করোনাই এনেছে অন্ধকার, একসময় এই করোনাই জ্বেলেছিল আলো! জানুন কিছু অবাক করা ইতিহাস
গত দু’বছর ধরে বিশ্বব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু একটিই, সেটি “করোনা”। এই মারণ ভাইরাস এর প্রকোপে কার্যত নাজেহাল সারা বিশ্ব। ধনী-দরিদ্র বিচার না করে প্রাণঘাতী ভাইরাস দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পরিবেশে। মানুষের একে অপরের ছোঁয়াছুঁয়িতেও জারি নিষেধাজ্ঞা। একটার পর একটা ওয়েভ কেড়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন। বর্তমান পরিস্থিতিতে “করোনা” শব্দটি আমাদের কাছে ভয়ঙ্কর হলেও, জানেন কি এক সময় এইসব শব্দটিই হয়ে উঠেছিল আনন্দের উৎস। মানুষের অন্ধকার জীবনে আলো নিয়ে এসেছিল এই “করোনা”।
ঊনিশ শতকে ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ প্রভুরা নিজ স্বার্থে এদেশের শিল্পায়নের উদ্যোগী হয়। তৎকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রাজধানী কলকাতাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় কর্মযজ্ঞ। তাতে কিছু ভারতীয় ব্যবসায়ী অংশগ্রহণ করেন, এদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন রাজেন্দ্রনাথ মুখার্জি। তিনি প্রায় নিজের উদ্যোগে ব্রিটিশ শিল্পপতি স্যার হেরোল্ড মার্টিনের সঙ্গে যৌথভাবে একটি কোম্পানি তৈরী করেন। যা তৎকালীন লন্ডন অফিসে নতিযুক্ত হয় বিখ্যাত T.A. MARTIN Company নামে। ভারতবর্ষের অন্যতম প্রথম পার্টনারশিপ কোম্পানি এই T.A. MARTIN । এই সংস্থা বন্দর, কয়লাখনি, ইস্পাত শিল্প, ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প দ্রব্য, চা থেকে শুরু করে বাণিজ্যিক ও সরকারি ভবন নির্মাণ এবং রেলওয়ে প্যাসেঞ্জার ট্রেন পর্যন্ত তৈরি করেছে।
১৯৪৬ সালে কোম্পানিটি Burn Company কে কিনে নেয় এবং তৈরি হয় Martin Burn Limited Company। সেই বছরটি ছিল ভারতীয় উপমহাদেশে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ একটা সময়। যখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী আর্থিক সংকট সাম্প্রদায়িক হানাহানি এবং দেশভাগের শঙ্কা নিয়ে মানুষ বিপর্যস্ত এবং সমগ্র দেশ অন্ধকারচ্ছন্ন, ঠিক সেই মূহুর্তে মার্টিন কোম্পানি বাজারে নিয়ে এসেছিল আধুনিক মানের ইলেকট্রিক বাল্ব। যার নাম ছিল “করোনা”। উপমহাদেশের এক বড় অংশ আলোকিত করার কাজে ব্যবহার হতে শুরু হয় এই বাল্ব। স্বাধীনতার প্রকমুহুত্তে দিল্লির গভর্নর জেনারেলের অফিস এই লাইট দিয়ে সাজানো হয়েছিল বলেও জানা যায়।