ছিলেন বিখ্যাত গীতিকার-সুরকার! ভাগ্যের পরিহাসে এখন কালীঘাটে হকারি করছেন বাংলার এই বিখ্যাত শিল্পী
ভাগ্যের পরিহাসে কখনও ধনকুবেরও হয়েছেন ভিখারি, আবার সহায়-সম্বলহীন মানুষও একদিন হয়ে উঠেছেন প্রতিথযশা শিল্পী। বর্তমানে ফেসবুক খুললেই এরকম অজস্র উদাহরণ রোজই চোখে পড়ে আমাদের। জোত্যিষিরা বলেন সবটাই ভাগ্যের পরিহাস, সাধারণ মানুষের ভাষায় নাকি খোদার কৃপা। আজ এমনই এক শিল্পীর কথা বলব যার লেখা গানে ও সুরে গলা দিয়েছেন ঊষা উত্থুপ, সিধু, ইমন চক্রবর্তী, রূপঙ্কর বাগচী, জয় সরকারের মতো বিখ্যাত সব সঙ্গীত শিল্পী। সেই সুরকার-গীতিকার বাম্পাই চক্রবর্তী এখন সঙ্গীত জগৎ ছেড়ে বসেছেন ফুটপাতে। বিক্রি করছেন জামা-কাপড়।
এই বাম্পাই চক্রবর্তীর নামই একদিন জেনেছে সারা বাংলার মানুষ। সম্প্রতিক সময়ে মুক্তি পাওয়া ‘বুড়ো সাধু’ ছবিতে তিমির বিশ্বাসের সঙ্গে প্লেব্যাকেও গলা মিলিয়েছেন তিনি। লোকসঙ্গীত কিংবা আধুনিক গান সব লেখাই ছুঁয়ে যায় মানুষের মন। ‘নেরোল্যাক’ এবং ‘বঙ্গশ্রী’ এর মতো বিশেষ সম্মাননাও এসেছে বাম্পাইয়ের ঝুলিতে। কিন্তু ভাগ্যের ফেরেই এই কৃতীমান শিল্পীই এখন বসেছে ফুটপাতে। বাম্পাইয়ের কথায় গোটা একটা বছরের লকডাউনে সংসার চালানো একপ্রকার অসম্ভব হয়ে উঠেছিল তাঁর কাছে। তাই উপার্জনের রাস্তা খুঁজতেই অবশেষে পথকেই বেছে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি।
এদিকে সংসারের কোনায় কোনায় অনটান জমাট বাঁধছিল দীর্ঘদিন থেকেই। অসমে লড়াইয়ে পেরে না উঠে সরস্বতী পুজোর ঠিক আগেই দিনরাত এক করে তিনি ও তাঁর স্ত্রী নিজে হাতে টেনেছেন তুলি। এসেছে সামন্য টাকা। কিন্তু সরস্বতী বিদায় নিতেই আবার ফিরেছে দুরবস্থা। কিছুদিন কাজ করেছেন মাছের বাজারেও। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিক্রিও করেছে মাছ।
অবশেষে হকারি করেই দিন কাটাবেন বলে মনস্থির করেন বাম্পাই। বর্তমানে কালীঘাটের ফুটপাথেই ঝাঁপ ফেলে সাজিয়ে বসেছেন পসরা। বিক্রিও হচ্ছে টুকটাক। এদিকে বাম্পাইকে আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন ‘চন্দ্রবিন্দু’ ব্যান্ডের বিখ্যাত উপল। এছাড়াও পাশে এসে দাঁড়িয়ে অনেক সহৃদয় ব্যক্তি, বন্ধুরাও। কিন্তু বর্তমানটা যা হোক করে কেটে গেলেও আগামীর দিন গুজরান কীভাবে হবে সে কথা ভেবেই এখন চিন্তায় বাম্পাইয়ের পরিবার।