বিশ্ব জুড়ে ভক্তের সমাহার! মহাকালের এই মন্দির কখনই ফেরায়নি তাঁর ভক্তদের

অহেলিকা দও, কলকাতা : দক্ষিণ ভারতের শিল্প-সংস্কৃতি স্থাপত্যের কেন্দ্রবিন্দু হল তামিলনাড়ু। এখানেই হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে রয়েছে তামিলনাড়ুর তাঞ্জাভুরে বৃহদেশ্বর মন্দির। এই মন্দিরটি রাজরাজেশ্বর বা রাজরাজেশ্বরম নামেও পরিচিত। ভারতের রহস্যময় মন্দিরগুলির মধ্যে এটি অন্যতম।

বৃহদেশ্বর মন্দিরের আরাধ্য দেবতা ভগবান শিব। এই মন্দিরের নির্মাণশৈলী অপূর্ব। নীচে অসংখ্য সুড়ঙ্গ। অতীতে নাকি এই সব সুড়ঙ্গ দিয়েই অন্য মন্দিরে যাওয়া যেত। যেতেন রাজা, রানি, সাধু, সন্ত, পুরোহিত ও অন্যান্যরা। যদিও এখন বেশিরভাগ সুড়ঙ্গপথই বন্ধ। মন্দিরের মূল ফটকে রয়েছে ১৬ ফুট লম্বা ও ১৩ ফুট চওড়া নন্দী বা ষাঁড়ের মূর্তি।

shiva temple

কথিত রয়েছে, চোল বংশের রাজা প্রথম রাজরাজ মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন ১০১০ সালে। মন্দিরে লিপি খোদাই করা আছে। তা থেকে জানা যায় যে এই মন্দিরের প্রধান স্থপতি ছিলেন কুঞ্জর মল্লন রাজা পেরুনথাচান। পাঁচ বছর ধরে তৈরি হওয়া এই মন্দির নির্মাণে কাজে লাগানো হয়েছে ৬০ হাজার টন গ্রানাইট পাথর।

বিশ্বে গ্রানাইট পাথরে তৈরি প্রথম সম্পূর্ণ মন্দির এটি। তার শীর্ষে স্থাপিত রয়েছে ৮০ টনের একটি গ্রানাইট পাথর। মন্দির চত্বরের প্রায় ১০০ কিলোমিটার ব্যাস অবধি কোনও গ্রানাইট পাথর পাওয়া যায়নি। তাহলে, মন্দির নির্মাণের জন্য এত গ্রানাইট পাথর এল কোথা থেকে? আজও সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে চলেছেন ইতিহাসবিদরা।

shiva temple

গোটা মন্দিরটি তৈরি হয়েছে ইন্টারলকিং পদ্ধতিতে। ব্যবহার করা হয়নি কোনও প্লাস্টার, আঠা, সিমেন্ট। এই এলাকায় ছ’টি বড় ভূমিকম্প হয়ে গিয়েছে। তার পরও মন্দিরের কোনও ক্ষতি হয়নি। ভিত ছাড়াই তৈরি হওয়া ২১৬ ফুট উচ্চতার এই মন্দির দাঁড়িয়ে আছে আগেকার মতই।

চেন্নাই থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে কাবেরী নদীর দক্ষিণ তীরে অবস্থিত এই মন্দির। যার আয়তন পূর্ব-পশ্চিমে ৭৯০ ফুট। উত্তর-দক্ষিণে ৪০০ ফুট। মন্দিরের মূল বিগ্রহের উচ্চতা ৩.৭ মিটার। এছাড়াও রয়েছে পাঁচ মিটার লম্বা নৃত্যরত শিবের মূর্তি। এই মন্দিরের অন্যতম বিশেষত্ব হল, দুপুরে যখন সূর্য ঠিক মাথার ওপরে থাকে, তখনও মন্দিরের চূড়া বা গোপুরমের ছায়া জমিতে পড়ে না।




Leave a Reply

Back to top button