বাড়ছে বর্বরতা, তালিবানদের হাতে নৃশংস ভাবে খুন বিখ্যাত আফগান লোকসঙ্গীত শিল্পী
কাবুলের মসনদে বসার পর যেন নতুন উদ্যোমে রক্তের হোলিতে মেতেছে তালিবানেরা। গোটা বিশ্বের চর্চাতেও এখন তালিবান উত্থান। এদিকে গোটা দেশের দখল নিলেও এখনও পঞ্জশিরের কব্জা হাতে পায়নি এই নৃশংস উগ্রপন্থীরা। এদিকে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশের একাধিক উদারপন্থী নেতা, সমাজকর্মী, সাংবাদিক সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের হত্যালীলায় মেতেছে তালিবানেরা।
সূত্রের খবর, বহুদিন থেকেই তালিবানদের নিশানায় ছিলেন পাঞ্জশির অঞ্চলের সন্নিহিত আনদারাব গ্রামের বাঘলানের আফগানি লোকসংগীত শিল্পী ফাওয়াদ আনদারাবী। এবার তাঁকেও হত্যা করল তালিবরা। এদিকে আফগানিস্তানের জন-মনের কথাই বারেবারে ফুটে উঠত ফাওয়াদ আনদারাবীর সুরে, তার লেখায়। আফগানিস্তানের মাটি, মানুষের জীবন যন্ত্রণাই ছিল তাঁর প্রধান প্রতিপাদ্য বিষয়। কিন্তু তা পছন্দ নয় তালিবানদের।
এদিকে বাবার মৃত্যু প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তার পুত্র জাওয়াদ আনদারাবী বলেন, “ এর আগেও একাধিকবার বাবার খোঁজে বাড়িতে এসেছে তালিবান জঙ্গিরা। অনুসন্ধানও চালিয়েছে বহুবার।” এবারে তাঁর দেখা পাওয়া মাত্র গুলি করে হত্যা করে তালিবানেরা। এদিকে ফাওয়াদ আনদারাবীর অকাল মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে আফগানিস্তানের সাংস্কৃতিক মহলে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কুড়ি বছর আগের তালিবান শাসনের ইতিহাস ঘাঁটলেই দেখা যায় সেসময় সেখানে ধর্মীয় সঙ্গীত ছাড়া যে কোনও প্রকার সঙ্গীতচর্চা,কলা চর্চা ছিল সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। পুনরায় ক্ষমতায় ফিরতেই সেই পুরনো রূপেই যেন নতুন করে শান দিচ্ছে তালিবানিরা। ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানের সমস্ত রেডি-টিভি চ্যানেলে নিষিদ্ধ হয়েছে মহিলা কণ্ঠস্বর। এদিকে তালিবানদের এই নিষিদ্ধতার পিছনে যুক্তি ছিল তাদের ধর্মমত। কারণ ইসলাম ধর্মে যেকোন প্রকার কলাকৃতি চর্চাকে ‘হারাম’ বলে গণ্য। এদিকে আনদারাবীর পুত্র সংবাদমাধ্যমকে জানান তাঁর বাবার সংগীতচর্চা নিয়ে কোনোদিনই তালিবান শাসকদের কোনও আপত্তি ছিল না। এমনকি তালিবানদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শাসকরাও বহুবার তাদের বাড়িতে এসে তার পিতার সংগীতচর্চার প্রশংসা করেছে। কিন্তু তারপরেও তারা কেন এই নৃশংস খেলায় মাতল সেই প্রশ্ন ভাবাচ্ছে সকলকে।