National Award- প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে জাতীয় পুরস্কার লাভ, গ্রামের দর্জি আজ ফ্যাশন ডিজাইনার

অনেকের মতে প্রতিবন্ধকতায় (Obstacles) জর্জরিত মানুষরা সমাজে এগোতে পারেনা বরং তলিয়ে যায় জনসমুদ্রে। এই মতবাদ বার বার ভুল হয়েছে যদিও। এবারও তাই উঠে এসেছে এক উজ্জ্বল উদাহরণ। বসিরহাটের (basirhat) এক প্রত্যন্ত গ্রামে থাকা এক ব্যক্তি প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে রাজ্যের হয়ে ভারত সরকারের সামাজিক ন্যায় অধিকার মন্ত্রকের জাতীয় পুরস্কার (national award) জিতেছেন বর্তমানে। হ্যাঁ ঠিকই অনুমান, আমি কথা বলছি মহম্মদ আবু মুছা গাজি এর। জন্মের পর থেকেই তার জীবন সংগ্রাম (struggle) শুরু হয়ে যায়। একধারে বধিরতা অন্য দিকে না বলতে পারার অসুবিধা নিয়ে তাঁর জীবন জুড়ে প্রতিবন্ধকতা ছাড়া আর কিছুই ছিলনা। ১৮বছর আগে থেকে তাঁর কাগজের প্রতি এত টান ছিলো। তাই তিনি ৫কিলোমিটার দূরের ফেরিঘাটে সাইকেল চালিয়ে গিয়ে সংবাদপত্র জোগাড় করে পড়তেন। কারণ প্রত্যন্ত সুন্দরবনের হাসনাবাদ (Hasnabad) ব্লকের চকপাটলির বেনা গ্রামে সংবাদপত্র ঢুকতে সময় লেগে যেত বেলা ১১ টা। অজানাকে জানার চাহিদা ছিল তার মধ্যে প্রথম থেকেই।
খবরের কাগজের মধ্যেই ২০০৩ সালে প্রতিবন্ধকতা ব্যক্তিদের নিয়ে ভারত সরকারের বিশেষ সরকারি সুযোগ-সুবিধার একটি খবর প্রকাশিত হয়। সেখান থেকেই খোঁজ পান আবু মুছা। সেই সময়ে তিনি ৫০০টাকা ধার করেন। তখনও মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়নি মুছার কিন্তু জীবনের পরীক্ষা সেদিন থেকে আরও কঠিন হয়ে পড়ে। পাশাপাশি মুছা শুরু করেন দর্জির কাজ। দিন অতিক্রমের সাথে সাথে দক্ষতা অর্জন করেন তিনি দর্জির পদে। সেই থেকে আজ মুছা ফ্যাশন ডিজাইনার । ২০০৯ সালে তৎকালীন রাজ্য সরকারের সামাজিক ন্যায় অধিকার মন্ত্রকের কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়ার সাথে সাথে অনেক খেতাব অর্জন করেন তিনি। এছাড়াও দেশের বাইরে তার নাম ছড়িয়ে পড়েছে সকলের মুখে।
আরও পড়ুনঃ চতুর্থ ভারতীয় হিসাবে ‘রামানুজন’ পুরস্কার জিতেছেন আইএসআইয়ের অধ্যাপিকা নীনা গুপ্তা
বসিরহাটের এই ফ্যাশন ডিজাইনারের স্বপ্ন গুলোও অনেক বড়। মুছা চান প্রতিবন্ধকতা সম্পন্ন মানুষেরা যাতে পিছিয়ে না পড়ে তার জন্য তিনি স্কুল গড়তে চান। যেখানে যদি তাঁর মত কেউ টেলারিং শিখতে চান তাহলে সে সেই স্কুলে ট্রেনিং নিতে পারবে। এছাড়াও যদি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কোনো ব্যক্তি যদি সাহায্য চায় তবে আবু মুছা তার দিকে অবশ্যই সাহায্যের হাত বাড়াবে। তাঁর এই স্বপ্ন পূরণে পাশে রয়েছেন মুছার বাবা মহম্মদ রাহুল আমিনও। বর্তমানে নিজের টেলারিং সেন্টার চালাচ্ছেন আবু মুছা। যেখানে প্রায় ৫০জনের অন্ন সংস্থানের দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি একাধিক সামাজিক কাজের সাথেও যুক্ত আছেন।