Taliban in Afghanistan- ফের মহিলাদের উপর নিষেধাজ্ঞা, হিজাব পড়েই করতে হবে সংবাদ পাঠ
অহেলিকা দও, কলকাতা– কেউ বলছে সন্ত্রাসী (terror) গ্রাস আবার কেউ বলছে দেশ স্বাধীন (independent) হয়েছে। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যে তা বোঝার কোন উপায় আছে কি? আসলে স্বাধীনতার মানে তো প্রাণ ভরে শ্বাস নেওয়া, ইচ্ছে মত কথা বলা (right to speak), ইচ্ছে মত চলা (right to live)। আবার কোন স্বাধীনতাই অবাধ নয়। কিন্তু যেই দেশে মহিলাদের (ladies) পড়াশুনা বন্ধ করে দেওয়া হয়; যেই দেশে চুরির সাজা হিসাবে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়, যেই দেশে তথাকথিত সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললে ভ্যানিশ (vanish) করে দেওয়া হয়; সেই দেশ কি স্বাধীন? দেশের নাম আফগানিস্তান। সরকারের নাম তালিবান।
আফগানিস্তানের তালিবান সরকার আবারও এক নতুন নির্দেশিকা জারি করলেন। তাদের শাসনে আজ গৃহবন্দি আফগানিস্তানের মহিলারা। ক্ষমতায় এসে তালিবানরা একের পর এক ফতোয়ার প্রচলন করে যাচ্ছে। স্কুল, কলেজ ও কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের প্রবেশ করার আগেই এই নিষেধাজ্ঞা জারি করলো তালিবান সরকার। আবার একদফা মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের নাম ঘোষণা করল আফগানিস্তানের তালিবান সরকার। এমনকি মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ আধিকারিক মিলিয়ে দুই এর বেশিই নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। মৌলবী শাহাবুদ্দিন দেলাওয়ার, মোল্লা মহম্মদ আব্বাস আখুন্দকে নানা ধরনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও আরও ২৫ জনের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। যার মধ্যে উপমন্ত্রী, সেনা আধিকারিক, জেল সুপার, সীমান্ত , উপজাতি বিষয়ক ও কান্দাহার বিমানবন্দরের প্রধানেরও নাম ছিল। ক্ষমতা দখল করে মহিলাদের উপর বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তালিবানরা।
আফগানিস্তানের প্রচারমাধ্যমের এই ধরনের নির্দেশিকা এর আগে কখনও দেয়নি তালিবানরা। তালিবান সরকার জানিয়েছেন, ‘আফগান টিভিতে সম্প্রচারিত হওয়া নাটক বা সোপ অপেরায় মহিলারা অংশ নিতে পারবেন না।’ ধর্মীয় কারণেই তালিবান সরকার এমন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন স্থানীয় মহিলাদের উপর। আট দফা নিষেধাজ্ঞায় তারা আরও জানান, ‘কমেডি ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান করা যাবে না। সংবাদ পাঠ বা অনুষ্ঠান সঞ্চালনার সময় মহিলা সাংবাদিকদের হিজাব পরতে হবে।’ যদিও সংবাদ মাধ্যমের এক প্রতিনিধির বক্তব্য, ‘গোটা বিধি নিষেধ প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা সাপেক্ষ।’ তবে শুধু যে মহিলাদের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা তা নয় পুরুষরাও খোলা দেহের কোনও ফুটেজ দেখাতে পারবে না। এমনকি বিদেশি বা স্থানীয় কোনও সিনেমায় বিদেশি সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও অনৈতিক তথ্য উপস্থাপন করলে তা সম্প্রচার করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন তালিবান সরকার।
আরও পড়ুন……Taliban in Afganistan: আতুঁড় ঘরেই বিয়ের প্রস্তাব, আফগানিস্তানে বিক্রি ২০ দিনের শিশুকন্যা
ইসলামি কট্টরপন্থীরা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত যখন শাসন করেছিল তখন এই ধরনের কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। তখন অবশ্য কথা বলার মতো আফগানিস্তানে কোনও মিডিয়া ছিল না। এমনকি তালিবানরা টেলিভিশন, চলচ্চিত্র এবং অন্যান্য বিনোদনকেও নিষিদ্ধ করেছিল। তবে ২০ বছরের মধ্যে পশ্চিমা দেশের সাহায্যে আফগানিস্তানে বহু চ্যানেল ও রেডিয়ো চালু করা হয়েছে। তালিবানরা ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে মহিলারা কী পরবে না পরবে তার নিয়ম চালু করে ফেলেছে। তাছাড়া সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বজায় রাখার দায়িত্ব নেওয়া সত্ত্বেও বেশ কিছু সাংবাদিকদের মারধর ও হয়রানি করেছিল তালিবানরা।