শিয়ালদহ থেকে চলে এমন এক ‘ভূতুড়ে ট্রেন’, হঠাৎ দেখলেন সঙ্গে নেই কোনও সহ-যাত্রী
প্রতিদিনই ট্রেনে যাতায়াত করেন। অনেক সময় বাড়ি ফিরতে রাত হয়ে গেলেও ট্রেনে যে বগিতে ওঠেন সেখানে কেউ না কেউ সঙ্গে থাকে। কিন্তু এবার একটু কল্পনা করুন তো কোনও সময় যদি ফাঁকা একটি বগিতে থুরি গোটা ট্রেনে যাতায়াত করতে হয় সেওবা রাত্রে বেলায় তাহলে কেমন হবে।

শুভঙ্কর, কলকাতা: চারিদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার, ফাকা বগীতে আপনি একা, আধো আবছা আলো জ্বলছে। তীব্র বেগে সামনের দিকে ছুটে চলেছে ট্রেন। ভাবুন তো এইরকম পরিস্থিতিতে আপনি যাত্রা করছেন তাহলে কেমন হবে? প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ ট্রেনে যাতায়াত করেন বিভিন্ন কারণে। অনেকে আবার চাকরি সূত্রে প্রতিদিনই ট্রেন ধরেন। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রচুর সংখ্যক যাত্রী কলকাতার উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য ট্রেনে যাতায়াতকেই প্রধান মাধ্যম হিসেবে বেছে নেন। আপনি এই প্রতিবেদনটি পড়ছেন, কোন না কোন দিন আপনিও ট্রেনে উঠেছেন বা প্রতিদিনই ট্রেনে যাতায়াত করেন। অনেক সময় বাড়ি ফিরতে রাত হয়ে গেলেও ট্রেনে যে বগিতে ওঠেন সেখানে কেউ না কেউ সঙ্গে থাকে। কিন্তু এবার একটু কল্পনা করুন তো কোনও সময় যদি ফাঁকা একটি বগিতে থুরি গোটা ট্রেনে যাতায়াত করতে হয় সেওবা রাত্রে বেলায় তাহলে কেমন লাগবে? হয়তো ভাবছেন দূর এমনটা হয় নাকি ট্রেনে নির্দিষ্ট বগিতে কেউ না কেউ তো থাকবেই। তাহলে আপনাকে একটু ভুল প্রমাণিত করা যাক।
এইজন্য সময়ের সারণিতে একটু পিছন দিকে যেতে হবে। সময়টা মোটামুটি ধরুন বছর দশেক আগে। শিয়ালদহ থেকে ছাড়া হত শিয়ালদহ এয়ারপোর্ট লোকাল। বর্তমান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০০১-০২ সালে রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ট্রেন রুটের প্রকল্পটি ঘোষণা করেছিলেন। তারপর যথারীতি ঘটা করে এইরূপে ট্রেন উদ্বোধন করা হয়। লক্ষ্য ছিল এয়ারপোর্টে যাওয়ার জন্য কাউকেই দীর্ঘ যানজট ও ট্যাক্সি করে যেতে যেন না হয়। সকালের দিকে এই ট্রেন বেশ ভালোই চলছে। আধার ঘনিয়ে আসলেই যাত্রী হতো না। দমদম ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত কিছু সংখ্যক যাত্রীর দেখা মিললেও সেখান থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত কার্যত খালি যেত এই ট্রেনটি। একটা লোহার ডিব্বা সামনে কিছুটা আলো নিয়ে গভীর অন্ধকারের দিকে ছুটে যেত। ছড়িয়ে পড়ে ভূতের গুজব। কোন যাত্রী একা যেতে চাইলে তাকে বলা হত আপনি এখানেই নেমে পড়ুন একা যাওয়া ঠিক হবে না।
এবার তাহলে প্রশ্ন যাত্রীসাধারনের ভালোর জন্যই ট্রেনটির রুট দেওয়া হয়েছিল। তাহলে যাত্রী হতো না কেন! এর পিছনে অনেক কারণ রয়েছে। প্রথম কারণ হিসেবে যদি দেখা হয় খুব কম সংখ্যকই ট্রেন এই রুটে চালানো হতো। বিমান থেকে নেমে লাগেজপত্র নিয়ে অনেকটা সিঁড়ি ভেঙে তারপর বিমানবন্দর স্টেশন থেকে ট্রেন ধরতে হতো। এছাড়াও রাতে অন্ধকারে অন্যান্য সহযাত্রী না থাকার ভয় প্রত্যেকের মনেই জাঁকিয়ে বসেছিল।