তালিব-তাণ্ডব এড়িয়ে দেশে ফিরছে নিপীড়িতের দল! এই ইনস্টা স্টারের হাত ধরেই বাঁচছে হাজার হাজার মানুষ
আগামী ৩১শে অগস্ট আফগানভূমি ছেড়ে নিজ দেশে পাড়ি দেবে মার্কিন সেনাবাহিনী। ইতিমধ্যেই তালিবানের দেশ ছেড়ে দেশে ফিরেছে ব্রিটিশবাহিনী। স্বভাবতই দেশে ছেড়ে যাওয়া মার্কিন অস্ত্র ভাণ্ডার নিয়ে যে কী করতে পারে জেহাদিরা, তা ভেবেই শিহরিত আফগানরা। এমতাবস্থায় আকুল আফগানিস্তানবাসীর পাশে অপ্রত্যাশিতভাবেই এসে দাঁড়িয়েছে ইনস্টাগ্রাম ‘ইনফ্লুয়েন্সার’ ক্যুয়েন্টিন কোয়ারান্টিনো।
কোভিড টিকাকরণের সম্পর্কে বুদ্ধিমত্তায় ভরা নানাবিধ কৌতুকময় মিম বানিয়ে ইনস্টাগ্রামে বেশ পরিচিত ক্যুয়েন্টিন। নিউ ইয়র্কবাসী বছর পঁচিশের টমি মার্কাসের সোশ্যাল নাম ক্যুয়েন্টিন। ফলোয়ারদের সাহায্যার্থে মাত্র ৭দিনে প্রায় ৭০লক্ষ মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছে এই ইনস্টা-তারকা! তালিবানদের চোখরাঙানি সহ্য করেছেন, এমন নাগরিকদের এই অর্থের মাধ্যমে উদ্ধার করেছেন ক্যুয়েন্টিন।
ক্যুয়েন্টিনের উদ্যোগে বুধবার ‘অপারেশন ফ্লাইঅ্যাওয়ে’-র আওতায় একটি প্রাইভেট বিমানে ভীত আফগানরা উড়ে আসেন উগান্ডায়। ইনস্টাগ্রাম মারফত নিজের ৮.৩২ লক্ষ ফলোয়ারের কাছে আবেদন করায় প্রায় ১.২১ লক্ষ মানুষ অর্থ সাহায্য পাঠান। “তাঁরা যে আমাকে বিশ্বাস করে আমার ডাকে সাড়া দিয়েছেন, এটা কল্পনাতীত”, অভিভূত ক্যুয়েন্টিন। জানা যাচ্ছে, সারায়া ইন্টারন্যাশনাল ও রকফেলার ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় এই অপারেশন সফল হয়।
সদিচ্ছা থাকার পরেও কূটনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত কারণে দেশের নাগরিকদের সময়ে দেশে ফেরাতে পারেনি বহু দেশ। এমতাবস্থায় অপারেশন ফ্লাইঅ্যাওয়ের সাফল্য ঘিরে ছিল নানাবিধ প্রশ্ন। “আমাদের পরস্পরবিরোধী রাজনৈতিক সত্ত্বাকে সরিয়ে রেখে যে আমরা এই কর্মযজ্ঞে একত্রিত হতে পেরেছি, এতে মানবতার উপর পুনরায় বিশ্বাস ফিরে এল”, মত মার্কিন তরুণের। প্রায় ৩০০ আফগানকে বিমানে উড়িয়ে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কাস।
অপারেশনের বিষয়ে সরাসরি মুখ না খুললেও মার্কিন নাগরিকদের এহেন সদর্থক ভূমিকার বিষয়ে বেশ ইতিবাচকই দেখিয়েছে মার্কিন বিদেশমন্ত্রককে। যদিও এই কর্মযজ্ঞের সত্যতা সম্বন্ধে মন্তব্য করতে চায়নি ওয়াশিংটন। সঠিক তথ্যপ্রমাণ থাকা সত্ত্বেও বিমান মারফত ফেরানো যায়নি নাগরিকদের, কাবুল বিমানবন্দরে বাধ্য হয়ে আটক বহু মানুষ, অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার তরফে বারংবার দাবি করা হয়েছে এমনটাই। এত কম সময়ে এতজন আফগানকে সীমানা পার করার বিষয়ে স্বভাবতই উৎফুল্ল দেখিয়েছে সায়ারা ইন্টারন্যাশনালের সিইও স্কট শাদিয়ানকে।
এরই মধ্যে মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের আশঙ্কাকে সত্যি করে কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে ফের ঘটেছে বিস্ফোরণ। তালিব-জেহাদি ও বিরোধী আইসিস খোরাসানের নাশকতা-পাল্টা আক্রমণে ইতিমধ্যেই রণক্ষেত্র আফগানভূমি। এমতাবস্থায় দেশে আটকে থাকা নাগরিকদের বাঁচাতে ‘ক্যুয়েন্টিন কোয়ারান্টিনো’-দের মতো নাগরিকদের যে আরও বেশি করে এগিয়ে আসা উচিত, সে সম্বন্ধে একমত আন্তর্জাতিক সমাজবিজ্ঞানীরা।