পুলিশ মাস্টারমশাই! কলকাতা পুলিশের উদ্যোগে খোলা আকাশের নীচেই চলছে বস্তির শিশুদের পঠন-পাঠন
সাড়া দেশ জুড়ে আজ পালিত হচ্ছে শিক্ষক দিবস (Teacher’s Day) । এই বিশেষ দিনে ছাত্ররা শিক্ষকের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা, প্রণাম, সম্ভ্রম সবটাই উজার করে দেন। ডাঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণানের জন্মদিন উপলক্ষেই এই বিশেষ দিনকে শিক্ষকদের জন্য পালন করা হয়। কিন্তু ইদানিং কালে শিক্ষক দিবসের চিত্র খানিকটা অন্যরকম। এখন শিক্ষক দিবস মানে দল বেঁধে ছাত্রছাত্রীদের ভীড় জমানো উপহারের দোকানে, বেলুনে ঘর সাজিয়ে শিক্ষকের জন্য রাখা থাকে কেক, আর পরিবর্তে শিক্ষক ছাত্রদের মন ভালো করতে আয়োজন করেন খানা-পিনার৷ যাকে বলে শিক্ষক দিবস যেন ছাত্রছাত্রীদের একটা ছোট খাটো পার্টি।
চাকচিক্য থাকলেও আসল জিনিসটাই উধাও। তবে এই দিনেই সামনে এলো প্রচলিত শিক্ষক দিবসের মোড়ক থেকে বেরিয়ে সম্পূর্ণ এক অন্য ছবি। করোনা পরিস্থিতি দীর্ঘদিন বন্ধ স্কুল, কলেজ। কিছু কিছু কলেজে অনলাইনে লেখাপড়া নমঃ নমঃ করে চললেও এমন প্রত্যন্ত গ্রামও রয়েছে যেখানে অনলাইন, ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন শব্দগুলি উচ্চারণ করাও খানিক বিলাসিতা৷
তাদের লেখাপড়ার ক্ষেত্রে একমাত্র ভরসা স্কুলই। কিন্তু করোনার থাবায় দেশ কেঁপে উঠতে অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া অসংখ্য ছাত্রছাত্রীই ভুলতে বসেছে বর্ণমালাও। সেই সমস্ত শিশুদেরই লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে অভিনব উদ্যোগ নিল কলকাতা পুলিশ।
রেললাইনের ধারে অবস্থিত মাঝেরহাটের মধু বস্তির শিশুদের নিয়ে খোলা আকাশের নীচেই চলছে ক্লাসরুম। পুলিশ মাস্টার মশাই আর দিদিমণিদের পেয়ে বেজায় খুশি কচিকাচারাও। গত ১১ ই অগাস্ট থেকে ৩০ জন কচিকাচাদের নিয়েই ক্লাসরুম চালু করেছেন সাউথ ওয়েস্ট ট্রাফিক গার্ডের পুলিশ কর্মীরা।
সারাদিন নিজেদের ডিউটি সামলানোর পর কচি কাচাদেরকে মানুষ হওয়ার পাঠ দিচ্ছেন পুলিশেরা। যতদিন পর্যন্ত না স্কুল খুলবে ততদিন এভাবেই ক্লাস চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কলকাতা পুলিশের কর্মকর্তারা। বই, খাতা, পেন, পেন্সিল নিজেরাই শিশুদের কিনে দিয়ে এই স্কুল চালাচ্ছেন পুলিশ মাস্টারমশাইয়েরা। আবার মন ভালো করতে তাদের লজেন্স, চকোলেট ও দিচ্ছেন তারা।