রাত বাড়তেই ছায়ামূর্তিরা হানা দেয় কলেজ প্রাঙ্গণ! তবে আজও কি হাজারও বইয়ের মাঝে শুয়ে কোনও অভিশপ্ত লাশ?

নানা বিচিত্র রঙে ঠাসা আমাদের এই তিলোত্তমা। প্রতি নিয়ত একটা নতুন কিছু এই শহরের বুকে আমাদের অপেক্ষা করে বসে থাকে। প্রতি মুহূর্তে একটা নতুন ইতিহাস তৈরি হয় এই শহরের বুকে। কলকাতা মানেই লক্ষ লক্ষ চেহারা নিজেদের গন্তব্যের দিকে ছুটে চলেছে। সকালের প্রথম তিলোত্তমাকে ছুঁয়ে যেতেই সূর্যমুখী ফুলের মতো তুলে দাঁড়ায় এই শহর। আবার কিছু নতুনের অপেক্ষায় উঠে বসে পড়ে তিলোত্তমা।
কিন্তু সকালের আলোয় যতটা লাবণ্যময়ী এই শহর রাতে যেন ততটাই ভয়ঙ্কর। কোন এক উন্মাদনা গ্রাস করে শহর কলকাতাকে। কলকাতা শহরের বুকে আলিপুরে অবস্থিত ক্যালকাটা ওমেনস কলেজ। সকালে ছাত্রীদের ভিড়ে যতটা প্রাণচ্ছল এই শিক্ষাপ্রাঙ্গন। রাতে অন্ধকারে যেন ততটাই ভয়ঙ্কর। নানা জনের নানা মত। কলকাতার প্রাণকেন্দ্রে এত বছরের পুরানো হেরিটেজ কলেজটিকে নিয়ে চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে একাধিক রহস্যময় কাহিনী। যা শুনলে গোটা শরীর বেয়ে হিম স্রোত বয়ে যে কোনও কারোর।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ আমলে অর্থাৎ স্বাধীনতার প্রাককালে তৈরি এই কলেজটি। ব্রিটিশ ভারতের প্রথম গর্ভনর ওয়ারেন হেস্টিংসয়ের প্রথম গর্ভনর হাউস ছিল এটি। পরবর্তীকালে এই গর্ভনর হাউস রূপান্তর হয় কলকাতা ওমেনস কলেজে। শহরের নাম করা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষামহলের পাশাপাশি রহস্যময়ী আচার আচরণের জন্যও বেশ পরিচিত। এই কলেজের অনেক পড়ুয়াই নানা সময় এমন কিছু শক্তিকে অনুভব করেছে, যা হয় তো অনেকটাই অতি প্রাকৃতিক। এমন কিছু শক্তি, ছায়ার অনুভব পেয়েছে যা এতটা রহস্যময়ী যে মানুষের শি়ড়দাঁড়াকেও নিমিষে ঠান্ডা করে তুলতে পারে।
শোনা যায় এখনও নাকি ইংরেজী নববর্ষের দিনে ব্রিটিশকালের মতোই হেস্টিংস ফিরে ফিরে আসে সেই চত্বরে। এক সময় যা তাঁর সম্পত্তি ছিল নিজের সেই প্রাণের ঘরটিকে নাকি এখনও ভুলে উঠতে পারেনি সে। তৎকালীন সময়ে যান্ত্রিক যানবাহন ছিল না বিশেষ। ঐতিহ্য বজায় রাখতে সাহেবরা ঘোড়া গাড়ি ব্যবহার করত। আর গাড়ির শব্দ আজও মাঝে মধ্যেই কানে আসে সেই চত্বরের অন্দর থেকে। অনেকের মতে, সেখানে নাকি কোনও এক রহস্যময়ী ছায়ামূর্তির বাস। মাঝে মাঝেই সেই অশরীরের হানা দেয় কলেজ চত্বর। অনেকেই তাঁদের সামনে থেকে অনুভব করেছে। সেই কারণে রাতে বাইরে বেরানো অনেকেই সুরক্ষিত মনে করেন না।