রাতদুপুরেই কানে আসে ভয়ঙ্কর আর্তনাদ! কারা আজও নিদ্রাহীন ডাউ হিলে?

সারাদিনের ব্যস্ততায় ভরা জীবন থেকে দুদন্ড শান্তি পেতে পাহাড়ের কোলে আশ্রয় খোঁজে ভ্রমণপিপাসু মানুষ। বিশেষ করে গরমের ছুটি আর পুজোর ছুটিতে তো ঘরে মনই টেকেনা বাঙালির,ছুটে যায় পাহাড়ের টানে।পশ্চিমবঙ্গে থাকে অথচ দার্জিলিং যায়নি এমন মানুষ লাখে একটাও পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ! কুয়াশার চাদরে মোড়া সুন্দরী কার্শিয়াংকে দার্জিলিংয়ের প্রবেশ পথ বলা হয়। পাহাড় মানেই যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য,ঝাউ বন,চা বাগান, ঝরনা আর ফুরফুরে হাওয়া, তেমনই পাহাড় মানেই অ্যাডভেঞ্চার, কোনায় কোনায় লুকিয়ে থাকা অজানা আতঙ্ক। দার্জিলিং থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে কার্শিয়াংয়ে অবস্থিত ডাউ-হিলকে ঘিরে এমনই হাজারো রহস্য দানা বেঁধে আছে।
কে জানত ভারতের সবচেয়ে ভয়ানক স্থানগুলোর মধ্যে পাইনে মোড়া অপরূপ সুন্দরী ডাউ-হিলে নামও থাকবে! অর্কিড,পাহাড়ি জঙ্গলের ঝোপঝাড়,চা বাগানের চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্যের মাঝে অতর্কিতে পাতা থাকে মৃত্যুফাঁদ। দিন হোক বা রাত অলৌকিক অদ্ভুতুড়ে ঘটনা এখানে বন্ধ হয় না।
ডাউ-হিলে যেসব পর্যটকরা যান তাদের আগেই ‘ডেথ রোড’ সম্পর্কে সাবধান করা হয়।ডাও-হিল ও বন দপ্তরের মাঝের এই রাস্তা অত্যন্ত ভয়ানক। মাঝে মধ্যেই শোনা যায়, বহু যাত্রীবোঝাই গাড়ি রাস্তা হারিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেছে এখান থেকে। স্থানীয় কাঠুরেরা এই রাস্তায় অনেক বার দেখা পেয়েছে মুন্ডহীন এক অশরীরীর। তাঁদের দাবি, দেখা দিয়েই অদৃশ্য হয়ে যায় একটি ছেলের মুণ্ডহীন দেহ। এই রাস্তায় এক নয়, একাধিক বার ঘটেছে এই ঘটনা। আরো শোনা যায়, এখানে একটি ধূসর পোশাক পরা মেয়ে প্রায়শই চলন্ত গাড়ির সামনে চলে আসে আর তারপর হাওয়ার মতো উবে যায়। পাহাড়ি রাস্তায় দ্রুত গতিতে আসা গাড়িগুলি এভাবেও অনেক দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়।যেসব প্রত্যক্ষদর্শীরা ফিরে আসেন হয় তারা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন অথবা শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন।
এখানেই শেষ নয়, ডাউ-হিলের জঙ্গলের কাছে আছে জিনক্সড স্কুল। যেখানে অসংখ্য অপ্রকৃত মৃত্যু ঘটেছে। তাদের কারোর মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। ১০০ বছরের পুরোনো ভিক্টোরিয়া বয়েজ স্কুলের চারপাশে রয়েছে ভুতুড়ে জঙ্গল। ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত শীতকালীন ছুটি চলাকালীন স্কুলের বদ্ধ ঘর থেকে আসে উচ্চস্বরে শিশুর হাসির আওয়াজ, কখনও বা কোনো বাচ্চার পরিত্রাহী চিৎকার আর কান্না। সন্ধ্যে বেলাতেও কারোর পায়ের চলাফেরার শব্দ শুনতে পান স্থানীযয়রা।
দিনের আলোতেও এই রাস্তা জনমানব হীন নির্জন থাকে। সর্বদাই গা ছম ছমে আতঙ্কের বাতাবরণ ছেয়ে থাকে এই অঞ্চলে। আপনি যদি রোমাঞ্চ ভালোবাসেন তবে এই পথে না গেলেও নিজের কানে শুনে আসতে পারেন এমনই কিছু অভিজ্ঞতার কথা। ছোট্ট পাহাড়ি গ্রামটি কিন্তু ভৌতিক অভিজ্ঞতা নয় সৌন্দর্যেও মুগ্ধ করবে আপনাকে।