জল থৈ থৈ বঙ্গ, বন্যায় মৃত ১৪! অতি বর্ষণে বন্দি প্রায় ১৩ লক্ষ মানুষ
একমাসের মধ্যে ফের নাকাল বাংলা। অতিবৃষ্টির জেরে ভাসছে বাংলা। বঙ্গোপসাগরে নয়া নিম্নচাপের আগমনে আরও বেড়েছে বৃষ্টি। শিশুদের অজানা জ্বর ও করোনার দোসর হিসেবে যে বৃষ্টি জুটেছে, তাকে ‘অভিশাপ’ হিসেবেই ঠাউরেছে অধিকাংশ নাগরিক।হুগলির খানাকুল, ঘাটাল, আরামবাগ সহ পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়ারি ও অন্যান্য বিস্তীর্ণ গ্রামের কয়েকশো হেক্টর জমি এখন জলের তলায়। বন্যার জলের মাঝেই আটক প্রায় কয়েক লক্ষ মানুষ। সর্বশক্তি প্রয়োগ করলেও বেগ পেতে হচ্ছে প্রশাসনকে। লাগাতার বর্ষণে ক্রমশ বেড়েই চলেছে জমা জলের স্তর, স্তব্ধ হয়ে যাচ্ছে উদ্ধারকার্য। সোমবার নবান্নের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের তরফে যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ প্রকাশিত হয়েছে, তা দেখে চক্ষু চড়কগাছ প্রশাসনিক আধিকারিকদের।
রিপোর্টে মোতাবেক, বিপর্যস্তদের জন্য সবচেয়ে জলমগ্ন জেলাগুলিতে মোট ৫৭৭ টি ত্রাণ শিবির চলছে বর্তমানে। শিবিরগুলিতে আশ্রয় পেয়েছেন প্রায় ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ। সূত্রের খবর, প্রশাসনের তরফে বিপজ্জনক এলাকা প্রায় ১ লক্ষ ৪১ হাজার মানুষকে উঁচু স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরই মাঝে জেলাশাসকদের অতিরিক্ত অর্থসাহায্য মঞ্জুর করেছে নবান্ন। যদিও তাতে পরিস্থিতি কতটা সামাল দেওয়া সম্ভব, সে বিষয়ে সন্দিহান নবান্নের আধিকারিকরাই।
বন্যা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার উদ্দেশ্যে নবান্নে চালু হয়েছে ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম। টোল ফ্রি নম্বর ১০৭০ ও ২২১৪৩৫২৬-এ ফোন করে দুর্গতরা সাহায্য পেতে পারেন। ইতিমধ্যেই দুর্গতদের মধ্যে বিলি করা হয়েছে প্রায় ৬০,০০০ ত্রিপল। রাজ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর, অতিবর্ষণের জেরে ১৪-১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে মোট ১৪ জনের। এই সংখ্যা সোমবার থেকে আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা আধিকারিকদের। জানা যাচ্ছে, ১৪ জনের মধ্যে ৮ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে জলে ডুবে, বাকি ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে ভাঙা দেওয়ালে চাপা পড়ে ও তড়িদাহত হয়ে। পূর্ব মেদিনীপুরে ইতিমধ্যেই নিখোঁজ অরবিন্দ জানা নামে এক ব্যক্তি। নিখোঁজের সন্ধানে জলে নেমেছে উদ্ধারকারী দল।
এ রাজ্যের ৪৭ টি ব্লক, এবং ৮ টি পুরসভা সম্পূর্ণ জলের তলায় বলে খবর নবান্ন সূত্রে। জলবন্দি মানুষদের দ্রুত উদ্ধারের চেষ্টায় অতিরিক্ত মোকাবিলা বাহিনীর ব্যবস্থাও করছে রাজ্য। যদিও বর্ষণ না থামা পর্যন্ত যে উদ্ধারকাজ বেশ দুরূহ, তা স্পষ্ট জানাচ্ছেন দুর্যোগ মোকাবিলা দলের সদস্যরা।