KMC election 2021: বোমাবাজি থেকে রক্তপাত, সি ভোটার সমীক্ষায় কার পক্ষে কলকাতা

ভোটের দামাম বেজে ওঠার সাথে সাথেই সরগরম রাজ্য রাজনীতি। বোমাবাজি থেকে রক্তপাত, বিরোধী প্রার্থীর এজেন্টদের বেধড়ক মারধর থেকে ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগ, কলকাতা পুরভোটে উঠে এরকমই নানারকমের ছবি। তৃণমূলের সঙ্গে দ্বৈরথে জোড়াল কংগ্রেস। রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ বামেদের। পাশপাশি, কোথাও আবার দেখা মিলল বেনজির বিক্ষোভের। রাস্তায় নেমে শাসক দলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে বসলো রাজ্যের বাম, কংগ্রেস ও বিজেপি।
দক্ষিণ ও উত্তর কলকাতা উভয়ই বাদ পড়লো না শোরগোল থেকে। দিকে দিকে কংগ্রেসের সঙ্গে এক প্রকার দ্বৈরথে জোড়াল তৃণমূল। পাশপাশি, শিয়ালদহ ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে টাকি বয়েজ স্কুলের সামনে দফায় দফায় ছড়িয়ে পড়লো উত্তেজনা। বোমাবাজির কবলে পড়ে জখম এক ভোটার। ঘটনায় দাবানলের মতো উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে এলাকা জুড়ে। আবার পোস্তায় ২২ নম্বর ওয়ার্ডে ১৯ নম্বর বুথে ভুয়ো ভোটার ধরার দাবি করে বসেন বিজেপি প্রার্থী মীনাদেবী পুরোহিত। তাঁর কঠোর প্রশ্নের মুখে পড়ে দৌড়ে পালায় দু’জন।
রাজ্যে পুরভোটকে কেন্দ্র করে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। এই পরিস্থিতিতে একাধিক অভিযোগের তীর বিঁধছে তৃণমূলের দিকে। অভিযোগ ২০১৫-এর পুরভোটের থেকে কোনো অংশেই কম সন্ত্রাস ছড়ায়নি এবারে। সেই বছরও তৃণমূলের বিরুদ্ধে মারধর, ভয় দেখানো, ভোট দানে বাঁধা-সহ একাধিক অভিযোগ উঠেছিল। প্রসঙ্গত, নারকেলডাঙ্গায় ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী গিরিশকুমার শুক্লাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তবে এই অভিযোগের ভিত্তিতে কোনোরকম প্রতিক্রিয়া মেলেনি শাসকদলের তরফে। আবার, তালতলায় ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডে পুলিশের সামনেই তৃণমূল ও কংগ্রেস কর্মীদের হাতাহাতি বাঁধে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ তোলে কংগ্রেস। পাশপাশি, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ তোলে তৃণমূল।
এমতাবস্থায়, বেলেঘাটা ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে খন্না হাইস্কুলের সামনে বোমাবাজি পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তোলে। গোটা এলাকা জুড়ে তৈরি হয় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি। “বোমাবাজির রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই”, বলে দাবি করেন বাম প্রার্থী মৌসুমী ঘোষ। ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডে বাম প্রার্থী ফৈয়াজ আহমেদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। বড়বাজারে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে রণক্ষেত্র পরিস্থিতি তৈরি হয়। রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, ‘ছাপ্পা ভোট দেওয়া হচ্ছে। ভোটটা মানুষ দিচ্ছে না, তৃণমূল অবাধে ছাপ্পা দিচ্ছে।’ পাল্টা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা, কোথাও তৃণমূল ছিল প্রমাণিত হলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ত্রিপুরায় প্রার্থীকেও ভোট দিতে দেওয়া হয়নি।’
প্রসঙ্গত, সারাদিনের শোরগোলে উথালপাথাল পরিস্থিতি তৈরি হয় রাজ্য রাজনীতিতে। ২০১৫ সালের পুরভোটের মতোই একাধিক অভিযোগের তীর যায় তৃণমূলের দিকেই। এই পরিস্থিতি মহানগরী পুনর্দখল কিংবা সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে জয় লাভ আদেও কি সম্ভব? দুপুর তিনটে পর্যন্ত সি ভোটারের বুথ ফেরত সমীক্ষা অনুযায়ী, কলকাতা পুরসভা ভোটে তৃণমূল পেতে পারে ৫৯ শতাংশ ভোট। বিজেপি পেতে পারে ২৮ শতাংশ, বামেদের ঝুলিতে যেতে পারে ৫ শতাংশ এবং কংগ্রেস পেতে পারে ৬ শতাংশ ভোট। অন্যান্যরা ২ শতাংশ। এদিন বেলা গড়ানোর সাথে সাথেই বিস্ফোরক হয়ে ওঠে রুপা গঙ্গোপাধ্যায়। অভিযোগ বহুক্ষেত্রেই টিকিট বিক্রি হয়েছে, পুরভোটের বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে এনে নিশানা করলেন রাজ্য বিজেপিকে।
পাশপাশি, রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে বঙ্গ বিজেপির বিধায়করা। বাংলায় ন্যূনতম গণতন্ত্র নেই, বলে দাবি প্রধান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। উল্লেখ্য, সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সি ভোটারের চূড়ান্ত বুথ ফেরত সমীক্ষা অনুযায়ী, কলকাতা পুরসভা ভোটে তৃণমূল পেতে পারে ৫৮ শতাংশ ভোট। বিজেপি ২৮ শতাংশ, বামেরা ৫ শতাংশ এবং কংগ্রেস ৭ শতাংশ ভোট পেতে পারে। অন্যান্যদের ঝুলিতে যেতে পারে ২ শতাংশ।