পাবজি খেলেই উধাও ১০ লক্ষ! মায়ের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে ‘বেপাত্তা’ ছেলে
অনলাইন হোক বা অফলাইন, গেমের প্রতি বুঁদ হওয়ার ফল যে কতটা মারাত্মক, তা দেখছে গোটা বিশ্বই। স্মার্টফোনের মোহে ক্ষতিগ্রস্ত শৈশব, বিপদে নাবালকদের মনন! সম্প্রতি যোগেশ্বরীর একটি ঘটনায় স্পষ্ট হয়েছে গেম-দুনিয়ার কালো দিকটি।
শুধুমাত্র অনলাইন গেমে শ্রেষ্ঠত্বের দৌড়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য ‘পাবজি’-তে অনলাইন লেনদেনের মাধ্যমে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে ফেলেছে যোগেশ্বরীর পশ্চিম-মফস্বলের এক নাবালক। যদিও ষোলো বছর বয়সেই এত টাকা সে পেল কোথায়? সূত্রের মতে, মায়ের অ্যাকাউন্ট থেকে ডিজিটাল উপায় ব্যবহার করে এই কান্ড ঘটিয়েছে নাবালক! জানা যাচ্ছে, এত বিশাল পরিমাণ অর্থ গেমের জন্য খরচ করার দরুণ যখন মা-বাবা তাকে বকাঝকা করে, তখন নাকি বাড়ি থেকেই পালিয়েছে এই তরুণ। পাবজির দুনিয়ায় অনলাইন ‘কারেন্সি’ বা ডিজিটাল অর্থ কেনা ও বিশেষ আইডি তৈরির জন্য এই অর্থ বিনিয়োগ করেছে ওই নাবালক, মত গেমবিশারদদের।
বাড়ি ছাড়ার আগে একটি শেষ চিঠি ছেড়ে যায় নাবালক। তাতে লেখা, “আমি বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছি এবং কখনও ফিরব না।” সিনেমার গল্প মনে হলেও আদতে সত্যি এই ঘটনা। অনলাইন গেমের ভয়াবহ পরিণতি খাস এ দেশে দেখতে পেয়ে রীতিমতো বিচলিত তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা। অনলাইন গেমের ক্ষেত্রে নাবালকদের জন্য নানাবিধ ‘নিরাপত্তাবিধি’ চালু হলেও পাবজির ভারতীয় সংস্করণের ক্ষেত্রে সেগুলি মানা হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে উঠছে প্রশ্ন।বুধবার এমন ঘটনার পরই এমআইডিসি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নাবালকের বাবা-মা। চিঠিতে পলাতক প্রমাণিত হলেও শুধুমাত্র নাবালক হওয়ার দরুণ ‘অপহরণ’-এর মামলা রুজু করে সার্চপার্টির বন্দোবস্ত করেছে সংশ্লিষ্ট থানা। অবশেষে আন্ধেরির মহাকালী গুহা এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার নাবালককে উদ্ধার করে পুলিশ। এরপরেই বাবা-মার কাছে ফেরত পাঠানো হয় নাবালককে।
ছেলেকে ফিরে পেলেও তার ভবিষ্যৎ ঘিরে নানা প্রশ্ন চেপে ধরেছে তার বাবা-মাকে। অনলাইন মাধ্যমের গেম হোক বা সোশ্যাল মিডিয়া, আন্তর্জালের প্রতি মোহগ্রস্ত হয়ে বিশ্বের আট থেকে আশি যে ভয়াবহ দিকে এগিয়ে চলেছে, তা সাফ জানিয়েছেন সমাজবিজ্ঞানীরা। শিশুবিশেষজ্ঞ ও মনোবিদদের বক্তব্য একটাই, শিশুরা সংবেদনশীল, তাই তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত যত্নশীল হওয়ার পাশাপাশি তার আন্তর্জাল আনাগোনার ক্ষেত্রেও সচেতন থাকতে হবে অভিভাবককে, না হলেই বিপদ!