“ছদ্মবেশে পুরী স্টেশনে দেখা দিয়েছিলেন স্বয়ং জগন্নাথ দেব…” পুরো ঘটনা শুনলে গায়ে কাঁটা দেবে আপনারও
ভক্তের কষ্ট সহ্য করতে না পেরে দর্শন দিয়েছিলেন স্বয়ং জগন্নাথ দেব। নিজ জীবনের কাহিনী শোনালেন ওড়িশার সরোজ মহাপাত্র।

পূর্বাশা, হুগলি: যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অনেক এগিয়ে গেছে মানুষ। আধুনিক মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে অলৌকিক কিছু পৃথিবীতে রয়েছে কিনা। ভগবানের অস্তিত্ব সম্পর্কেও সন্দিহান একদল মানুষ। তবে কথায় আছে না, “বিশ্বাসে মেলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর”। বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা ছাড়াও এমন কিছু ঘটনা ঘটে যার সত্যি প্রমাণ রয়েছে। তেমনই এক ঘটনা শোনালেন ওড়িশার চাঁদিপুরে বসবাসকারী ব্যক্তি সরোজ মহাপাত্র। কিছুদিন আগেই তিনি দাবি করেন পুরী স্টেশনে ছদ্মবেশে তাঁকে দেখা দেন স্বয়ং জগন্নাথ দেব।
চাঁদিপুরের এক মধ্যবিত্ত নাগরিক ছিলেন সরোজ মহাপাত্র। একটি সাধারণ কোম্পানিতে কাজ করার
দরুণ মাস গেলে সামান্য অর্থ সঞ্চয় হত তাঁর। আর তাতেই কষ্টে সৃষ্টে চলে যেত সংসার। এভাবেই দিন কাটতে থাকলে একদিন সরোজবাবুর স্ত্রী তাঁর কাছে বায়না ধরেন তিনি স্কুটি কিনবেন। কিন্তু সে আবদার মানতে নারাজ ছিলেন সরোজবাবু। তিনি তাঁর স্ত্রীকে বোঝাতে থাকেন কিভাবে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সংসার টানছেন তিনি। কিন্তু সে দাবি মোটেও মানতে চাননা তাঁর স্ত্রী। এরপর ঘটনাটি নিয়ে অশান্তি শুরু হয় স্বামী, স্ত্রীর মধ্যে। এহেন বাকবিতণ্ডা চলতে চলতে একদিন ঘর থেকে বেরিয়ে যান সরোজবাবু। মনের দুঃখে তিনি গিয়ে উপস্থিত হন পুরীর শ্রী জগন্নাথ মন্দিরে। সরোজবাবু জানান, সেই দিনটা তিনি সারা দিন কাটিয়েছিলেন জগন্নাথ দেবের মন্দিরেই। সন্ধ্যার সন্ধ্যারতি দেখে ফেরার সময় তিনি খেয়াল করেন তাঁর কাছে বাড়ি ফেরার মতো টাকাও নেই। মনের দুঃখে সরোজবাবু তখন পুরী স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
সেখানে পৌছে ক্ষুধা, তৃষ্ণায় ক্লান্ত সরোজ মহাপাত্র অসহায়ের মতো তাঁর কথাগুলি আওড়াতে থাকেন। আকাশের দিকে তাকিয়ে তিনি জগন্নাথ দেবের সঙ্গে ভাগ করতে থাকেন তাঁর মনের অভিমান। অনেকটা সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর তিনি খেয়াল করেন তাঁর পাশে এসে বসেছেন একজন বৃদ্ধ ভিখারী। যাঁর পরণে ছেঁড়া পোশাক ও গায়ে কাদা মাখা। তবে আশ্চর্যের বিষয় ভিখারির গা থেকে ভেসে আসছে অদ্ভুত সুন্দর চন্দনের গন্ধ। আর ভিখারির গলায় বাঁধা তুলসীর মালা। সরোজ বাবুর দাবি, ভিখারী বৃদ্ধ তাঁকে খাবার দেন এমনকি ফেরার টাকাও হাতে গুঁজে দেন। অথচ কিছুক্ষণ পরই অদ্ভুতভাবে উধাও হয়ে যান তিনি। প্রথমে ঘটনার ব্যাখ্যা খুঁজে না পেলেও পরে সরোজবাবু বুঝতে পারেন ওই বৃদ্ধ ভিখারী কোনোও সাধারণ মানুষ ছিলেন না। তিনি ছিলেন স্বয়ং জগন্নাথ দেব। ভক্তের কষ্ট দেখে যিনি স্বয়ং এসেছিলেন তাঁর কাছে। বাড়ি ফিরে সেদিন সরোজবাবু ও তাঁর পরিবার মন থেকে প্রণাম জানান জগন্নাথ দেব কে।