ফের সাংস্কৃতিক জগতে ইন্দ্রপতন, প্রয়াত বাচিক শিল্পী গৌরী ঘোষ
ফের সাংস্কৃতিক জগতে ইন্দ্রপতন। প্রয়াত হলেন বাচিক শিল্পী গৌরী ঘোষ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তাঁর মৃত্যুতে শোক জ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। প্রয়াত শিল্পীর পরিবার সূত্রে খবর, মাসখানেক আগে স্ট্রোক হয়েছিল তাঁর। এরপর ভি আই পি রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে।
কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় সপ্তাহ খানেক আগে বাইপাসের ধারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় গৌরীদেবীকে। সেখানে শুরু থেকেই ভেন্টিলেশন সাপোর্টে ছিলেন তিনি। এদিন সকালে হাসপাতালের বিছানাতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গৌরীদেবী। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সাংস্কৃতিক জগতে। বিরাট শূন্যতা তৈরি হল আবৃত্তির জগতে।
বিশিষ্ট বাচিকশিল্পী গৌরী ঘোষের প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘তাঁর অনবদ্য আবৃত্তি মননশীল শ্রোতাদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে। তিনি দীর্ঘদিন আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্রের উপস্থাপিকা-ঘোষিকা হিসাবে কাজ করছেন। তাঁর প্রয়াণ সাংস্কৃতিক জগতে এক অপূরণীয় ক্ষতি। আমি গৌরী ঘোষের আত্মীয়-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি’। উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গ কবিতা আকাদেমির সদস্য গৌরী ঘোষকে রাজ্য সরকার ২০১৮ সালে ‘কাজী সব্যসাচী সম্মান’ প্রদান করে।
আবৃত্তি জগতে অন্যতম দুই সেরা জুটি ছিলেন গৌরী ঘোষ এবং পার্থ ঘোষ। বাস্তবে তাঁরা স্বামী-স্ত্রী। রেডিওতে উপস্থাপক হিসাবে তাঁদের কেরিয়ার জগতের শুরু। বাচনভঙ্গির জাদুতেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে গিয়েছিলেন তাঁরা। তাঁদের হাত ধরেই বাংলা কবিতা পৌছে গিয়েছিল বাঙালির ঘরে ঘরে। তাঁদের যৌথ শ্রুতি নাটক ‘কর্ণকুন্তি সংবাদ’ সারা ফেলে দেয় গোটা বাংলায়। তিন দশক ধরে আকাশবানীর বহু অনুষ্ঠানে গৌরীদেবীকে শুনেছেন বাংলার মানুষ। তাঁর প্রয়াণে সাংস্কৃতিক জগতের যে অপূরণীয় ক্ষতি হল, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।