স্কন্দ-কাটা গলি! নামেই জাগে শিহরণ, রাত বাড়তেই সেই রাস্তায় দেখা যায় কিছু ছায়ামূর্তি

লোকে বলে তিলোত্তমার সৌন্দর্য নাকি হার মানায় অন্য যে কোনও শহরকে। আর সত্যি এ কথা কোনও অংশেই যে মিথ্যা এমনটা নয়। হয় তো আজও এই শহরের বুকে অন্যান্য মেট্রো সিটির তুলনায় গগনচুম্বি অট্টালিকার অভাব আছে, কিন্তু তিলোত্তমার বুকে প্রেম আছে, সড়কে আমেজ আছে। আজও মানুষ এখানে মানুষ হয়ে বাঁচে। নব্য এই  পুঁজিবাদী সমাজের চাপে তারা এখনও যন্ত্রে পরিণত হয়নি। কলকাতা শহরের ইতিহাস আজও মানুষের মনে দাগ কাটতে সক্ষম। এখানে প্রতি অলি-গলির, প্রতিটা সড়কের প্রতিটা বাড়ির অনেক বছরের ইতিহাস রয়েছে।

কলকাতা যেমন প্রেমের শহর। গোটা দিনটা যেখানে বাতাস বয় সুখের, রাত বাড়লেই কিন্তু ভয়ের সংক্রমণ ঘটে এই তিলোত্তমার অনেক এলাকায়। অনেকের মতে, শহরের বিশেষ কিছু জায়গায় আজও রাতের অন্ধকারে মানুষ যাওয়ার সাহস করে উঠতে পারে না। এই সকল এলাকাগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য শোভাবাজারের স্কন্দ-কাটা গলি। আজও রাত বাড়লে এই গলির আশপাশে যেতে ভয় পায় সাধারণ মানুষ। তবে এই গলির ব্যাপারে জানার আগে জেনে নেওয়া উচিত শোভাবাজারের ইতিহাস। সুতানুটিতে প্রথম বসতি স্থাপন করেছিলেন সপ্তগ্রামের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী শেঠ ও বসাক। তারা এই অঞ্চলের অধিকাংশ জঙ্গল পরিস্কার করে প্রথম বসতি তৈরি করেন। বসাকদেবের গৃহদেবতা শ্যাম রায়ের নামে পরবর্তীকালে এই অঞ্চলের নাম হয় শ্যামবাজার। পরবর্তীতে এই  অংশ নাম পায় শোভাবাজার। 

kolkata lane (1)

এই এলাকারই একটি গলির নাম স্কন্দ-কাটা গলি। একটি সংকীর্ণ রাস্তা যা দিয়ে একজনের বেশি যাওয়া  যায় না। গলির পরিবেশ এমনই যে সকালেও সেই গলিকে এড়িয়ে চলেন স্থানীয় মানুষজন। একদিন এই এলাকার ত্রাস বা বলা চলে এলাকা রবীন হুডের গলা কাটা নিথর দেহ মেলে এখান থেকে। তারপর থেকেই মানুষের মনে জন্ম নেয় ভয়। অনেকের মতে সেই দেহ নাকি আজও রাতের অন্ধকারে হেঁটে চলে বেড়ায়। তাই ওই এলাকার নাম রাখা হয় স্কন্দ-কাটা গলি। তবে শুধু ভুতুরে নয়! এই গলির ঐতিহাসিক গুরুত্বও যথেষ্ট। নকশাল আন্দোলনের সময় বহু প্রাণ পুলিশের হাতে এনকাউন্টার হয়েছে ওই গলিতেই। মানুষের ধারণা সেই আর্তনাদগুলি আজও যেন ভেসে ভেসে আসে।




Leave a Reply

Back to top button