ছিলেন মন্ত্রী, হয়ে গেলেন ডেলিভারি বয়! এই আফগান নেতার গল্প কাঁদিয়ে দেবে আপনাকেও
ইতিমধ্যেই গোটা আফগানিস্তান চলে গিয়েছে তালিবানদের দখলে। আর তারপরেই কয়েকদিন আগেই, আফগানিস্তানের প্রাক্তন সম্প্রসারণ ও যোগযোগ মন্ত্রী সায়েদ সাদাতের ছবি নেটমাধ্যমে সারা ফেলে দেয়। পূর্ব জার্মানির লেইপজিগ শহরে তোলা এই ছবিতে প্রাক্তন মন্ত্রীকে এখন সেই শহরের এক ফাস্ট ফুড চেন কোম্পানি লিফেরান্ড তে ডেলিভারি বয়ের কাজ করতে দেখা যায়। এই ছবি ভাইরাল হতেই হৈচৈ পরে যায় নেটিজেনদের মধ্যে।
এদিকে বর্তমানে তালিবানি পুর্নজাগরণ দেখা গেলেও আফগানিস্তানে বরাবরই রয়েছে সমস্যার শিখরে। আর সেই সমস্যাদীর্ণ দেশ ছেড়ে নতুন করে জীবন শুরু করার তাগিদে ২০১৮ সালে পরিবার সমেত নিজের দেশ ছেড়ে সাদাত পারি দেন সুদূর জার্মানির উদ্দেশ্যে। “আফগানিস্তানে এই চাকরির কথা শুনে অনেকেই বিদ্রুপ করেছেন আমাকে নিয়ে, কিন্তু আমি মনে করি কেনো কাজ ছোটো হয়না, নিজের আত্মসম্মান বোধ বাঁচিয়ে রেখে, নিজের পরিবারের খেয়াল রাখছি। এতে কোনও ভুল নেই”, বলেন ৪৯ বছর বয়সী এই প্রাক্তন আফগান মন্ত্রী।
শিক্ষাসূত্রে, আইটি ও টেলিকমুনিকেশনে ডিগ্রী ধরি সাদাতের নতুন জীবন তবে কিন্তু মোটেই মসৃন ছিল না, জার্মান ভাষা না জানার দরুন ঠাই পায়নি সে কোনো তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় , অগত্যা শেষ অবধি নিজের এবং সংসারের পেট কচলানোর জন্যে বেছে নেন এই ডেলিভারি বয়ের এর চাকরি। তবু বেঁচে থাকার অদম্য ইচ্ছাতেই আবার করে এই বয়সে নতুন ভাষা শিখছেন সাদাত। বিকেলের ৬ ঘন্টার শিফট শেষ হওয়ার সাথে সাথে চলে যান জার্মান ভাষার ক্লাসে। জার্মান নাগরিত্বর পাশা পাশি ব্রিটিশ নাগরিকত্বও নিয়ে রেখেছেন উনি।
” জীবনে কোনোদিন সাইকেল চালানোর অভ্যেস ছিল না, তবে এইখানে এসে শিখেছি। প্রথম কয়েকটা দিন একটু কষ্ট হয়েছিল ঠিকই, তবে এখন আস্তে আস্তে ঘুচিয়ে নিচ্ছি সমস্তটা”, জানান এই ভাইরাল আফগান মন্ত্রী। এদিকে আফগানিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থান দেখে আশঙ্কার ভাঁজ পড়েছে সকলের মনে। এর মধ্যে আফগান শরণার্থীরা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এসে পৌঁছেছে। বাড়ছে উদ্বাস্তু সমস্যা আর বেকারত্ব। এরই মধ্যে হয়তো সায়েদ সাদাতের মতো হাজার হাজার আফগান শরণার্থী প্রবেশ করবে ইউরোপের দেশগুলিতে, একটা উন্নত মানের জীবনের আশায়, মৌলিক মানবাধিকারের আশায় , সেই সব পরীক্ষায় কিভাবে উত্তীর্ণ হবে এই দেশ গুলি, সেটাই এখন দেখার বিষয়।