বাঙালি-অবাঙালি, নাকি হিন্দু-মুসলিম রসায়নে বাজিমাত? হাইভোল্টেজ ভাবানীপুরে জিতবে কে
পুজোর আগেই ফের জোরদার নির্বাচনী লড়াই দেখল বাংলা। এদিন রাজ্যের তিন কেন্দ্রে উপনির্বাচন থাকলেও রাজ্যবাসীর মূল লক্ষ্য ছিল ভাবনীপুরেই। ভাবানীপুরে তৃণমূলের প্রার্থী স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। বিজেপির(BJP) পক্ষ থেকে দাঁড়িয়েছেন প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। অন্যদিকে হাইভোল্টেজ এই কেন্দ্রে বামেদের (CPIM) প্রার্থী ছিল শ্রীজীব বিশ্বাস। এদিকে বৃষ্টিভেজা ভবানীপুরে সকাল থেকেই ভোটদানের হার নেহাত খারাপ ছিল না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয়ের মুখ দেখবে কারা?
কী বলছে ভবানীপুরের রয়াসন
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মোট ৮টি ওয়ার্ডের ভবানীপুরে শুরু থেকে নির্বাচনী প্রচারে কোমর বেঁধে নামতে দেখা যায় শাসক বিরোধী সমস্ত শিবিরকেই। এদিকে নির্বাচনী পরিসংখ্যান বলছে ভবানীপুরের ভোটারদের মধ্যে ৪২ শতাংশ বাঙালি হিন্দু। অন্যদিকে এই কেন্দ্রেই ৬৩, ৭৭, ৭৪, ৭১, ৭০, ৭২, ৭৩, ৮২ এই আট ওয়ার্ডে ২৪ শতাংশ মুসলিম এবং ৩৪ শতাংশ অবাঙালি হিন্দু রয়েছে। এদিকে শুরু থেকেই হিন্দু অবাঙালী ভোটকে নিজের পক্ষে টানতে মাঠে নামতে দেখা যায় প্রিয়াঙ্কাকে। অন্যদিকে সংখ্যালঘু তত্ত্বে নতুন করে জোর দিয়ে জয়ের রাস্তা অনেকটাই প্রশস্ত করেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায়।
গুরুতর অভিযোগ ফিরহাদের
এদিকে ভোটে জিততে নন্দীগ্রামের মতো ভবানীপুরেও কারসাজি করার চেষ্টা করেছিল বিজেপি৷ এদিন সন্ধ্যায় এরকমই ঘোরতোর অভিযোগ করতে দেখা যায় তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের পরিবহন ও আবাসন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তবে তাঁর দাবি হাজার চেষ্টা করেও বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি বিজেপি। রাজ্য প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের চেষ্টায় ভোট হয়েছে শান্তিপূর্ণই। তাঁর আরও দাবি ৩ তারিখেই বিজেপির কফিনে শেষ পেরেক পুঁতবে তৃণমূলই।
নজরে বিক্ষিপ্ত উত্তেজনা
এদিকে এই কেন্দ্রেই ৭০ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি কর্মী রন্ধির সিংকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছ শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে। ভবানীপুর থানার পুলিশ রন্ধিরকেই আটক করে। আটক দলীয় কর্মীকে ছাড়াতে মুহূর্তেই থানায় পৌঁছে যান বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। অন্যদিকে ভোট চলাকালীন ‘হামলা’ চালানোর অভিযোগ ওঠে বিজেপি নেতা কল্যাণ চৌবের গাড়িতে। কে বা কারা এই হামলা করেছে তার কোনও সুস্পষ্ট প্রমাণ মেলেনি। এদিকে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট করাতে ভবানীপুরে ৩৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন৷
কী বলছে ওয়ার্ড ভিত্তিক ফলাফল
এদিকে ভবানীপুরের ৭১ নম্বর ওয়ার্ডে আবার বাঙালিদের উপস্থিতি একটু বেশি হলেও হিন্দিভাষী ভোটারদের হারও চোখে পড়ার মতো। ২০১৪ এবং ২০১৬ সালের ভোটে এই ওয়ার্ডে তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও ২০১৯ সালের লোকসভায় বিপুল মার্জিনে এগিয়ে যায় বিজেপি। অন্যদিকে ভবানীপুরের ৭৭ নম্বর ওয়ার্ড কার্যত মুসলিম অধ্যুষিত। এই এলাকার ৮৪ শতাংশ ভোটারই সংখ্যালঘু। বাঙালি ৯ শতাংশ এবং অবাঙালি ৭ শতাংশ। এখানে আবার বরাবরই তৃণমূলের দাপট বেশি। একই সাথে ৮২ নম্বর ওয়ার্ডেও বারেবারে ফুটেছে ঘাসফুল। সহজ কথায় ওয়ার্ড ভিত্তিক ফলাফলে বরাবরই বিজেপিকে টেক্কা দিয়েছে তৃণমূল। কখনওই বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি বামেরা।