গভীর রাতে দাঁড়িয়ে যুদ্ধ জাহাজ! কলকাতা বন্দর আজও শিহরণ তোলে শহরবাসীর মনে

ব্রিটিশরা নিজেদের স্বার্থে কলকাতা শহরের হুগলি নদীর পূর্ব তীরে একটি প্রথম নির্মাণ করেন একটি বন্দর। তাঁরা নিজেদের স্বার্থে তা নির্মাণ করলেও স্বাধীনতার পর তা যেন এক প্রকার এই দেশের স্বার্থেই পরিণত হয়ে যায়। দেশের সবচেয়ে ব্যস্ততম বন্দরের তালিকায় নিজের নাম লিখিয়ে নেয় এই বন্দর। আনুষ্ঠানিকভাবে এর নাম শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী পোর্ট ট্রাস্ট কিন্তু সময়ের সঙ্গেই এটি কলকাতা বন্দর ( Kolkata Dockyard ) নামেই পরিচিতি পেয়ে গেছে। আজও শহরের একটা বড় অংশের মানুষের প্রতিদিনের রোজগার এই বন্দরের উপর নির্ভর করে।
মোঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের সঙ্গে বাণিজ্য তৈরির স্বার্থে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কলকাতা বন্দর স্থাপন করে। পরবর্তীকালে এই বন্দরের গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন জাপানিরা এই বন্দরে হামলা করে বসে। লাগাতর বোমাবর্ষণের মধ্যে দিয়ে এই বন্দরকে ধুলোয় মিশিয়ে দিতে চেয়েছিল তাঁরা। কিন্তু তা অবশ্য সফল হয়নি। ইতিহাসের প্রতিটি পাতায় আজ জ্বলজ্বলে এই বন্দর। সময়ের হাত ধরে এর গুরুত্ব আরও বেড়েছে। তার সঙ্গেই বেড়েছে নানা রকমের চোরাচালান।
কিন্তু ইতিহাস কখনই মোছা যায় না। আজও এই বন্দরের গায়ে লেগে থাকা রক্তের প্রতিটি দাগ যেন দগদগে হয়ে রয়েছে। সকালের আলোয় যতটা ব্যস্ত থাকে এই বন্দর। রাত যেন ততটাই গ্রাস করে তাকে। বন্দরের কিছু জায়গায় মানুষের হদিশ মিললেও অধিকাংশ এলাকাই হয়ে পড়ে জনমানবহীন। একটা গা ছমছমে পরিবেশ যেন গিলে খায় গোটা বন্দরকে। কিন্তু কেন? এ প্রশ্নের উত্তর যে অজানা। অনেকেই রাতের বেলায় বন্দরের দিকে একা যাওয়ার সাহস করেন না। আধুনিকতায় মোড়া এই বন্দর যেন আজও বয়ে চলেছে কিছু ভয়ঙ্কর ইতিহাসকে। আর সেই ইতিহাস শুধু অতীত নয়, বর্তমানকেও ক্রমাগত তাড়া করে বেরিয়ে চলেছে। কেউ বলেন, গভীর রাতে নাকি বন্দরে পা ফেলা দুস্কর। অনেক সময়েই কানে আসে কিছু ইংরেজদের গলা। কানে আসে সেই ভারী বুটের শব্দ। কানে আসে কাদের ছুটে যাওয়ার আওয়াজ। অনেক প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, গভীর রাতে এমন কিছু জাহাজ বন্দরে প্রবেশ করেছে যাদের কোনও বাস্তব অস্তিত্বই নেই।