ফুটপাতে আড়াইশো টাকার ব্যাগ বিক্রি থেকে আড়াইশো কোটি টাকার সংস্থার মালিক
সাফল্যের সিঁড়িতে ওঠার কঠোর পরিশ্রম সাধারণত সিনেমার বিষয় হয়ে ওঠে। সিনেমার সেই স্ক্রিপ্টকেও হার মানিয়ে দিয়েছে তুষার জৈনের জীবন। বর্তমানে তাঁর জীবনের বর্ণময় ওঠাপড়া যে কোনো সিনেমার বাস্তব গল্প অথবা যে কোনো উপন্যাসের প্লট হয়ে ঊঠতে পারে। সাফল্যের শিখর থেকে একসময় পড়ে গিয়ে আবার শূন্য থেকে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছতে হয় কীভাবে, তা তিনি দেখিয়েছেন।।
১৯৯২ সালে হর্ষদ মেহতা শেয়ার কেলেঙ্কারির ফলে কয়েক হাজার ধনী ব্যবসায়ী পথে বসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন মূলচাঁদ জৈন। পরিবার নিয়ে ফুটপাতকেই আশ্রয়স্থল হিসেবে খুঁটি আঁকড়ে ধরেন। তুষার জৈন হলেন মূলচাঁদ জৈনের ছেলে। এই ফুটপাত থেকেই শুরু হয় তুষার জৈনের লড়াই।। ঝাড়খন্ডের একসময়ের নামজাদা ব্যবসায়ী মূলচাঁদ জৈন ছেলের হাত ধরে শুরু করেন নতুন পথ। তুষার জৈন বিলাসবহুলভাবে থাকার পর হঠাৎ করে ফুটপাতের জীবনে এসে পড়ায়, ভেঙে না পড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর জেদ তার ভিতরে বাসা বাঁধে। এর ফলেই, বাবার সাথে ফুটপাতে বিক্রি করতেন ব্যাগ। মুম্বইয়ের রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ব্যাগ বিক্রি করেই সংসারের হাল ধরেন।।
জীবনের অদম্য লড়াইয়ে দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করেছিলেন ক্ষিদের যন্ত্রণা। যার ফলে ব্যর্থতা থেকে মুক্তির পথ খুঁজছিলেন তুষার জৈন। ২০১২ সালে সেই মুক্তির প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে নামলেন তিনি। জমানো টাকা দিয়ে তৈরি করলেন একটি ছোটো সংস্থা। আর পিছনে ফিরে দেখেননি তুষার জৈন। দু’বছরের মধ্যেই বছরে ১০ হাজার ব্যাগ তৈরির কার্যক্ষমতা হয় সংস্থাটির।
আরও পড়ুন….নাম পরিবর্তন করেও নিশ্চিন্ত নয় ফেসবুক কর্তা
২০১৭ সাল নাগাদ তুষার জৈন বছরে ৩০-৩৫ হাজার ব্যাগ তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। যার ফলে সংস্থার বছরে ব্যবসা দাঁড়ায় ২৫০ কোটিতে। এরপর তুষার ট্রাওয়ার্ল্ড নামে একটি সংস্থা লঞ্চ করেন। বর্তমানে বহু মানুষের কর্মসংস্থান করেছেন তুষার ও তাঁর সংস্থাটি। তুষারের সংস্থাটি বর্তমানে ভারতের চতুর্থ ব্যাকপ্যাক তথা ব্যাগ তৈরির কোম্পানি। সংস্থাটির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হলেন বলি অভিনেত্রী সোনম কাপূর। তুষারের লক্ষ্য আগামি দিনে কোম্পানির টার্নওভার হাজর কোটিতে নিয়ে যাওয়ার। তাঁর এই বর্ণময় যাত্রাপথের অন্যতম দিক যে অধ্যাবসায় তা তিনি নিজেই বলেছেন একাধিক অনুষ্ঠানে।