প্রবেশ করেছে তা সন্দেহাতীত। রাশিয়ার এহেন আগ্রাসন চাপ ফেলছে মার্কিন মুলুকের মাথায়। তার উপর আবার রাশিয়ান লেখক আলেকজান্ডার ডুগিনের (Alexander Dugin) মেয়ে দারিয়ার হত্যাকান্ড ন্যাটো সদস্য ইউক্রেনকে ফের চাপের মুখে ফেলে দিয়েছে।  

china usa

উল্লেখ্য, শুধুই রাশিয়ার আগ্রাসন নয়। বিশ্ব জুড়ে চিনের সাম্রাজ্যবাদ প্রতিষ্ঠার লড়াইও চিন্তায় ফেলছে শি জিং পিং-এর প্রতিবেশীদের। ভারতের অরুণাচল প্রদেশে ডেরা গঠন কিংবা তাইওয়ানকে নিজেদের দেশের অন্তর্গত বলে দাবি করা। আবার চিন-তাইওয়ান বিতর্কের মাঝেই সেই ছোট্ট আমেরিকার কংগ্রেসের নিম্ন কক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পালোসির আগমন। তারপর শি জিং পিং’য়ের চটে যাওয়া। পাশাপাশি, বিশ্ব জুড়ে চিনের ঋণের জাল বিছিয়ে দেওয়া, সবই যেন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের চোখ রাঙানিকেই সুনিশ্চিত করছে। তবে এই সকল প্রধান কিছু কারণের পাশাপাশিও আমেরিকা-ইরান বিতর্ক, ইসরাল-প্যালেস্টাইন বিতর্ক, মায়ানমারে সেনারাজ প্রতিটি ঘটনাই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দাবানলে স্ফুলিঙ্গের কাজ করছে। 




Back to top button